Saturday, November 29, 2025

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কারণেই এ রাজ্যে মিম খাপ খুলতে পারবে না, অভিজিৎ ঘোষের কলম

Date:

Share post:

অভিজিৎ ঘোষ

বিহারে মিম(এআইএমআইএম) কিঞ্চিৎ সাফল্য পাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে বাংলায় তাদের ভবিষ্যৎ কী?

প্রশ্ন, বাংলার ভোটে কতখানি ভাগ বসাতে পারবে মিম?

যারা বিহারের ভোট আর বাংলার ভোটকে এক পঙ্কক্তিতে ফেলছেন, তাঁরা শুরুতেই ভুল করছেন।

কেন?

দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ এমন একটি রাজ্য, যেখানে এখনও ধর্মের ভিত্তিতে ভোট হয় না। এটা বাংলার ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী রাজ্যের তৃণমূল সরকার। ধর্মের ভিত্তিতে ভোট ভাগের চেষ্টা যে বিজেপির তরফ থেকে রয়েছে, তা বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাই। কোনও ধরণের সুযোগ পেলে তাকে উস্কে দিয়ে তিল থেকে তাল করার প্রবণতা মাঝে মধ্যেই দেখা গিয়েছে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃঢ়তায় তা কোনোভাবেই পাখা মেলতে পারেনি। রাজ্য সরকারের একটার পর একটা সামাজিক প্রকল্পে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই উপকৃত হয়েছেন। নিশ্চিতভাবে কিছু মান-অভিমান না পাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু বুঝতে হবে, দীর্ঘ ৩৪ বছরের না পাওয়ার পর্ব মিটিয়ে তাকে ইতিবাচক স্রোতে ফিরিয়ে আনা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। সীমিত সাধ্যের মধ্যে তার চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি সরকার।

আরও পড়ুন : বিজয়বর্গীয়’ই এ রাজ্যের পর্যবেক্ষক, সঙ্গে আইটি সেলের অমিত মালব্য, ঘোষণা বিজেপি’র

মিম কোথায় ভোটের ঝাঁপি ফেলতে চাইছে?

মূলত সীমান্ত এলাকাগুলিতে। নদিয়া, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগণার সীমান্তে। উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জায়গা রয়েছে। অন্য রাজ্য, বিশেষত বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির অভিজ্ঞতা দেখে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেখানে মেরুকরণের রাজনীতি প্রবল। সংখ্যালঘুরা সেখানে কতখানি সুরক্ষিত তাঁরা তা জীবন দিয়ে অনুভব করেছেন, দেখছেন। এই বাংলার মানুষ সেটা বোঝেন। কী খাবে, কী পড়বে, কোন পোশাক দেখলেই বোঝা যায় তারা কোন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, লাভ জিহাদের পিছনে আসল উদ্দেশ্য কী… এসব বাংলার মানুষকে প্রত্যক্ষ করতে হয়নি, হয় না। আর তার কৃতিত্ব নিশ্চিতভাবে বাংলার সরকারের।

আরও পড়ুন : ‘বিচক্ষণ ও অনমনীয়’ তেজস্বী বনাম হঠাৎ ‘দার্শনিক’ নীতীশ, বিহার-যুদ্ধ এখনও জারি

এটা ভাল মতোই বোঝে মিম। তাই তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলানোর ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে। আসল টার্গেট সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক থেকে নিজের ভোট ব্যাঙ্ক তৈরি করা। ভবিষ্যতে যাতে ফোঁস করে আলদা লড়ার জমি তৈরি করে রাখা যায়। ভোট কাটাকুটির অঙ্ক কষছে ওয়েসির দল। এককভাবে লড়াইয়ে নামলে অধিকাংশ জেলায় জমানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে নিশ্চিতভাবে। এক শতাংশের কাছাকাছি ভোট পাওয়ার সম্ভাবনাও কম। বিজেপি অবশ্য মনেপ্রাণে চাইবে ভোট ভাগ হোক, তা সে যত নগণ্যই হোক।

ভোটের বাকি আরও মাস চারেক। সব ধরণের সম্ভাবনার সলতে উসকে দিতে চাইবে বিজেপি। কিন্তু তাতে যে ভবি ভোলার নয়, তা মে মাসেই প্রমাণ করবেন বাংলার মানুষ।

spot_img

Related articles

সোমবার লোকায়ুক্ত নির্বাচনে বৈঠক নবান্নে: বিরোধী দলনেতাকে আমন্ত্রণে বিরূপ উত্তর!

রাজ্যের লোকায়ুক্ত নিয়োগের বৈঠক ডাকল রাজ্য প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে রাজ্যের লোকায়ুক্ত (Lokayukta) নির্ধারণ করে তাঁর নিয়োগ...

বিহুর রিসেপশনে নক্ষত্র সমাবেশ, বাইরে দাঁড়িয়ে ছেলের বিয়ের অতিথি আপ্যায়ন স্বয়ং খরাজের

পর্দায় তিনি যতই ডাকসাইটে করা ধাঁচের বাবা হোন না কেন বাস্তবে একেবারে উল্টো। নিজে গেটে দাঁড়িয়ে সারাক্ষণ ছেলে...

তৃণমূলের উত্তর দিতে ব্যর্থ কমিশন! CCTV প্রকাশের চ্যালেঞ্জ অভিষেকের

নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সময় মেনেই দিল্লিতে কমিশন দফতরে শুক্রবার প্রশ্ন নিয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূলের ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল। তৃণমূলের প্রশ্নের...

মৃত ভোটার ছাড়ালো ১৫ লক্ষ, ডুপ্লিকেট ৫৮ হাজার! প্রকাশ্যে কমিশনের ত্রুটি

প্রতিটি নির্বাচনের আগে বিশেষ নিবিড় সংশোধনী না হলেও সংশোধিত ভোটার তালিকা তৈরি করে নির্বাচন কমিশন। তার পরেও ঘটা...