মাছের ভাগ পেত আধিকারিকরা, লকগেট ভাঙায় নেপথ্যে অসাধু কারবারের অভিযোগ

২৪ ঘন্টা কেটে গিয়েছে এখনও মেরামতির কাজ শেষ হয়নি দুর্গাপুর ব্যারেজের ভেঙে যাওয়ার লক গেটের। গতকাল থেকে বালির বস্তা ফেলে জল আটকানোর সামরিক চেষ্টা করা হলেও ব্যর্থ হয় তা। সেচ দপ্তরের উদ্যোগে নতুন গেট বসানোর সরঞ্জাম আনা হলেও ভাঙা অংশ মেরামতির কোনওরকম চেষ্টা সফল হয়নি। আগের মতোই প্রবল তোড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে জল। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই প্রকাশ্যে এল এক গুরুতর অভিযোগ। স্থানীয়দের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে মৎস্যজীবীদের সঙ্গে আঁতাত রয়েছে ব্যারেজ আধিকারিকদের। তাদের অভিযোগ, মাছ ধরার জন্য লক গেট খোলা হয়। অসাধু এই কারবারের সঙ্গে জড়িত রয়েছে ব্যারেজ আধিকারিকরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্যারেজ খোলা হত মাছ ধরার কাজে। গেট খুলে জল ছাড়ার পর কম জলে মাছ ধরতে সুবিধা হতো মৎস্যজীবীদের। আর সেই মাছের ভাগ যেত আধিকারিকদের কাছে। এর আগেও ঠিক একই কারণে লকগেট ভাঙার ঘটনা ঘটেছিল। তখন আধিকারিকদের বদলি করে দেওয়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের হাতে পৌঁছে যেত ব্যাগভর্তি মাছ বা টাকা। মৎস্যজীবীদের সুবিধামতো চলতো জল ছাড়ার পর্ব। আগে থেকে ঠিক হয়ে যেত মৎস্যজীবী কখন মাছ ধরতে আসবে। সেই অনুযায়ী সময় মেপে খুলে যেত গেট। স্থানীয়দের তরফে এহেন গুরুতর অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও একব্যক্তির দাবি গতবার ভেঙেছিল ১ নম্বর গেট। আর এবার একেবারে শেষ গেট। অভিযোগ, মাছ ধরার জন্য মৎস্যজীবীদের দাবি থাকে ধারের দিকের গেট খোলার। তাতে মাছের পরিমাণটা বেশি বেশি পাওয়া যায়। সেই মতই তালমিল রেখে মৎস্যজীবীদের সঙ্গে অসাধু কারবার চালাত আধিকারিকরা। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের তরফে।

আরও পড়ুন: বিজেপিতে যোগ দিলে তুলনায় বেশি আসন বিজেপি ছাড়বে শুভেন্দুকে

প্রসঙ্গত, শনিবার সকালে দুর্গাপুর ব্যারেজের লকগেট ভেঙে যায়। যার জেরে প্রবল তোড়ে বেরিয়ে আসে জল। এই ঘটনায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। রাতভর বস্তা ফেলে জল আটকানোর চেষ্টা হলেও তা বিশেষ কাজে দেয়নি। রবিবার সকালে সমস্ত রকম যন্ত্রপাতি সহ গেট মেরামতিতে উদ্যোগী হয় সেচ দপ্তর। অনুমান করা হচ্ছিল ১২ ঘণ্টার মধ্যেই পরিস্থিতি সামলে নেওয়া যাবে কিন্তু জলের তোড় যেভাবে তৈরি হয়েছে। তাতে এইটুকু সময়ে কাজ সম্পন্ন হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান আধিকারিকরা। পাশাপাশি যেখানে গেট ভেঙেছে সেখানে জলের গভীরতা ৭ থেকে ৮ ফুট। ফলে এতখানি নিচে নেমে কাজ করা বেশ সমস্যা দায়ক। যদিও শেষ দপ্তরের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে শীঘ্রই মেরামতির কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।