Tuesday, August 26, 2025

বড়িশা ক্লাবের “পরিযায়ী” দুর্গা প্রতিমা সংরক্ষণের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

Date:

করোনা আবহে এবার দুর্গাপুজোয় বেহালা বড়িশা ক্লাবের প্রতিমা নজর কেড়েছে সকলের। সাম্প্রতিক, আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে শিল্পশৈলীর অনবদ্য নিদর্শন রেখেছিলেন থিম শিল্পী রিন্টু দাস। তাঁর হাত দিয়ে গড়ে ওঠা বড়িশা ক্লাবের দুর্গার পরিযায়ী শ্রমিক মায়ের রূপ ভাইরাল হয়েছে সর্বত্র।

এবার সেই “পরিযায়ী” প্রতিমা সংরক্ষণের ভাবনা। এই মাতৃমূর্তি এবার সংরক্ষণের পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন। প্রতি বছর শহরের সেরা প্রতিমাগুলিকে রবীন্দ্র সরোবরের ভিতরে থাকা “মা ফিরে এল” প্রদর্শন কক্ষে সংরক্ষণ করা হয়। নিউটাউনের ইকোপার্কেও রয়েছে এমন ব্যবস্থা। তবে এ বছর মহামারীর জেরে সেভাবে আলাদা করে নতুন ধরনের বিগ্রহ তৈরি হয়নি। যা হয়েছে, তা সবটাই মাটির। তবে মাটির প্রতিমা বছরভর রাখা সমস্যার। এবার বড়িশা ক্লাবের এই প্রতিমা তৈরি হয়েছে ফাইবার গ্লাসে। সূত্রের খবর, পুজো উদ্বোধন করতে গিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনে ধরেছিল এই মাতৃরূপ।

কঠিন সময় কেড়ে নিয়েছে কাজ। পেটে খিদে। যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখ। তবুও সংগ্রামী স্বভাবে ছেদ পড়েনি। লড়াইয়ের মানসিকতাও অটুট। আসলে তিনি মা। সন্তান অভুক্ত থাকলে মা কি হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারে! করোনা ।মোকাবিলায় দীর্ঘ লকডাউনের জেরে দেশ গড়ার কারিগরদের দুর্দশা দেখেছে ভারতবাসী। আসলে এদেশের শ্রমিকরা কতটা অসহায়, চোখের সামনে দেখেছে দেশবাসী। যাঁদের পরিশ্রমের উপর ভর করে এই দেশের উন্নতির চাকা গড়াচ্ছে তাঁরাই থাকে অভুক্ত। সরকার আসে, সরকার যায়। উৎসব আসে উৎসব যায়, বছর ঘুরে যায়। কিন্তু এদেশে শ্রমিকদের কপাল ফেরে না। শ্রমিক মায়ের সন্তান আধপেটা খেয়েই থাকতে হয়।

এবার দুর্গাপুজোয় পরিযায়ী শ্রমিক মায়ের এই লড়াকু মানসিকতাকে কুর্নিশ জানিয়েছে বড়িশা ক্লাব। বেহালার এই ক্লাব পরিযায়ী শ্রমিক মায়ের রূপে দেবী দুর্গাকে উপস্থাপিত করবে। বড়িশা ক্লাবের এবারের থিম ছিল নাম “ত্রাণ”। অর্থাৎ, ত্রাণের খোঁজে লকডাউনের সময় এদেশের শ্রমিকদের অবস্থা কতটা করুণ ছিল, সেটাই তুলে ধরা হয়। এমন ভাবনা যাঁর মাথা থেকে এসেছে, সেই শিল্পী রিন্টু দাসের কথায়, ”খিদে পেটে, চড়া রোদ মাথায় নিয়ে পরিযায়ী শ্রমিক মাকে হাজার কিলোমিটার হাঁটতে হয়েছে। সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে মা বদ্ধপরিকর ছিল। তাই হাজার কষ্ট উপেক্ষা করেও খাবারের খোঁজ চালিয়ে গিয়েছে। এমনকী একটু খাবার জলের জন্যও লকডাউনের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের কত কষ্ট করতে হয়েছে। তাই এই ভাবনা।”

বড়িশা ক্লাবের মায়ের হাতে কোনও অস্ত্র ছিল না। কোলে সন্তান আর হাতে ছিল ত্রাণের থলি। রিন্টু দাস বলেছেন, ”লকডাউন-এর সময় হাজার হাজার কিলোমিটার হাঁটতে দেখেছি পরিযায়ী শ্রমিকদের। কত অসহায় মা কোলে শিশু নিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরেছে। রোদ, ঝড়, জল সব কিছু উপেক্ষা করেছে। তখন থেকেই এমন একটা থিমের কথা মাথায় এসেছিল।” শিল্পী রিন্টু দাসের ভাবনায় ৩২ তম বর্ষে বেহালার বড়িশা ক্লাবের পরিযায়ী মা ইতিমধ্যেই নেটিজেনদের কলমে সুপারহিট। কোলের সন্তানটি কার্তিক। গণেশ বসে অসুরের উপর। অর্থাৎ অসুর বিনাশ করলে আবার ব্যবসায়ীরা সিদ্ধিলাভের মুখ দেখবেন। আবার কাজ পাবেন পরিযায়ী মা।

Related articles

দুদিন ছুটি বৃষ্টির! তবুও থাকছে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস

বঙ্গোপসাগরে ফের তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণাবর্ত। তার জেরে ফের ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া দফতর। যার প্রভাব ওড়িশা ও বাংলার...

অনেক প্রেরণা তাঁরই: জন্মদিবসে মাদার টেরেসাকে স্মরণ মুখ্যমন্ত্রীর

তিনি যত না ছিলেন ম্যাসিডোনিয়ার তার থেকেও বেশি ছিলেন ভারতের, এই বাংলার। যাঁদের বেঁচে থাকার কোনও আশাই ছিল...

সবার ভালোবাসা লালবাগচা রাজাকে, মুম্বইয়ের গণেশ পুজোয় টক্কর দিতে তৈরি অন্যরাও

মুম্বইয়ের লালবাগের রাজাকে (Lalbaugcha Raja) কে না চেনে। সারাবছর আখ্খা মুম্বইকর অপেক্ষা করেন তাঁর ঝলক দর্শনের জন্য। এবছরও...

প্রাথমিক টেট-এর তথ্য ফাঁস হয়নি, বিভ্রান্তি কাটিয়ে জানালো পর্ষদ

নতুন জালিয়াতির বিরুদ্ধে কড়া রাজ্যের শিক্ষা দফতর। প্রাথমিক টেট-এর (Primary TET) তথ্য ফাঁস হওয়া নিয়ে নতুন করে বিভ্রান্তি...
Exit mobile version