নেতাদের বক্তব্য কতখানি সঠিক, তা যাচাই করতেই রাজ্য সফরে শাহ

বঙ্গ-বিজেপির নানারকম নেতারা দফায় দফায় দিল্লি উড়ে গিয়ে দলের হাই কম্যাণ্ডকে এতদিন ধরে বুঝিয়ে এসেছেন, বাংলায় বিজেপির ক্ষমতায় আসা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা ৷ দিল্লি একটু মদত দিলেই ‘সোনা ফলবে’ বাংলায়৷ লোকসভা নির্বাচনের ভোটপ্রাপ্তির হিসেব তুলে ধরে কেউ বুঝিয়ে এসেছেন ১২২টা আসনে গিয়েই আছি৷ আর খান ২৫-৩০ আসন হলেই কেল্লা ফতে৷ কেউ আবার নিজের দলের থেকে অন্য দল ভাঙ্গিয়ে আনতে দরজা কেন বড় করা দরকার, তা বুঝিয়েছেন অমিত শাহ-জেপি নাড্ডাকে৷

ওদিকে ভোট-রাজনীতিতে অভিজ্ঞ অমিত শাহের কাছে তাঁর মন্ত্রক সূত্রে খবর, অঙ্ক এতখানি সহজ-সরল নয়৷ বঙ্গ-নেতারা নিজেদের ইমেজ এবং পদ বাঁচাতে দিল্লিতে এসে বেঠিক বার্তা দিচ্ছেন ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে শাহ কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে সমীক্ষা করিয়েছিলেন৷ সেই সমীক্ষাতেই তিনি জানতে পারেন, বাংলা থেকে ২০ আসন আসতে পারে৷ শাহ বলেওছিলেন সেকথা৷ ফলপ্রকাশের পর দেখা যায়, বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে ১৮ আসন৷

ঠিক সেভাবেই একদমই প্রাথমিকস্তরের এক সমীক্ষার ভিত্তিতে শাহের কাছে এক রিপোর্ট পৌঁছে গিয়েছে৷ তাতে সর্বাধিক ৭০-৭৫ আসন বিজেপি পেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷ কিন্তু এর পরেও বঙ্গনেতারা দিল্লিকে বুঝিয়ে চলেছেন ক্ষমতায় আসা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা৷ জানা গিয়েছে, শাহকেও একথাই বলা হয়েছে৷ এর ফলে যারপরনাই বিরক্ত শাহ৷ তাই বিষয়টি নিজের হাতে নিয়েছেন৷ প্রথমে নাড্ডাকে পাঠিয়েছেন, তারপর রাজ্যপালকে তলব করে ক্লাস নিয়েছেন এবং ধনকড়কে উত্তরবঙ্গে পাঠিয়েছেন কার্যত বঙ্গ-বিজেপির “উত্তরবঙ্গের সভাপতি”-র দায়িত্ব দিয়ে৷ এর পর অসুস্থতা সত্ত্বেও নিজেই আসছেন রাজ্যে, দলের নেতাদের ‘ব্রিফিং’ কতখানি সঠিক, তা যাচাই করতে৷ রাজ্য নেতারাও এসব আঁচ করতে পেরেছেন৷

এর ফলে শাহের এই সফর নিয়ে রাজ্য বিজেপির নেতারা ঠিক ততটা উৎফুল্ল হতে পারছেন না৷ কারন, দু’দিনের রাজ্য সফরে একের পর এক জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন অমিত শাহ৷ সেই বৈঠকে যে ছবি স্পষ্ট হবে, তার সঙ্গে বঙ্গ-বিজেপির শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যের ফারাক থাকবেই৷ ফলে, রাজ্য নেতারা শাহ-সফর ঘিরে কিছুটা ভীতও বটে৷

কারন, খুবই কড়া ধাঁচের মানুষ শাহ৷ দলের কাজে জোড়াতালি একদমই সহ্য করতে পারেন না৷ সেক্ষেত্রে আগামী ৫-৬ তারিখের ম্যারাথন বৈঠকের পর রাজ্য নেতাদের সম্পর্কে শাহের ধারনা কতখানি বদলে যায়, সেটাই এখন দেখার৷

আরও পড়ুন- থামছে না ইন্টারন্যাল রক্তক্ষরণ! দিশাহীন চিকিৎসকরা, অত্যন্ত সঙ্কটজনক সৌমিত্র

Previous articleShuvendu Update: শুভেন্দুর বিষয়ে মুকুলকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত দিল্লি বিজেপির
Next articleতেজস্বীতেই নড়বড়ে মোদি, কী হবে মমতায়? কণাদ দাশগুপ্তর কলম