সম্প্রীতির বাংলা: আসানসোলে হিন্দু বৃদ্ধের দেহ সৎকার করলেন মুসলিম প্রতিবেশীরা

বিভাজনের দগদগে ক্ষত ক্রমশ ভয়াবহ আকার নিয়েছে গোটা দেশে। হিন্দু না মুসলিম? মানবিকতাকে ছুঁড়ে ফেলে এই প্রশ্নই যখন ক্রমশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে দেশজুড়ে ঠিক তখনই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির গড়ল আসানসোল। প্রমাণ করে দিল এই বাংলা ‘ভাতৃত্বের বাংলা’। যার পরতে পরতে ভালোবাসার মোড়ক। বিভাজনের রক্তের দাগ এখানে স্থায়ী হতে পারে না কোনওভাবেই। তারই প্রমাণ দিয়ে এদিন এক হিন্দু বৃদ্ধের সৎকার করল মুসলিম প্রতিবেশীরা।

ঘটনা আসানসোলের জামুরিয়া থানার অন্তর্গত দেশেরমোহন গ্রাম। শনিবার সন্ধ্যায় এখানেই মৃত্যু হয় রামধনুর রজক নামে ৮০ বছর বয়সী এক হিন্দু বৃদ্ধের। গ্রামের একমাত্র হিন্দু পরিবারের বৃদ্ধ সদস্যের মৃত্যুতে পাশে এসে দাঁড়াল প্রতিবেশী মুসলিম সম্প্রদায়ের সমস্ত মানুষ। ওই রাতেই হিন্দু রীতি মেনে দেহ সৎকার করলেন তারাই। জানা গিয়েছে ২৩০ টি পরিবারের বাস ওই গ্রামে। তাদের মধ্যে রয়েছে একটি মাত্র হিন্দু পরিবার। দিন কয়েক আগে ওই পরিবারের সদস্য রামধনু রজক বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ বোধ করেন। তার সন্তানরা বাইরে থাকার কারণে ওই বৃদ্ধের চিকিৎসার ভার নেয় মুসলিম প্রতিবেশীরা। দুর্গাপুরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষমেষ রানীগঞ্জের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তিনি প্রয়াত হন।

আরও পড়ুন:মারাদোনার ৭০০ কোটির সম্পত্তির নেই কোন উইল, বিবাদ তুঙ্গে 

এদিকে ওই বৃদ্ধের পরিবারের সমস্ত সদস্য বাইরে থাকেন। রাতে তাঁর ছেলেমেয়েদের খবর দেওয়া হলে সকালে মৃতের এক ছেলে গ্রামে উপস্থিত হয়। বাকিরা ভিন রাজ্যে থাকায় সৎকারের কাজে পৌঁছতে পারেনি। যদিও হিন্দু ধর্ম মতে বৃদ্ধের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় কোনও খামতি রাখেনি প্রতিবেশীরা। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা শেখ মুবারক জানান, আমাদের এই গ্রাম সম্প্রীতির গ্রাম। যিনি মারা গিয়েছেন তিনি ধর্মীয় বিশ্বাসে হিন্দু হলেও গ্রামের একজন সম্মানীয় ব্যক্তি। আর মানবিকতার রাস্তা ধরে মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে পারে একমাত্র মানুষই। ধর্ম এখানে বাধা হতে পারে না।

Previous articleআনন্দপুরের বহুতল থেকে ‘ঝাঁপ’ ছাত্রের, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা
Next articleরাষ্ট্রপতির দেওয়া পুরস্কার চুরি গেল অঙ্কের শিক্ষকের বাড়ি থেকে