১৭ বছরের বঞ্চনার উচিত শিক্ষা পাবে বিজেপি! ফের হুঁশিয়ারি গুরুংয়ের

একের পর এক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি। প্রতিটি নির্বাচনের পরেই বিশ্বাস ভঙ্গ। এবার বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার হুমকি দিলেন বিমল গুরুং। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে হাত মিলিয়ে এবার পাহাড় থেকে বিজেপিকে উৎখাতের হুমকি দিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা। এদিন কলকাতার এক অভিজাত হোটেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিমল গুরুং বলেন, “১৭বছর আমরা বিজেপির সঙ্গ দিয়েছি। লোকসভা নির্বাচনে একের পর এক সাংসদ দিয়েছি পাহাড় থেকে। কিন্তু কোনও প্রতিশ্রুতি রাখেনি বিজেপি। আমাদেরকে ভোট মেশিন হিসেবে ব্যবহার করেছে। আর ভোট চলে গেলে পাহাড়কে ভুলে গিয়েছ। বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে বিজেপি। এবার আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একুশের নির্বাচনে লড়াই করব। বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দেবো। কলকাতা থেকে পাহাড়ে ফিরে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা আর তৃণমূল নেতৃত্ব নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে রণকৌশল ঠিক করব। একুশের নির্বাচন হবে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বেই”।

প্রসঙ্গত, এদিন সাংবাদিক বৈঠকে দার্জিলিং পৌরসভা দলছুট ১৭জন কাউন্সিলরকে ফের নিজের শিবিরের দিকে ফিরিয়ে আনেন বিমল গুরুং।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ” নিরুদ্দেশ” গত সপ্তাহেই হঠাৎ কলকাতায় এসে বিজেপির হাত ছেড়ে আবার তৃণমূল কংগ্রেসের হাত ধরতে চেয়েছিলেন গোর্খ জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। আর তারপরই জানিয়ে দেন ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে চান। তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই সময়ই বিমল গুরুং এনডিএ জোট ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন।

বিমল গুরুং-এর অভিযোগ, বিজেপি তাঁকে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা পুরণ করেনি। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সবই পুরণ করেছেন। তাই এনডিএ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বিজেপির তীব্র সমালোচনা করে গুরুং ২০২১ সালের নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধে বিজেপিকে উচিৎ শিক্ষা দেবেন তিনি।

মোর্চার প্রধান বিমল গুরুংএর অভিযোগ পাহাড়বাসী ও গোর্খাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পুরণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। বিজেপি বলেছিল তারা দার্জিলিং পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান সূত্র খুঁজে বার করবে। পাশাপাশি ১১টি গোর্খা সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। কিন্তু এই প্রতিশ্রুতি পুরণে বিজেপি কোনও চেষ্টা করেনি।

আরও পড়ুন:কালীপুজো থেকে ছটপুজো- রাজ্যে নিষিদ্ধ বাজি, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

তাঁর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করা হবে কিনা তা জানতে চাওয়া হলে বিমল গুরুং বলেন, তিনি অপরাধী নন, দেশদ্রোহী নন। তিনি রাজনৈতিক নেতা। তাই রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চান। তিনি জানিয়েছেন গত দুমাস তিনি দিল্লি আর ঝাড়খণ্ডে ছিলেন। তিন বছর আগে রাজ্য থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন বিমল গুরুং। তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় ১৫০টি মামলা রয়েছে। ২০১৩ সালের পর এই প্রথমবার বিমল গুরুং প্রকাশ্যে আসেন। গ্রেফতারির হাত থেকে বাঁচতে গততিন বছর আত্মোগপন করে ছিলেন। তবে কোনও বিষয় নিয়ে রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে এদিনও বিমল গুরুংয়ের সাংবাদিক বৈঠকের পর তৃণমূলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Previous articleকালীপুজো থেকে ছটপুজো- রাজ্যে নিষিদ্ধ বাজি, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
Next articleআগামী বুধবার থেকেই রাজ্যে চলবে লোকাল ট্রেন: সিদ্ধান্ত নবান্নের বৈঠকে