ব্রু শরণার্থী পুনর্বাসন সিদ্ধান্তে বিক্ষোভে উত্তাল ত্রিপুরা, ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ সরকারের

মিজোরামের ব্রু-রিয়াং শরণার্থীদের রাজ্যে পুর্নবাসন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ত্রিপুরা সরকার ৷ আর এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ধুন্ধুমার ত্রিপুরায়।
শনিবার থেকেই উত্তর ত্রিপুরার একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ দেখানো হয় ৷ সেই সময় পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় একজনের ৷ আহত হয় 23 জন ৷ আজও বিক্ষোভ অব্যাহত ।
যৌথ আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক সুশান্ত বিকাশ বড়ুয়া জানান, শনিবার চামঠিলা, পেছারথাল এবং পানিসাগরে ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু আচমকাই বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস গুলি চালায়। তাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
তবে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। রাজ্য পুলিশের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব সিং দাবি করেছেন, বিক্ষোভকারীরা হিংসাত্মক হয়ে যাওয়ায় আত্মরক্ষার জন্য পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়। তিনি বলেন, ‘কোনওরকম অনুমতি ছাড়া সকাল থেকে জাতীয় সড়ক আটকানো হয়েছে। আমরা বোঝানোর চেষ্টা করলেও ওঁরা সরে যেতে চাননি। ওঁরা হিংসাত্মক হয়ে যাওয়ায় আমরা মুদৃ লাঠিচার্জ করি। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যান। তাঁরা অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। আত্মরক্ষায় পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়।’
আজ রবিবার এই ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিল ত্রিপুরা সরকার ৷
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ত্রিপুরা সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ৷ চুক্তি অনুযায়ী, পাঁচ হাজারের বেশি ব্রু শরণার্থীদের ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর ও পানিসাগর মহকুমায় পুর্নবাসন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷ কিন্তু এই সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেন নি
স্থানীয়রা । কারণ,
বিশাল সংখ্যক শরণার্থী এলে তাঁদের জীবন-জীবিকায় প্রভাব পড়বে বলে তারা এই অভিযোগ করেন। যদিও ত্রিপুরা সরকার তাদের পুনর্বাসনের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। এরপরই
স্থানীয়রা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ৷ সোমবার থেকেই সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এলাকায় ধর্মঘট পালন করছেন বাসিন্দারা ৷শনিবার তাঁরা অসম-আগরতলা জাতীয় সড়কে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ৷
এরপরই আজ রবিবার ত্রিপুরা সরকারের তরফে জানানো হয়, ‘‘সরকার একটি ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত করবে ৷ বিক্ষোভকারীরা হিংসা ছড়ানোয় পুলিশকে বাধ্য হয়ে গুলি চালাতে হয় ৷ এতে একজনের মৃত্যু হয়েছে । এর জেরে বিক্ষোভকারী এবং নিরাপত্তাবাহিনীর কয়েকজন আহত হন ৷’’