Monday, November 17, 2025

প্রভু এসেছিলেন, খেয়েওছিলেন, তবে অভাব ঘোচেনি হাওড়ার জগদীশের

Date:

‘ভোজন রাজনীতি’ শুরুটা বঙ্গে চালু করেছে বিজেপি। নকশালবাড়ি থেকে প্রথম শুরু হয় এই রাজনীতির প্রচলন। রাজ্যের কোনও গরীব বা নিম্নবিত্তের বাড়িতে খাবার খেয়ে ওই শ্রেণীর মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা ‘আমি তোমাদেরই লোক’। ২০২১-এ বঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ফের শুরু হয়েছে অভিনব পন্থার এই রাজনীতি। কিন্তু যাদের বাড়িতে এসে নেতারা খেয়ে যাচ্ছেন পরবর্তীতে কেমন রয়েছে সেই সমস্ত পরিবার। এর আগে অমিত শাহ খেয়ে গিয়েছিলেন নকশালবাড়ির মাহালি দম্পতির বাড়িতে। সম্প্রতি তার চরম দুর্দশা দেখে তাকে চাকরি দিয়েছে রাজ্য। অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি হাওড়ার আদিবাসী পরিবার জগদীশের বাড়িতেও। ২০১৭ সালে এনার বাড়িতেই মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু।

হাওড়ার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গে এসেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর জনসংযোগটাও ভালোই করেন তিনি। হতদরিদ্র ট্যান্ডেল বাগানের জগদীশ মল্লিকের বাড়িতে চলে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া। সেই খাওয়া-দাওয়ার আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন সুরেশ প্রভু, দিলীপ ঘোষ সহ একাধিক ভিভিআইপি বিজেপি নেতা। নেতাদের সন্তুষ্ট করতে সাধ্যের বাইরে বেরিয়ে ভাত, ডাল, রুটি, সবজি, মিষ্টি সহ প্রচুর আয়োজন করে জগদীশের পরিবার। আশা ছিল কেন্দ্রের এইসব ভিভিআইপি নেতাদের সৌজন্য হয়তো জীবনে আসবে স্বচ্ছলতা। তবে সে ঘোর কাটতে বেশি সময় লাগেনি। বর্তমানে চরম অসহায় অবস্থায় থাকা জগদীশ বলেন, ‘২০১৫ সালের জুন মাসে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি। আগে যে ভাঙাচোরা কোয়ার্টারে থাকতাম, অবসরের পর সেটাও ছেড়ে দিতে হয়েছে। ভাইপো রেলের অস্থায়ী কর্মী। তাঁর দয়ায় পাশের একটা কোয়ার্টারে আছি।’

সংবাদমাধ্যমকে জগদীশ বলেন, স্ত্রী আর ছোট ছেলে সুজিতকে নিয়ে তিন জনের সংসার তাঁর। সুজিত বর্তমানে একটি বেসরকারি সংস্থায় ছোটখাটো চাকরি করে। নিজের সামান্য পেনশন ও সুজিতের রোজগারে কোনওমতে সংসার চলে আমাদের। তবে দিল্লিতে থাকা সুরেশ প্রভু না হয় জগদীশের খোঁজখবর নিতে পারেন না। কিন্তু রাজ্য বিজেপি নেতারা তো নিতে পারেন।

আরও পড়ুন: মাস্টার স্ট্রোক মুখ্যমন্ত্রীর, রাজ্যে ৩৫ লক্ষ কাজের ঘোষণা

জগদীশের অভিযোগ ওই দিনের পর থেকে বাড়িতে আসা তো দূরের কথা ফোনেও কেউ কখনও কোনও খোঁজ নেয়নি। তিনি আরও বলেন, নিজের একটা ঘর পর্যন্ত নেই কোয়াটারে। অন্যের দয়ায় থাকি। বর্ষাকালে এখানে জল জমে। ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া সঙ্গে সারা বছর বাস আমাদের। যদিও ওই পরিবারের পাশে না দাঁড়ানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে উত্তর হাওড়ার বিজেপি নেতা উমেশ রায় বলেন, ‘এ সব তৃণমূলের রটনা। ওই পরিবারের খোঁজখবর আমরা নিয়মিত রাখি। ওঁরা সবাই ভাল আছেন। মন্ত্রীর ওই মধ্যাহ্নভোজনের পরে বিজেপি-র প্রতি তাঁদের আগ্রহও বেড়েছে। ছোট ছেলে তো আমাদের দলের কর্মী। দলিত আদিবাসী পরিবারের পাশে বিজেপি নেতৃত্ব সব সময়েই আছে।’

Related articles

ঝাড়খণ্ডের দুমকায় বিধবাকে পুড়িয়ে খুন! প্রেমিক গ্রেফতার, পলাতক স্ত্রী

ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড! শিকারিপাড়া থানা এলাকার সীতাশাল গ্রামে তিন বছরের সম্পর্কে থাকার পর ২১ বছরের বিধবা...

অসাংবিধানিক মন্তব্য! রাজ্যপালকে ধুয়ে দিলেন কল্যাণ, দিলেন পাল্টা চ্যালেঞ্জ

চূড়ান্ত অসাংবিধানিক এবং কুরুচিকর মন্তব্য বিজেপির ‘দলদাস’ রাজ্যপাল বোসের! একজন রাজ্যপাল কীভাবে এমন কুরুচিকর মন্তব্য করতে পারেন? শ্রীরামপুরের...

ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে শিক্ষক নিয়োগ, মঙ্গলবার শুরু এসএসসির ইন্টারভিউ 

স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে প্রায় ২০ হাজার নামের প্রার্থী তালিকা। আগামীকাল, ১৮ নভেম্বর থেকে শুরু...

অবাস্তব কাজের চাপ: বাংলার পর কেরল, আত্মঘাতী BLO, কাঠগড়ায় কমিশন

দেশের ১২ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এক অবাস্তব পদ্ধতিতে এসআইআর প্রক্রিয়া চালু করেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন (Election...
Exit mobile version