লাভ জিহাদ থেকে মোদি-মালব্য-রাজ্যপাল, কটাক্ষ সাংসদ-অভিনেত্রী নুসরতের

একুশের হাইভোল্টেজ নির্বাচন নিয়ে টগবগ করছে রাজ্য রাজনীতি। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ। যুক্তি-পাল্টা যুক্তিতে যুযুধান দুই প্রধান প্রতিপক্ষ তৃণমূল বিজেপি। একদিকে বাংলা দখলের স্বপ দেখছে গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে, রাজ্যে আরও শক্তিশালী হতে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছে ঘাসফুল বাহিনী।

বিজেপি যেমন প্রতিদিন তৃণমূলের নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছে, ঠিক অন্যদিকে বিজেপিকে নানা ইস্যুতে কটাক্ষ করতে ধারাবাহিক সাংবাদিক বৈঠক শুরু করেছে শাসক দল। এবার আসরে টলিউডের শীর্ষ অভিনেত্রী তথা বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান। লাভ জিহাদ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-অমিত মালব্য থেকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়, একের পর এক ইস্যুতে গেরুয়া শিবিরকে কার্যত ধুয়ে দিলেন সাংসদ-অভিনেত্রী নুসরত।

প্রসঙ্গ: লাভ জিহাদ

অন্য ধর্মে বিয়ের পর থেকেই নুসরতকে নানাভাবে সমালোচনা করেছে গেরুয়া শিবিরের একাংশ ৷ এমনকী, সংসদে মাথায় সিঁদুর, হাতে শাখা-পলা নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার পর বিজেপির একাংশ বিরূপ মন্তব্য করে নুসরতের সমালোচনা করেছিল। তখনও চুপ থাকেননি নুসরত ৷ আর এবারও লাভ-জিহাদের নামে যে নোংরা রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি, তার নিয়ে তীব্র সমালোচনা করলেন নুসরত৷ তাঁর কথায়, “প্রেমের কোনও ধর্ম হয় না৷ প্রেম একেবারেই ব্যক্তিগত৷ লাভ-জিহাদের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই ৷ কে, কাকে ভালবাসবে, সেটা কেউ ঠিক করে দিতে পারে না ৷ রাজনীতি করতে গিয়ে কিছু মানুষ এই ধরনের বিষয়কে জোর করে টেনে আনছেন ৷ ধর্মের সঙ্গে রাজনীতিকে মেশানো উচিত নয় ৷ প্রেমে কোনও রাজনীতি হয় না !”

প্রসঙ্গ: দেশজুড়ে কর্মসংস্থানে ব্যর্থ মোদি সরকার

কর্মসংস্থান ইস্যুতে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে সরাসরি বিঁধলেন নুসরত। সাংসদের খোঁচা, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন বছরে ২ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। একটিও হয়নি। এখন দিলীপ ঘোষ একই কথা বলছেন। ঢপবাজি বাংলায় চলবে না। বাংলার মানুষ অশিক্ষিত নন।” এছাড়াও বাংলা দখলের স্বপ্ন দেখার আগে বাংলা ভাষা এবং শিক্ষা সম্পর্কে বিজেপিকে ওয়াকিবহাল হওয়ার বার্তাও দিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গ: অমিত মালব্য

আজ, সোমবার বাঁকুড়ার সভায় যখন কর্মসংস্থান নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ঠিক সেই সময় একই ইস্যুতে বাংলাকে কোণঠাসা করে টুইট রাজ্য বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষক তথা গেরুয়া শিবিরের আইটি বিশেষজ্ঞ অমিত মালব্যর। টুইটে তিনি লেখেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মুখ্যমন্ত্রিত্বের মেয়াদ শেষের পর্যায়ে এসে ৩৫ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। কিন্ত বাস্তব হল তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি এবং সিন্ডিকেট নীতি, অবশিষ্ট চাকরিগুলিও ছিনিয়ে নিয়েছিল যুবক-যুবতীদের থেকে। সিএমআইই এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ অক্টোবর থেকে ২০২০ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ২১৭ শতাংশ।”

প্রসঙ্গ: রাজ্য সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ

রাজ্যে ১২ থেকে বেড়ে ৪২টি বিশ্ববিদ্যালয়। রাজ্যে এখন সরকারি-বেসরকারি ৪২টি বিশ্ববিদ্যালয়। যুবশ্রী প্রকল্পে আর্থিক সাহায্য দিচ্ছে রাজ্য সরকার। রাজ্যে অনলাইনে ভর্তির ব্যবস্থা করেছে সরকার। তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে রাজ্যে প্রচুর উন্নতি। বাংলা ভাষা শিখুন, বাংলার শিক্ষা সংস্কৃতি জানুন, বাংলার মানুষকে ভালবাসুন। রাজ্যে বেকারত্ব কমেছে ৪০ শতাংশ”, মন্তব্য সাংসদ নুসরত জাহানের।

প্রসঙ্গ: বিজেপির মুখপাত্রের ভূমিকায় রাজ্যপাল

দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক মোটেও ভাল নয়। কখনও প্রশাসনিক আবার কখনও শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে সুর চড়িয়েছেন জগদীপ ধনকড় । তাই রাজভবন এবং নবান্নের মধ্যে টুইট-পালটা টুইট এবং পত্রবোমা আদানপ্রদান লেগেই থাকে। সম্প্রতি গরুপাচার এবং কয়লা কাণ্ড নিয়ে জোরাল আক্রমণের পথে হেঁটেছেন রাজ্যপাল। একাধিক সংঘাতের প্রসঙ্গে রাজ্যপালকে এদিন বিঁধলেন নুসরত। তাঁকে “বিজেপির মুখপাত্র” বলে কটাক্ষ করেন তিনি। বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদের মন্তব্য, “জনগণ দ্বারা একটি নির্বাচিত সরকারকে পরিকল্পিতভাবে অপদস্ত, হেনস্তা ও কুৎসা করছেন মনোনীত এক পদাধিকারী। রাজ্যপালের পথ ছেড়ে তুমি বিজেপির মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করছেন।”

আরও পড়ুন-মিম-তৃণমূল এক হয়েছে, কটাক্ষ

Previous articleমালদায় লঞ্চ উল্টে দুর্ঘটনা, গঙ্গায় তলিয়ে গেল ১০টি মালবোঝাই লরি, নিখোঁজ ১২
Next articleজগদ্ধাত্রী পুজোয় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা চন্দননগর পুলিশ কমিশনারের