শ্বশুরবাড়িতে ন্যায্য অধিকারের দাবিতে ধর্নায় বধূ

পরিচয় হয়েছিল ফেসবুকে। সেখান থেকে সম্পর্ক হয় এবং তারপর বিয়ে। কিন্তু বিয়ের পর বাড়িতে থাকতে দিতে চাইছে না স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। দীর্ঘদিন আবেদন,অনুরোধ করেও হয়নি ঠাই। অবশেষে ন্যায্য অধিকারের দাবিতে ধর্নায় বসলেন ওই নির্যাতিতা বধূ। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লকের দৌলতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত হরিশ্চন্দ্রপুর ভালুকাগামী রাজ্য সড়কে। এদিন ধর্নার ফলে অবরুদ্ধ হয় রাজ্য সড়ক। বধূর ন্যায্য অধিকারের দাবিতে সোচ্চার হয় এলাকাবাসীও। এদিকে বাড়িতে নেই অভিযুক্ত স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা।

উল্লেখ্য, আড়াই বছর আগে হরিশ্চন্দ্রপুরের দৌলতপুর এর নিবাসী আদিল মিয়ার ছেলে নাসিরুদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে হয় কালিয়াচক নিবাসী সাবিনা খাতুনের। বিয়ের আগে নাসিরুদ্দিন সাবিনাকে কথা দেয় যেহেতু বাবা,মা তাই নেই বিয়ের পর স্বামী হিসেবে সাবিনার প্রতি সব দায়িত্ব পালন করবে সে। দুজনের সম্মতিতেই হয় বিয়ে কিন্তু বিয়ের পর হঠাৎ করে চিত্রটা পাল্টে যায়। সাবিনাকে ঘরে তুলতে অস্বীকার করে তার শ্বশুর,শ্বাশুড়ি। স্বামী নাসিরুদ্দিনের ভোল পাল্টে যায়। ৫ লক্ষ টাকা পনের দাবি করে ওই পরিবার। সাবিনার পক্ষে এতো টাকা দেওয়া অসম্ভব ছিল। প্রতিবেশীদের সাহায্যে ৫০ হাজার টাকা দেয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। শেষমেষ ন্যায্য অধিকারের দাবিতে হরিশ্চন্দ্রপুর ভালুকগামী রাজ্য সড়কে ধর্নায় বসেন তিনি।

সাবিনা জানান, ‘‘বিয়ের পরেই হঠাৎ করে সব পাল্টে যায়। টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু আমার বাবা,মা,ভাই কেউ নেই। আমার পক্ষে এতটা টাকা দেওয়া অসম্ভব। সোমবার শ্বশুরবাড়িতে গেলে মেরে বের করে দেয় শ্বাশুড়ি। আজ বাধ্য হয়ে ন্যায্য অধিকারের দাবিতে ধর্নায় বসলাম।’’ ন্যায্য অধিকার না পেলে আত্মহত্যা করার হুমকিও দিয়েছেন তিনি। তাঁর অধিকারের পক্ষে সওয়াল করেন এলাকাবাসীরাও। স্থানীয় এক ব্যক্তি হামিদুর রহমান বলেন, ‘‘ছেলে নিজের পছন্দে বিয়ে করেছিল। বাবারও সম্মতি ছিল। কিন্তু পরে পনের দাবি করে বউকে ঘরে তুলতে অস্বীকার করে। আমরা গ্রামবাসীরা চায় ও ন্যায্য বিচার পাক।’’

এদিকে ধর্নার ফলে দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ ছিল রাস্তা। এই ঘটনার ফলে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় প্রশ্ন। বিয়ের পরেও পনের দাবিতে একজন অনাথ মেয়ে বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাতে নিন্দায় সোচ্চার হয়েছেন সকলেই। গোটা ঘটনায় নারী অধিকার এবং সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আরও পড়ুন:অবশেষে ভদ্রেশ্বরের নয়ানজুলিতে মিলল বিষ্ণু মালের মুণ্ড