প্রকল্প ঘিরে বিতর্ক ও মামলার মধ্যেই আজ নয়া সংসদ ভবন শিলান্যাসে মোদি

সুপ্রিম কোর্টের কড়া নির্দেশ মেনে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। তবে পূর্বঘোষিত শিলান্যাসের অনুষ্ঠানটিকে শেষ মুহূর্তে ছাড় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এই পরিস্থিতিতে আজ বিতর্কিত সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রজেক্টের অধীনে নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অতিমারির পরিস্থিতিতে বিতর্ককে সঙ্গী করেই এই কর্মসূচির সূচনা হবে আজ।

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে এই ব্যায়বহুল প্রকল্প নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কড়া তোপের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় সরকার। শীর্ষ আদালত প্রশ্ন তোলে যে এই প্রকল্প নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা চলা সত্ত্বেও কেন তড়িঘড়ি নির্মাণ ও ভাঙাভাঙির কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে? মধ্য দিল্লির এই বিরাট প্রকল্পে সংসদ ভবন, প্রশাসনিক কেন্দ্র, সংলগ্ন রাস্তা, মন্ত্রিদের বাসস্থান সহ বহু ভবন পুনর্গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। অভিযোগ উঠেছে, অতিমারির পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে বিশাল ব্যয়বহুল এই প্রকল্পের কাজ জারি রেখেছে সরকার। শুধু তাই নয়। নতুন প্রকল্পের জন্য প্রচুর গাছ কেটে পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। এই নিয়ে বিভিন্ন মহল সুপ্রিম কোর্টে কাজ বন্ধের আর্জি জানিয়ে মামলা করে।

মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই সরকার গাছ কাটা, ভাঙাভাঙি ও পুনর্নির্মাণের কাজ যথারীতি চালিয়ে যাচ্ছিল। তা নিয়েই কেন্দ্রকে কড়া ভর্ৎসনা করে শীর্ষ আদালত। সেইসঙ্গে নির্দেশ দেয়, যতদিন না মামলার নিষ্পত্তি হয় ততদিন ভাঙা বা নির্মাণ সহ সমস্ত ধরনের কাজ বন্ধ রাখতে হবে। তবে প্রধানমন্ত্রীর শিলান্যাসের কর্মসূচি যেহেতু আগেই ঘোষিত হয়েছে সেজন্য সেই বিষয়ে কোনও হস্তক্ষেপ করবে না সুপ্রিম কোর্ট। ফলে আদালতের রায়কে বাঁচিয়েই আজ নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

আরও পড়ুন : ব্যাপক আন্দোলনের হুঁশিয়ারি, কৃষক সমস্যা সমাধানে শাহর সঙ্গে বৈঠকে কৃষি মন্ত্রী

নতুন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রায় ৫৬০ ফুট ব্যাসের বৃত্তাকার সংসদ ভবন থেকে যাবে ইতিহাসের এক অনন্য পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে। তার পাশেই তৈরি হবে নতুন ত্রিভুজাকৃতি সংসদ ভবন, যা প্রায় ৬৪,৫০০ বর্গমিটার জুড়ে থাকবে। এর জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৯৭১ কোটি টাকা। ২০২২ সালের মধ্যে নতুন সংসদ ভবন গড়ার কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে সমন্বয় রেখে প্রকল্পের দায়িত্ব পালন করবে টাটা গোষ্ঠী।

করোনা বিশ্ব মহামারির অভূতপূর্ব পরিস্থিতি ও অর্থনীতির সংকটের মধ্যে এখন কেন নতুন সংসদ ভবন তৈরিতে বিপুল টাকা ঢালা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলে সনিয়া গান্ধী সহ বিরোধী শিবিরের একাধিক নেতানেত্রী প্রশ্ন তুলেছিলেন। বিশেষ সংকটের পরিস্থিতিতে মোদি সরকারের অগ্রাধিকার কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। কিন্তু সেই আপত্তি কানে তোলেনি কেন্দ্র। অবশেষে শীর্ষ আদালত হস্তক্ষেপ করে প্রকল্পের কাজ আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। তাই আজ শিলান্যাস হলেও সংসদ ভবন পুনর্গঠনের কাজ কবে শুরু করা যাবে তা পুরোটাই আদালতের বিচারাধীন।