হিম্মত থাকলে চলুন এই ‘দু পয়সার নেত্রী’কে সব সংবাদমাধ্যম বয়কট করি, অভিজিৎ ঘোষের কলম

অভিজিৎ ঘোষ

মহুয়া মৈত্র। সাংসদ। তাঁর ‘দু পয়সার সাংবাদিক’ মন্তব্য নিয়ে সংবাদ মাধ্যম ক্ষুব্ধ। স্বাভাবিক। কাণ্ডজ্ঞানহীন, অনৈতিক, অপমানজনক মন্তব্য। অযথা অন্যকে ছোট করার মানসিকতা। সমস্যা হচ্ছে, সংবাদ মাধ্যমে অনেকেই নানা মন্তব্য করছেন। সহমর্মিতা দেখাচ্ছেন। কিছু ব্যক্তিগত ভাবে, কিছু সমষ্টিগতভাবে। কিন্তু আসল সমস্যার সমাধানে কেউই ঢুকছেন না, কিংবা জেনেও ঢুকতে চাইছেন না।

 

সমস্যা হলো, মহুয়াকে এখনও সাংবাদিকূল সহ্য করছেন কেন? আমরা দেখলাম, প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এই প্রতিবাদ গায়ে মাখে না মাথায় দেয় কে জানে! প্রেস ক্লাবের কিছু কিছু বিষয়ে মাঝে মধ্যে বিবেক জাগ্রত হয়। দু’একটা প্রতিবাদ হয়, ঘটা করে মিছিল হয় কখনও সখনও। সাংবাদিকদের বিনা নোটিশে ছাঁটাই করলে, কিংবা অফিসে এসে কার্ড পাঞ্চ করার সময়ে সাংবাদিক যখন জানতে পারেন তাঁর চাকরি নেই, সে নিয়ে আমরা একবারও মিছিল করি না, প্রতিবাদ করি না। চাকরি চলে যাওয়ায় আত্মহত্যা করলেও আমাদের বিবেকে দংশন হয় না। কারণ, সেগুলো বড় প্রতিষ্ঠান। তাদের বিরুদ্ধে বলব না। কে জানে কবে আমাকেই যদি সেখানে ইট পাততে হয়! এই দ্বন্দ্বে ভুগে লোক দেখনো প্রতিবাদ। ফলে মহুয়ারা বলে যান, আর আমরা তা সহ্য করেনি। সব আসলে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যস্ত।

আমরা যারা এই পেশায় আছি, যে যেখানে আছি, তারা যদি এ নিয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত না নিই, তাহলে আগামিদিনে আর একজন এই কথা বলার সাহস দেখাবেন। যদি উচিত শিক্ষা দিতে হয়, তাহলে সমস্ত হাউসের কর্তাদের সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত মহুয়া মৈত্রকে বয়কট করা। আগামিদিনে মহুয়ার কোনও খবর কোনও সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হবে না। যতক্ষন না লিখিতভাবে মহুয়া সকলের কাছে ক্ষমা চাইবেন, ততদিন এই বয়কট চালানো উচিত। ট্যুইটারে ঘুরিয়ে মাফ চাওয়া নয়, বাংলা ভাষায় তিনি প্রকাশ্যে এই মন্তব্য করেছিলেন। এবার মহুয়াকেই ওই বাংলা ভাষাতেই ক্ষমা চাইতে হবে। ভুল স্বীকার করতে হবে। বলতে হবে আগামিদিনে এ ধরণের কোনও মন্তব্য আর তিনি করবেন না। সাংবাদিকূলের হিম্মত থাকলে নিজের নিজের প্রতিষ্ঠানকে বলুন, বোঝান এবং সিদ্ধান্ত নিন। তাহলেই উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে এই ‘দু পয়সার নেত্রী’কে। নইলে আজ মহুয়া এই মন্তব্য করেছেন, কাল অন্য আর একজন নেতা বলার সাহস পেয়ে যাবেন। আর আমরা একটি লিখিত বিবৃতি লিখে দায়িত্ব পালনের নাটক করে যাব।

পারলে দু পয়সার নেত্রীকে চলুন বয়কট করি। কিন্তু দুঃখের কী জানেন, আমরা আমাদের পেশাতেই জোটবদ্ধ নই। ফলে এমন আশা করাটা যে অরণ্যে রোদন হবে তা নিশ্চিত করে বলা যায়। কারণ, এই সব দু পয়সার নেতা-নেত্রীরা আমাদের হিম্মতও বুঝে গিয়েছেন!

আরও পড়ুন-বনধে সরকারি কর্মীদের হাজিরা নিয়ে কোনও নির্দেশিকা নেই

Previous articleসকাল থেকে রাস্তায় ধর্মঘটীরা, কৃষকদের ভারত বনধে রাজ্যেও রেল-রাস্তা অবরোধ
Next articleবনধের সময় বদল! সুর চড়িয়েও দরদী কৃষকরা