Thursday, November 6, 2025

২৪ ঘন্টার মধ্যেই জবাব? বাড়ছে দূরত্ব? চলছে ঠান্ডা লড়াই! সভা। পাল্টা সভা। রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অবস্থানের সর্বশেষ আপডেট থেকে এমনই নির্যাস বেরিয়ে আসছে। “নিজের স্বার্থ-পরিবারের স্বার্থ না দেখে সকলকে নিয়ে চলুন!” মুখে কারও নাম উচ্চারণ না করলেও এবার কলকাতার উপকণ্ঠে কালীপুজোর উদ্বোধনে এসে এমনই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন শুভেন্দু অধিকারী। আপাতদৃষ্টিতে কালীপুজোর একটি উদ্বোধনে এসে মঞ্চে উঠে স্বামী বিবেকানন্দ বাণী শোনানোর কথা মনে হলেও সংশ্লিষ্ট মহল এই কর্মসূচীর মধ্যে রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে বলেই মনে করছেন।

তাৎপর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, কারণ এবার শুভেন্দুর “সভাস্থল” রাজ্যের আরেক মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর নির্বাচনী ক্ষেত্র। যে পূর্ণেন্দু বসু ২৪ ঘণ্টা আগেই শুভেন্দুর ভোট কেন্দ্র নন্দীগ্রাম গিয়ে সভা করেছিলেন। বক্তব্যের মাঝে কয়েকবার শুভেন্দুর নামও মুখে এনেছিলেন পূর্ণেন্দুবাবু।

তাই সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, বাগুইআটি-তেঘরিয়া সংলগ্ন জ্যাংড়ায় এসে শুভেন্দুর বক্তব্য যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী। এই এলাকাটি রাজারহাট-গোপালপুর বিধানসভার মধ্যে। যেখানকার তৃণমূল বিধায়ক মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু।

প্রসঙ্গত, এখনও দুটি গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রিত্বে আছেন শুভেন্দু। আছেন দলেও। তাঁর তরফে বা দলের পক্ষে, কেউই এখনও সরাসরি কাউকে ছেড়ে দেওয়ার কথা উচ্চারণ করেনি। তবে বিষয়টি জল্পনার পর্যায় বা সংবাদ মাধ্যমের বানানো গল্পের মধ্যে নেই। তৃণমূলের সঙ্গে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর যে দূরত্ব বেড়েছে এবং দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে ঠান্ডা লড়াই চলছে তা নন্দীগ্রামের রক্তাক্ত সূর্যোদয়ের সকালেই মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।

শেষ কয়েক ঘন্টায় আনুপ্রাসঙ্গিক আরও কিছু ঘটনা, শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দুর কিছু মন্তব্য, শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ জেলা সভাধিপতিদের সরকারি নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়া ইত্যাদি কারণগুলি দু’পক্ষের মধ্যে দূরত্ব যে আরও গভীর করছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

তবে দূরত্ব জানান দিতে এবার যেন সবকিছুকে ছাপিয়ে গেলো শুভেন্দু অধিকারীর এই কর্মসূচি। রাজ্যের মন্ত্রী কিংবা একজন জনপ্রতিনিধি কিংবা জননেতা হিসেবে বাগুইআটির জ্যাংড়ায় আমরা সবাই ক্লাবের ২২তম বর্ষের বিখ্যাত কালীপুজোর উদ্বোধন করলেন শুভেন্দু অধিকারীকে। মঞ্চে উঠে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখলেন। অথচ কলকাতায় এসে গরহাজির থাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা নবান্নে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিসভা বৈঠকে।

শুধু তাই নয়, এ দিনও কালীপুজোর উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে ফের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করতে শোনা গেল শুভেন্দুকে। তিনি বলেন, ”আমি আমি নয়, আমরা। নিজের স্বার্থ পরিবারের স্বার্থ না দেখে সকলকে নিয়ে চলতে হবে। আপনাদের সেবক শুভেন্দু  সবসময় আপনাদের পাশে থাকবে।”

সেই সঙ্গে আরও একটি হিসাব কাজ করছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শুভেন্দু যেন রাজ্য মন্ত্রিসভায় তাঁর সহকর্মী পূর্ণেন্দু বসুকে তাঁরই বিধানসভা এলাকায় এসে ব্যক্তিগত ক্যারিশমা ও নিজের শক্তি প্রদর্শন করে গেলেন! দেখিয়ে দিয়ে গেলেন নিজের জনপ্রিয়তাও।

আরও পড়ুন:নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকেও অনুপস্থিত শুভেন্দু, সঙ্গে রাজীব-সহ তিন

Related articles

রাত পোহালে প্রথম দফার নির্বাচন বিহারে: হিংসা ঠেকানোই চ্যালেঞ্জ

নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে পরপর খুন। রাজনৈতিক নেতা থেকে সমর্থক। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তাই শান্তি বজায় রাখাই চ্যালেঞ্জ...

বাংলা কথায় দক্ষতা, কোন পদে পান তৃপ্তি? দীপ্তিকে নিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুললেন ‘অভিভাবক’ মিঠু

সন্দীপ সুর বাংলার প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ জিতেছেন রিচা ঘোষ কিন্তু ভারতীয় দলের আরও এক ক্রিকেটারের সঙ্গে...

দিঘার জগন্নাথ ধামে প্রথম রাস উৎসবে ভক্তদের ঢল 

দিঘার জগন্নাথ ধামে এবারই প্রথম পালিত হল রাস উৎসব, আর সেই উপলক্ষে সকাল থেকেই উপচে পড়েছে ভক্তসমুদ্র। উৎসবের...

বেঁচে আছেন, তাই জানতে পারলেন ‘দোষী নন’: আজব বিচার উত্তরপ্রদেশে

বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের (Aligarh) মিঠু সিংয়ের জীবনে যেন সেটাই সত্যি হতে বসেছিল। অবশেষে ৫৫...
Exit mobile version