মন্ত্রী-সহ একাধিক পদে ইস্তফা দেওয়ার পর আগামী রবিবার মহিষাদলে শুভেন্দু অধিকারী প্রথম জনসভা করতে চলেছেন৷

ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু’র পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেছেন৷ শুভেন্দু’র ছেড়ে দেওয়া দফতরগুলির নিজের হাতেই রেখেছেন৷ দল হিসেবে তৃণমূলও নেমে পড়েছে শুভেন্দুর ইস্তফা- পরবর্তী পরিস্থিতি যাচাই করতে৷ মোটের উপর শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে দলের শীর্ষবৈঠকে শুভেন্দু- পর্বকে খুব একটা গুরুত্বও দেওয়া হয়নি৷

ঠিক এই আবহেই রবিবার মহিষাদলে ফের ‘অরাজনৈতিক সভা’ করতে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। ইস্তফার পর প্রথম সভা, তাই স্বাভাবিকভাবেই ২৯ তারিখের সভা ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে প্রবল জল্পনা।

সর্বত্রই জোর চর্চা চলছে, তাহলে কী রবিবারই দল ছাড়ার ঘোষণা করবেন শুভেন্দু? কারন, এর আগে রামনগরের সেই বহুল প্রচারিত মেগা-শো’র মঞ্চে শুভেন্দু বলেছিলেন, “আমি এখনও দলের মন্ত্রী৷ এই পদে থাকা অবস্থায় অনেক কথাই বলা যায়না”৷ ইস্তফার পর শুভেন্দু অনেকটাই ‘মুক্ত পুরুষ’৷ দলের প্রাথমিক সদস্য এবং দলের অন্যতম এক বিধায়ক, এই মুহুর্তে এটাই তাঁর পরিচয়৷ ফলে, এখন অনেককিছুই বলতে পারেন তিনি, এমনই মনে করা হচ্ছে৷ সে কারনেই মহিষাদলের সভা ঘিরে উত্তেজনা বাড়ছে৷
এর আগের একাধিক সভার মতো শুভেন্দুর মহিষাদলের সভাও কোনও রাজনৈতিক ব্যানারে নয়, সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক সভা৷ গত ১৩ নভেম্বর প্রয়াত হন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী রণজিৎ কুমার বয়াল। বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামীর বাড়িতে গিয়ে মহিষাদলে স্মরণ- সভার কথা জানিয়েছিলেন শুভেন্দু। জানা গিয়েছে, রবিবার মহিষাদলের রাজ ময়দানের বদলে মহিষাদল রাজবাড়ির ছোলাবাড়ি মাঠে এই সভা হবে।
সাম্প্রতিককালে শুভেন্দু কোনও সভা করলে বা কোনও কর্মসূচি নিলেই তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হওয়া প্রায় রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ রবিবারের সভাও সেই চর্চার বাইরে যাচ্ছে না৷ মহিষাদলের সভায় শুভেন্দু কী বলেন অথবা প্রকাশ্যেই নিজেকে ‘তৃণমূল বিধায়ক’ হিসেবে পরিচয় দেন কিনা, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনাও শুরু হয়ে গিয়েছে৷ তবে ইস্তফার পর শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, কৌশলগত কারনেই তিনি আপাতত বিধায়ক থাকবেন এবং নিজস্ব স্টাইলে জনসংযোগ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। তবে মহিষাদলে রবিবারের সভা সাম্প্রতিক অতীতে শুভেন্দুর আর পাঁচটা সাধারণ সভার মতো হবে না বলেই ধারনা রাজনৈতিক মহলের৷

আরও পড়ুন:করোনা ভ্যাকসিনের আর প্রয়োজন নেই, অতিমারির মধ্যে কেন এমন বললেন এই বিজ্ঞানী

এদিকে শোনা যাচ্ছে, মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরই শুভেন্দু নাকি ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন RSS প্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন৷ এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিষয়টি অন্যমাত্রা নিয়েছে৷ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যেতে চাইলে শুভেন্দু-স্তরের নেতারা মোদিজি বা অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে চাইবেন৷ তা না করে ভাগবত কেন, সেই রহস্য এখনও ভেদ করা যায়নি৷

ওদিকে, তৃণমূল সূত্রের খবর, তৃণমূল সুপ্রিমো এখনও শুভেন্দুর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে বলেছেন প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়কে৷ সৌগতবাবুই এতদিন এই আলোচনা চালিয়েছেন৷ দলের খবর, দলনেত্রীও চাইছেন না, ওই আলোচনার দরজা এখনই একেবারে বন্ধ হয়ে যাক।
