‘আর কোনও কথা নয়’, হোয়াটসঅ্যাপে শুভেন্দুকে জানিয়ে দিলেন সৌগত

নন্দীগ্রামের বিধায়ককে নিয়ে প্রতিদিনই গড়ে ওঠা নিত্যনতুন জল্পনা আর বাড়তে দিতে রাজি নয় তৃণমূল শিবির৷ তাঁর সঙ্গে ফের আলোচনার বিষয়টিও ঝেড়ে ফেলতে চলেছে রাজ্যের শাসক দল৷

জানা গিয়েছে, শুভেন্দু অধিকারীর পাঠানো হোয়াটসঅ্যাপের জবাব বৃহস্পতিবার দিয়েছেন সৌগত রায়। সূত্রের খবর, সৌগত লিখেছেন, “তাঁর পক্ষে একসাথে কাজ করা যদি মুশকিলই হয়, তাহলে মঙ্গলবারের বৈঠকে কেন একসঙ্গে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছিলেন শুভেন্দু !” একইসঙ্গে শুভেন্দুকে না’কি জানানো হয়েছে, “এরপর তৃণমূলের তরফে আর আলোচনার দরজা আর খোলা থাকছে না। এখন যা বলার শুভেন্দুই জানাবেন৷ দলের তরফে আর কিছু বলার নেই।”

মঙ্গলবার রাতের ‘ঐক্য-বৈঠক’-এর পর বুধবার সকালে শুভেন্দু এক হোয়াটসঅ্যাপ- বার্তায় ‘মধ্যস্থতাকারী’ সৌগত রায়কে জানিয়েছিলেন, “আমার বক্তব্যের এখনও সমাধান হয়নি৷ সমাধান না করেই আমার ওপর সব চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ ৬ ডিসেম্বর আমার সাংবাদিক সম্মেলন করে সব জানানোর কথা ছিল৷ কিন্তু তার আগেই আপনারা প্রেসকে সব জানিয়ে দিলেন৷ ফলে একসাথে কাজ করা মুশকিল৷ আমাকে মাফ করবেন”৷

আরও পড়ুন : শুভেন্দু-ইস্যুতে মধ্যস্থতাকারীদের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন, কণাদ দাশগুপ্তর কলম

জানা গিয়েছে, শুভেন্দুর কাছ থেকে পাওয়া ওই বার্তা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন সৌগত রায়। তারপরই শুভেন্দুকে উত্তর দেন প্রবীণ এই সাংসদ৷ রাজনৈতিক মহলের ধারনা, এই ধরনের বার্তা দিতে মমতাই বলেছেন সৌগতকে৷ সৌগত সেই অনুসারেই দলের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দুকে৷ একইসঙ্গে সৌগতবাবু জানিয়েছেন, “শুভেন্দুর সঙ্গে আর কোনও কথা নয়, এবার যা বলার শুভেন্দুই জানাবেন, তাঁদের তরফে নতুন আর কিছুই বলার নেই”। কার্যত এভাবেই শুভেন্দু-ইস্যুতে ইতি টেনে দিয়েছে তৃণমূল৷

এদিকে, শুভেন্দুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে, তা নিয়ে ক্রমশই বাড়ছে ধোঁয়াশা। তবে বসে নেই সদ্য মন্ত্রিত্বত্যাগী শুভেন্দু ৷ বৃহস্পতিবার তমলুক, গড়বেতা, হলদিয়ায় পরপর কর্মসূচি রয়েছে তাঁর৷

আরও পড়ুন : রাজনৈতিক মন্তব্য নয়, পদযাত্রা শেষে শুধুই ক্ষুদিরাম স্মরণ শুভেন্দুর

ওদিকে, বুধবার রাতেই কলকাতার গোলপার্ক, গড়িয়াহাট, বাসন্তী দেবী কলেজ, রাসবিহারী মোড় এবং সাদার্ন অ্যাভিনিউর বেশ কিছু এলাকায়’ দাদার অনুগামী’দের পোস্টার নজরে এসেছে। যদিও এদিন সকালেই সেইসব পোস্টার খুলে ফেলেন দলের কর্মীরা। দলের কোনও নেতার নির্দেশেই এসব খোলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ কে বা কারা এই পোস্টার লাগিয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয় তৃণমূলের কাছে৷

জানা গিয়েছে, এদিন পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ৩ জায়গায় কর্মসূচি রয়েছে শুভেন্দুর৷ সব অনুষ্ঠানই ‘অরাজনৈতিক’৷ এদিন সকালে শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর ১৩২তম জন্মদিবস উপলক্ষ্যে সকালেই কাঁথি সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ডের কাছে বিপ্লবী ক্ষুদিরামের মূর্তিতে মাল্যদান করেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপরই তমলুকে শুভেন্দু পদযাত্রা করেন জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে। তমলুক হাসপাতাল মোড় থেকে হ্যামিলটন হাই স্কুল পর্যন্ত পদযাত্রা করেন শুভেন্দু। তমলুকের ‘তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতি’র এই পদযাত্রার শেষ হয় ক্ষুদিরামের স্মৃতি- বিজড়িত হ্যামিল্টন হাই স্কুল চত্বরে একটি সভার মধ্য দিয়ে৷ দুপুরেই গড়বেতায় ক্ষুদিরাম বসুর একটি মূর্তি উন্মোচন করেন শুভেন্দু। তার আগে চন্দ্রকোণা থেকে গড়বেতা পর্যন্ত বাইক-মিছিল হয় শুভেন্দুর অনুগামীদের। হলদিয়াতেও শুভেন্দু- অনুগামীদের এক পদযাত্রার কথা আছে৷

Previous articleতদন্তে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
Next articleমুখ্যমন্ত্রী-সরকারি কর্মী সংগঠনের বৈঠক, কী বললেন মমতা