বিজেপি বিরোধিতা নিয়ে আজ প্রতিযোগিতা বিমল-বিনয়ের, কিশোর সাহার কলম

 

বিজেপি বিরোধিতায় কে বেশি লোক জড়ো করতে পারেন তা নিয়ে বিমল গুরুং ও বিনয় তামাং শিবিরের খুল্লমখুল্লা লড়াই শুরু হয়ে গেল।
আজ, রবিবার দুপুরে ডুয়ার্সের বীরপাড়ায় সভা করবেন বিমল গুরুং। একই সময়ে শিলিগুড়ির কাছে সুকনায় হাই স্কুলের মাঠে সভা করবেন বিনয় তামাং। দুই শিবিরের নেতা-কর্মী সমর্থকদের নিয়ে সকাল থেকেই গাড়ির স্রোত পাহাড় ও ডুয়ার্সের দিকে। ফলে, একদিকে দার্জিলিং পাহাড়ের রাস্তায় যেমন যানজট, তেমনই ডুয়ার্সের পথেও। তা সামাল দিতে ছুটির দিনেও বাড়তি পুলিশ মোতায়েন হয়েছে পাহাড়-তরাই ও ডুয়ার্সে।
বিমল গুরুং দাবি করেছেন, পাহাড়-তরাই-ডুয়ার্সের সিংহভাগ মানুষ তাঁদের দিকেই রয়েছেন। বিমল গুরুং শিবিরের নেতারা অনেকেই জানান, গত সাড়ে তিন বছর পাহাড় ছেড়ে আত্মগোপন করে থাকলেও প্রতিটি ভোটে বিমল গুরুং বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থন করে জিতিয়েছেন। ফলে, পাহাড় ও তরাই ও ডুয়ার্সের নেপালি ভাষীরা যে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গেই আছেন তা স্পষ্ট বলে ওই নেতারা যুক্তি দিয়েছেন। গুরুংয়ের দাবি, বিজেপিকে আগামী বিধানসভা ভোটে পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সে পুরোপুরি কোণঠাসা করে তাঁরা নিজেদের শক্তি ফের প্রমাণ করবেন।
বিনয় তামাং জানিয়ে দিয়েছেন, গত সাড়ে তিন বছর পাহাড়-তরাই ও ডুয়ার্সে শান্তি বজায় রেখে যেভাবে উন্নয়নের কাজ ত্বরাণ্বিত করতে তাঁরা সহযোগিতা করেছেন তা মানুষ দেখেছেন। বিনয় দাবি করেন, শান্তিকামী নেপালি ভাষীরা তো বটেই, সমতলের মানুষও তাঁদের দিকেই রয়েছেন। বিনয়ের শিবিরের আরেক নেতা তথা জিটিএ-এর কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান অনীত থাপা জানান, সাড়ে তিন বছর ধরে বিজেপিকে সমর্থন করে এখন বিজেপি বিরোধিতা করলে তা কতটা বিশ্বাসযোগ্য হবে সেটাও দেখার বিষয়। বিনয় শিবিরের দাবি, পাহাড় ও তরাই-ডুয়ার্সের নেপালিভাষী, আদিবাসী সহ নানা সম্প্রদায়ের মানুষ যে তাঁদজের দিকে সেটা ফের আজ সুকনার মাঠে প্রমাণ হবে।
দুই শিবিরের শক্তি প্রদর্শনের লড়াই যাতে কোনমতেই সংঘর্ষের দিকে না পৌঁছায় সে দিকে অবশ্য খেয়াল রাখছেন বিমল গুরুং ও বিনয় তামাংরা। তঁরা দলের নেতা-কর্মীদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, উভয়পক্ষের পক্ষে আর পাঁচটা বিষয়ে বিরোধ থাকলেও দুই শিবিরই গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অনড়। এবং দুই শিবিরই আগামী বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে পাহাড়-তরাই ও ডুয়ার্সে পর্যুদস্ত করতে আসরে নেমেছে। ফলে, দুই শিবিরের কর্মী-সমর্থকরা যাতে ঝামেলায় না জড়ান সেই ব্যাপারে গুরুং ও তামাং শিবিরের নেতারা সকলকে বার্তা দিয়েছেন।
এদিন সকাল থেকে সুকনার রাস্তায় পাহাড়ের গাড়ির স্রোত। তরাই ও ডুয়ার্স থেকেও প্রচুর গাড়ি সুকনার দিকে রওনা হয়েছে। বীরপাড়ায় বিমল গুরুংয়ের সভায় যাওয়ার জন্য সেবকের দিক থেকে গাড়ির ঝল নেমেছে। কালচনিনি, জয়গাঁ থেকেও গাড়ির লাইন বীরপাড়ার রাস্তায়।
কোন সভায় কত ভিড় হয়, বিমল গুরুং কী বলেন, বিনয় তামাং কতটা আক্রমণাত্মক হন সেটাও দেখার বিষয়। সর্বোপরি, ভিড় জমানোর ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে কে বেশি শক্তি ধরছেন, কাকে নেতা হিসেবে নেপালি ভাষী সম্প্রদায়ের মানুষ দেখতে চাইছেন তারও অনেকটা আঁচ মিলতে পারে এদিনের দুটি সভা থেকেই।

Previous articleশুভেন্দুই মুখ্যমন্ত্রী, কনিষ্ক পাণ্ডার ঘোষণায় অবাক বিজেপিও
Next articleভারতে হামলার চালাতে মালয়েশিয়া থেকে ফান্ডিং, RAW-এর অনুসন্ধানে জাকির যোগ