কলকাতার এই মন্দিরে মা কালীকে চাউমিন-চিলি চিকেনের ভোগ দেওয়াই রীতি

কলকাতার এই মন্দিরে সারা বছরই হয় মায়ের পুজো। তবে আজ দীপান্বিতা কালীপুজোর বিশেষ তিথিতে মাতৃ আরাধনা বিশেষ রূপ পায়। দীপাবলির দিনে কালীপুজো উপলক্ষে প্রায় ২০০০ মানুষ সমবেত হন এই মন্দির চত্বরে। এখানে ঠাকুরকে ভোগ দেওয়া হয় চাউমিন, চপসি, চিলি চিকেনের মতো বিশুদ্ধ চীনা খাবার। করোনা কালে এবার অবশ্য আড়ম্বর অনেকটাই কম। নিয়ন্ত্রণ করা হবে ভিড়ও।


গল্প নয়, এটাই সত্যি!

এই অঞ্চলটি শহরবাসীদের কাছে প্রিয় সস্তার পানশালা আর মন ভরানো লোভনীয় চাইনিজ রেস্তোঁরার সমাহার। পানাহার করতে অনেকেই গিয়েছেন এইসব বার এবং রেস্তোঁরায়। কিন্তু তাঁরা অনেকেই হয়তো জানেন যে, এই চত্বরেই রয়েছে এক প্রাচীন কালী মন্দির!

আরও পড়ুন : লক্ষ্মীর সহোদরা, কিন্তু তিনিই দুর্ভাগ্যের প্রতীক! কে এই অলক্ষ্মী?

ট্যাঙরা অঞ্চলের এই এলাকা সু-পরিচিত চায়না টাউন নামে। কলকাতার আধুনিক চিনা সেটলমেন্ট। কিন্তু বহুদিন ধরেই কলকাতার বাসিন্দা তাঁরা। পুরনো চিনাবাজার ছেড়ে ট্যাঙরায় চলে আসেন পরে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় বাঙলি বসতিও বহু প্রাচীন। চাইনিজ সংস্কৃতির সঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতির সম্মিলন ঘটার সুযোগ পেয়েছে এই অঞ্চলকে ঘিরে। তারই পরিণামে এখানে গড়ে উঠেছে একটি কালী মন্দির। সেই মন্দির গড়ে ওঠার ইতিহাসও বড় কৌতূহলোদ্দীপক।

প্রায় ৬০ বছর আগে এখানে একটি সিঁদুর মাখা কালো পাথরকে পুজো করা শুরু হয়। কিংবদন্তি অনুসারে, একবার একটি বছর দশে‌কের গুরুতর অসুস্থ শিশু‌কে এই পাথরটির কাছে নিয়ে আসেন তার বাবা-মা। চিকিৎসকরা নাকি চূড়ান্ত জবাব দিয়ে দিয়েছিলেন শিশুটির ব্যাপারে। উপায়ান্তর না দেখে শিশুটির বাবা-মা পাথরটির সামনে শিশুটিকে রেখে বিরামহীন পূজার্চনা শুরু করেন। তারপরেই ঘটে মির‌্যাকল। ছেলেটি আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে ওঠে। তারপর থেকেই এই ঠাকুরের খ্যাতি ক্রমশ বাড়তে শুরু করে। পাথরটিকে কেন্দ্র করে গ্রানাইটের মন্দিরটি গড়ে ওঠে বছর ১২ আগে।

আরও পড়ুন : ৪৯৯ বছর পর দীপাবলিতে বিরল কাকতালীয় যোগ ! জানুন এর গুরুত্ব

বিশুদ্ধ হিন্দু মতে হয় পূজা আর পুষ্পাঞ্জলি। কিন্তু ভোগ দেওয়ার সময়ে চলে আসে চাইনিজ সংস্কৃতির ছোঁয়া। কারণ, এখানে ঠাকুরকে ভোগ দেওয়া হয় চাউমিন, চপসি, চিলি চিকেনের মতো বিশুদ্ধ চিনা খাবার। চাইনিজ ধুপকাঠির সুগন্ধে আমোদিত হয়ে ওঠে চতুর্দিক।

সিটি অফ জয় কলকাতা সংস্কৃতির মিলনক্ষেত্র। সেই সাংস্কৃতিক মিলনেরই আর এক অনুপম দৃষ্টান্ত চাইনিজ কালীবাড়ি। এমন পুজো দেখতে একবার ঘুরে আসতে পারেন আপনিও।

Previous articleঅপরিবর্তিত রুপো, আজ কত সোনার দাম?
Next articleমমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কারণেই এ রাজ্যে মিম খাপ খুলতে পারবে না, অভিজিৎ ঘোষের কলম