শুভেন্দুকে জবাব দিতে বুধবার কাঁথিতে সভা ফিরহাদ, সৌগত’র, নজরে অধিকারীরা

জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শুভেন্দু অধিকারী শনিবার বিজেপিতে (BJP) যোগ দিয়েছেন। ভাষণে আক্রমণ করেছেন তৃণমূলকে৷ বসে নেই তৃণমূলও। শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) শনিবারের ভাষণের জবাব দিতে বুধবার কাঁথিতে সভা করবেন ফিরহাদ হাকিম, সৌগত রায়রা৷

কিছুদিন আগে মেদিনীপুর কলেজ মাঠে নাম না করে শুভেন্দুর উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শনিবার তার জবাব দিয়েছেন শুভেন্দু। মমতা সেদিন বলেছিলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস আমরা যখন তৈরি করেছিলাম, আমার মনে আছে অখিল গিরি প্রথমবার লড়াই করেছিলো পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির আসন থেকে৷ আমার মনে আছে, সেদিন আমরা হয়তো জিততে পারিনি। কিন্তু আমরা দ্বিতীয় হয়ে গিয়েছিলাম। মাত্র ২২ দিনের জায়গায়। সুতরাং এটা মনে রাখবেন, তৃণমূল কংগ্রেস অত দুর্বল নয়”৷

পাল্টা শুভেন্দু শনিবার বলেছেন, “দিনকয়েক আগে এই মাঠে তৃণমূলনেত্রী বলে গিয়েছেন যে কাঁথিতে দ্বিতীয় হয়েছিলেন। অধিকারীদের মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। এবারও দ্বিতীয় হবেন। প্রথম হবে ভারতীয় জনতা পার্টি।”

এবার সরাসরি আক্রমণের পথেই যাচ্ছে শাসক দল৷ শুভেন্দুর জেলায় গিয়েই তাঁর কথার জবাব দেবে তৃণমূল৷ সভা করবেন ফিরহাদ-সৌগত-সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতারা৷ শুভেন্দুকে ‘জবাব’ দেওয়ার স্থান হিসেবে কাঁথিকে বেছে নেওয়ার পিছনে অন্য এক কৌশল দেখছে রাজনৈতিক মহল৷ এই সভার মধ্য দিয়েই অধিকারী-পরিবারের মনোভাব বুঝে নিতে চাইছে দল৷ দিনকয়েক আগে মমতার সভায় সরাসরি গরহাজির ছিলো অধিকারী পরিবার৷ পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী, সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী, পুর প্রধান সৌমেন্দু অধিকারী-সহ ওই পরিবারের কেউই মমতার মঞ্চে ছিলেন না সেদিন৷ শনিবার শুভেন্দু যখন মেদিনীপুরে বিজেপিতে যোগ দিতে যাচ্ছেন, তখন কাঁথির শান্তিকুঞ্জের বাড়িতেই ছিলেন বাবা শিশির ও দুই ভাই দিব্যেন্দু-সৌম্যেন্দু।

এদিকে শুভেন্দুর দলত্যাগের পর জেলা তৃণমূলের (Trinamool Congress) মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে শিশির-সহ অধিকারীদের অন্যান্য লোকজনদের নিয়ে৷ শিশিরবাবুর নেতৃত্বে তৃণমূল পূর্ব মেদিনীপুরে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আক্রমণ কতখানি ঝাঁঝালো করতে পারবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে৷ এই অংশের বক্তব্য, এর আগে মুকুল রায়ের দলত্যাগের সময় তাঁর পুত্র বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় বিজেপিতে যাননি৷ শুভ্রাংশু সেদিন বলেছিলেন, “আমি তৃণমূলেই আছি এবং থাকবো”৷ কিন্তু পরবর্তীকালে মুকুলপুত্রও যোগ দেন বিজেপিতে৷

শনিবার শুভেন্দু বিজেপিতে গেলেও অধিকারী পরিবারের কেউই তাঁর সঙ্গী হননি৷ শুভেন্দুর ভাই সাংসদ দিব্যেন্দু ঠিক মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশুর সুরেই শনিবার বলেছেন, “আমাকে ষাঁড় তাড়া করেনি৷ তৃণমূলেই আছি এবং থাকবো”৷ দিব্যেন্দুর এই বার্তার পরেও আশ্বস্ত হতে পারছেনা জেলা তৃণমূলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী৷ শীর্ষনেতাদের কাছে এই বার্তাও পৌঁছে দিয়েছেন৷ তাই এক ঢিলে একাধিক পাখি মারার রাস্তাই বেছে নিয়েছে শাসক দল৷ বুধবার শুভেন্দু অধিকারীকে জবাব দেওয়ার পাশাপাশি শিশির-দিব্যেন্দুর মনোভাবও বুঝে নিতে চাইছে তৃণমূল৷

বুধবারের সভার অন্যতম প্রধান বক্তা শিশির এবং দিব্যেন্দু অধিকারীও৷ এখন দেখার অসুস্থতার কারন দেখিয়ে ফের শিশিরবাবু বুধবারের সভা এড়িয়ে যান কি’না, দিব্যেন্দুই বা ওই দিন প্রকাশ্যে কতখানি সরব হন দলত্যাগী শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ৷

এর পরই দল অধিকারী পরিবার সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে৷

আরও পড়ুন-মমতা দল বদলায়নি, নিজে দল বানিয়েছে! শাহকে ভুল ধরালেন সুব্রত

Previous articleবাউল বাড়িতে সারলেন মধ্যাহ্নভোজ, আতিথেয়তায় আপ্লুত অমিত শাহ
Next articleগান্ধীজি-নেতাজির অনুপ্রেরণা ছিলেন গুরুদেব, বিশ্বভারতী দর্শন করে বললেন অমিত শাহ