দেরির জন্য দিল্লিকে দুষে মাঝেরহাট ব্রিজ উদ্বোধন মুখ্যমন্ত্রীর, হেঁটে পরিদর্শন

অবশেষে আড়াই বছর পরে খুলল মাঝেরহাট ব্রিজ। রেল অনুমতি দিলে ৯ মাসে আগেই ব্রিজ চালু করা যেত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অভিযোগ করলেন উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার, বিকেলে সূচি অনুযায়ী মাঝেরহাট ব্রিজ উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী। বিকেল ঠিক ৫টা ১৯ মিনিটে বোতাম টিপে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। নবনির্মিত ‘জয় হিন্দ’ ব্রিজের উপর হেঁটে পরিদর্শন করেন। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম-সহ পুলিশ ও প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা।

কাজের বিলম্বের জেরে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, নাম না করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রেলকে দোষ দেব না, দিল্লিতে যারা বসে আছে, তাদের দোষ”। মাঝেরহাট ব্রিজে বিজেপির বিক্ষোভ নিয়েও নাম না করে সমালোচনা করেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, এই ব্রিজ নির্মাণের ছাড়পত্র দিতে শুধু দেরিই করেছে, তা নয়, তারা রাজ্যের কাছ থেকে টাকাও নিয়েছে রেল। মমতা প্রশ্ন তোলেন, রাজ্যের থেকে রেল ৩৪ কোটি টাকা নিয়েছে কী কারণে?

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বের সেতু ভেঙে পড়ে মাঝেরহাট ব্রিজ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তাঁর আমলেই রাজ্যের সেতুগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। নদীমাতৃক বাংলায় প্রচুর সেতু। কিন্তু ২০১১ সালে তাঁরা ক্ষমতায় আসার পরে দেখেন কোনও ব্রিজেরই অডিট হয়নি। তিনি জানান, বিবেকানন্দ রোডে ব্রিজ ভাঙে, মাঝেরহাট ব্রিজ ভাঙে। তড়িঘড়ি তিনি ব্রিজের দেখভালের জন্য কমিটিও গড়ে দেন।

নতুন ব্রিজ আগের থেকে আরও উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি বলে জানান মমতা। এটি চারলেনের, ভারবহন ক্ষমতা বেশি, দৈর্ঘ্যও বেশি। অতিরিক্ত ওজন ব্রিজের উপর পড়লে জানিয়ে দেবে সেন্সর। পুলিশ সূত্রে খবর, অতিরিক্ত ভার হলে সেন্সরের মাধ্যমে সরাসরি সিগন্যাল পৌঁছে যাবে লালবাজারের কন্ট্রোল রুমে। সেই সিগন্যাল পেলে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হবে। দুর্ঘটনা এড়াতে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। থাকছে একাধিক ক্যামেরা। কলকাতায় এই প্রথম কোনও সেতু কেবলের সহযোগে নির্মিত। সূত্রের খবর, সেতুটি সর্বোচ্চ ৩৮৫ মেট্রিক টন ভার নিতে পারবে। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৩৬ মিটার। চওড়া ১৬ মিটার।

প্রায় ২ বছর ৩ মাস বন্ধ থাকার পর চালু হল মাঝেরহাট ব্রিজ। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই যান চলাচল শুরু হবে। ব্রিজের উদ্বোধন ঘিরে স্থানীয়দের উৎসাহ ছিল চরমে। সন্ধেয় যান চলাচল না করায় উদ্বোধনের পরে অনেকেই ব্রিজের উপর ওঠে পড়েন। কেউ সেলফি তুলছেন। উৎসবের আবহাওয়া।

আরও পড়ুন- কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন, পদ্মবিভূষণ ত্যাগ প্রকাশ সিং বাদলের

Previous articleকৃষক আন্দোলনকে সমর্থন, পদ্মবিভূষণ ত্যাগ প্রকাশ সিং বাদলের
Next article‘ঢপের চপ!’ বাংলায় শিল্পের অগ্রগতি নিয়ে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ দিলীপের