এ যেন ঢাকের দায়ে মনসা বিকিয়ে যাওয়ার অবস্থা! উড়ান শুরু হলেও যাত্রী সংখ্যা এতই কম যে জ্বালানির খরচটুকুও উঠছে না। আর সেই কারণেই কলকাতা-লন্ডন বিমান পরিষেবা অনিশ্চয়তার মুখে। রাজ্য সরকার চাইলেও কলকাতা থেকে লন্ডনের সরাসরি উড়ানের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

কলকাতা থেকে ইউরোপ বা আমেরিকায় যাওয়ার বিজনেস ক্লাসের যাত্রী মেলা ভার— এই যুক্তিতেই এক সময়ে কলকাতা-ফ্রাঙ্কফুর্ট উড়ান তুলে নিয়েছিল জার্মান সংস্থা লুফৎহানসা। লন্ডনের সরাসরি উড়ান তুলে নিয়েছিল ব্রিটিশ এয়ারওয়েজও। কারণ, দূরপাল্লার উড়ানে ইকোনমিক ক্লাসের পাশাপাশি বিজনেস ক্লাসের আসনেও পর্যাপ্ত যাত্রী সংখ্যার প্রয়োজন হয়। না হলে খরচ চালানো মুশকিল।


কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বন্দে ভারত’ প্রকল্পে এয়ার ইন্ডিয়া এখন দেশের আটটি শহর থেকে লন্ডনের সরাসরি উড়ান চালাচ্ছে। ‘বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার’ বিমান চালাচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়া। তাতে ২১৮টি সাধারণ এবং ১৮টি বিজনেস ক্লাসের আসন রয়েছে। সূত্রের খবর, সেই আটটি শহরের মধ্যে কলকাতা থেকে যাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। বিজনেস ক্লাস শুধু নয়, ইকোনমি ক্লাসেও যাত্রী সংখ্যা কম।

কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, গত চার দিনে লন্ডন থেকে এ শহরে এসেছেন যথাক্রমে ২৫, ১২৫, ৭৮ এবং ৯২ জন। কলকাতা থেকে গিয়েছেন ৪৭, ৬০, ৩৫ এবং ৪৭ জন। বিমানে উঠতে গেলে ‘কোভিড নেগেটিভ’ শংসাপত্র নিয়ে উঠতে হত। রাজ্য সরকারের অনুমান ছিল এই নিয়মের কারণেই লন্ডন থেকে যাত্রী সংখ্যা বেশি হচ্ছে না। কারণ, লন্ডন থেকে ওই শংসাপত্র জোগাড় করা মুশকিল। এরপর শুধু লন্ডনের উড়ানের জন্য নিয়ম পরিবর্তন করে জানিয়ে দেয়, কারও সঙ্গে ওই শংসাপত্র না থাকলেও তিনি আসতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে কলকাতায় নেমে পরীক্ষা করিয়ে নিলেই হবে। সেই নিয়ম শুরু হয় গত ২২ অক্টোবর থেকে। কিন্তু তার পরেও যে দু’টি উড়ান এসেছে, তাতে যথাক্রমে ৭৮ এবং ৯২ জন যাত্রী এসেছেন। অর্থাৎ, মোট আসনের ৩৩ এবং ৩৮ শতাংশ।


বর্তমানে কলকাতা থেকে সপ্তাহে দু’দিন লন্ডনের বিমান চলছে। প্রতি বুধবার মধ্যরাতে আসছে, বৃহস্পতিবার ভোরে লন্ডন ফিরে যাচ্ছে। আবার শনিবার মধ্যরাতে এসে ফিরছে রবিবার ভোরে। যাত্রী কম হওয়ায় নভেম্বর থেকে সপ্তাহে এক দিন করে ওই উড়ান চলবে বলে জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। শনিবার মধ্যরাতে এসে তা রবিবার ভোরে ফিরে যাবে।

আরও পড়ুন-আজারবাইজানের বিরুদ্ধে এবার যুদ্ধে যাচ্ছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীও!
