ডোকলামের কাছে ৯ কিমি রাস্তা বানাল চিন!

ডোকলামের নিকটবর্তী অঞ্চলে ভুটান থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে চিন গ্রাম স্থাপন করেছে বলে সম্প্রতি এক রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। এই ঘটনায় আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ভারতের পুরনো ক্ষত ডোকলাম। তবে চিনা আগ্রাসন এখানেই শেষ নয়, এবার জানা গেল গ্রামের পাশাপাশি ওই এলাকায় দীর্ঘ ৯ কিলোমিটার রাস্তা বানিয়েছে চিন। সম্প্রতি স্যাটেলাইট ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এমন তথ্যই প্রকাশ্যে এনেছে সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী দাবি করা হচ্ছে, চিন ডোকলাম প্লাটিউ-এর পূর্ব প্রান্তে ভুটান সীমান্ত থেকে দু কিলোমিটার দূরে শুধু গ্রাম নয়, ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা বানানো হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে এই রাস্তা ‘জম্পলেরি রিজ’ পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য বিকল্প রাস্তা হিসেবে তৈরি করেছে চিন। ২০১৭ সালে ডোকলামে ভারত-চিন সংঘর্ষের সময় যে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রসঙ্গত, তিন বছর আগে চিনের নির্মাণ শ্রমিকরা ভারতীয় সেনা ক্যাম্পের নিকটবর্তী ‘জম্পলেরি রিজ’ পর্যন্ত পৌঁছানোর চেষ্টা করে। যদিও চিনের সে চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয় ভারত। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার ওই পারে গিয়ে চিনা বুলডোজার আটকে দেওয়া হয়েছিল ভারতের তরফে। জানা যায় এই এলাকা সিকিম সীমান্ত ও ডোকলামের মধ্যবর্তী অঞ্চল। স্যাটেলাইট ফুটেজ অনুযায়ী যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে এই এলাকায় যদি চিনের সেনাবাহিনী বিকল্প পথ ধরে প্রবেশ করে যায় তবে তা নিশ্চিত ভাবেই ভারতের জন্য উদ্বেগের।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এক চিনা সাংবাদিকের টুইটে প্রকাশ্যে আসে ভুটান সীমান্তের দু’কিলোমিটার ভিতরে এবং ডোকলাম থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে ১ গ্রাম স্থাপন করেছে চিন। এই তথ্য রীতিমতো সাড়া ফেলে দেয়। যদিও পরে ওই টুইটটি মুছে দেন ওই সাংবাদিক। তবে ওই পোস্ট দেখে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ভুটান সীমান্ত থেকে দুই কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে ‘পাংদা’ নামের এই গ্রামটি তৈরি করেছে চিন।

আরও পড়ুন:কুণালকে ঠেকাতে আসরে নামতে বাধ্য হলেন অমিত

এদিকে এ ঘটনার কথা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেন ভারতে ভুটানের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল ভেতসপ নামগিয়েল। তিনি জানান, ভুটানের অন্দরে কোনও চিনা গ্রাম নেই। পাশাপাশি চিন ভুটানের মধ্যে কোনওরকম সমঝোতা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সীমান্ত নিয়ে তিনি কোনও রকম মন্তব্য করবেন না। তবে ভুটান ও চিনের মধ্যে যে সীমান্ত আলোচনা চলছিল সেকথা কার্যত মেনে নিয়েছেন তিনি। তবে চিনের ওই সাংবাদিকের তরফে যে ছবি টুইট করা হয় তাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে নদীর ধারে রাস্তার উপর গড়ে উঠেছে গ্রাম ও ঘরবাড়ি। টুইটারে তিনি লেখেন, নতুন এই গ্রামে আমাদের স্থায়ী বাসিন্দারা রয়েছেন। তবে পরে সেটি ডিলিট করে দেওয়া হলেও বিশেষজ্ঞদের দাবি, শেয়ার করা ওই মানচিত্রে এটা স্পষ্ট যে ভুটানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করছে চিন প্রশাসন। মানচিত্র অনুযায়ী ভুটান চিন সীমান্ত থেকে এলাকাটি আড়াই কিলোমিটার ভিতরে। যার অর্থ ভুটানের ১২ শতাংশ জমি দখল করেছে চিন। পাশাপাশি শেয়ার করা ওই ছবি এবং উপগ্রহ চিত্র খতিয়ে দেখে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন গ্রামটির যে অস্তিত্ব রয়েছে সেটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে এর সঙ্গে নয়া উদ্বেগ ওই এলাকায় চিনের তৈরি ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা।

Previous articleকুণালকে ঠেকাতে আসরে নামতে বাধ্য হলেন অমিত
Next article১৪ বছর বয়সেই স্নাতক, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী, কে এই অগস্ত্য?