দলবদলুদের এখনও পর্যন্ত কোনও রাজ্যেই ‘মুখ্যমন্ত্রী’ করেনি বিজেপি

অসমের হিমন্ত বিশ্বশর্মা, ত্রিপুরার সুদীপ রায় বর্মন বা মধ্যপ্রদেশের জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। দলবদল (defecations) করে একাধিক অনুগামী, বিধায়ক ভাঙিয়ে এনে বিজেপিকে (BJP) ক্ষমতার স্বাদ পাইয়ে দিয়েও শেষ পর্যন্ত নিজেরা মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেননি। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন সর্বানন্দ সোনেয়াল, বিপ্লব দেব, শিবরাজ সিং চৌহানের মত আদি বিজেপি নেতারাই। কোনও রাজ্যেই যখন দলবদলুদের (defectors) মুখ্যমন্ত্রী বানানোর নজির নেই, সেখানে হঠাৎ কোন নিয়মে ব্যতিক্রম হতে যাবে বাংলা? ‘দাদা’ মুখ্যমন্ত্রী হবেন এই আশায় সদ্য দলত্যাগী দাদার অনুগামীরা যতই স্বপ্নে ঘি খেতে থাকুন, ভোট পর্যন্ত কুর্সির গাজর ঝুলিয়ে রেখেই দলবদলু নেতাকে (defector leader) ব্যবহার করে কাজ হাসিল করবে গেরুয়া শিবির। দিবাস্বপ্ন থেকে জেগে উঠে দাদার অনুগামীরা পরে না দেখেন গোটাটাই ফক্কা!

রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, বাংলা জয়ের লক্ষ্যপূরণের স্বার্থে বিজেপির (BJP) এখনকার কল্পতরু মূর্তি দেখে যেসব রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধি গরু-ছাগলের মত বিক্রি হয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা খোয়াব দেখার আগে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপির রেকর্ডটা একবার দেখে নিন। কংগ্রেস জমানায় মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন অসমের প্রভাবশালী নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা। শুধু অসম নয়, গোটা উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে আধিপত্য বিস্তারের পিছনে হিমন্তের অবদান স্বীকার করে বিজেপি। তাও ,অসমে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করেনি মোদি-শাহের দল। ত্রিপুরায় কংগ্রেস, তৃণমূল ঘুরে একঝাঁক বিধায়ক সঙ্গে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা সুদীপ রায় বর্মন বিজেপিতে আজ বিক্ষুব্ধ নেতা হয়েই রয়ে গিয়েছেন। প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাহীন বিজেপির ঘরের ছেলে বিপ্লব দেবকেই মুখ্যমন্ত্রী করেছে গেরুয়া শিবির। আবার মধ্যপ্রদেশেও একই চিত্র। কংগ্রেস ছেড়ে একদল মন্ত্রী, বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে রাজ্যে কংগ্রেস সরকারটাই ফেলে দিয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। নতুন বিজেপি সরকারে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন বিজেপির দীর্ঘদিনের নেতা শিবরাজ সিং চৌহান। বছর ঘুরতে চলল, জ্যোতিরাদিত্য এখন শুধু রাজ্যসভার সাংসদ। রাজ্যে রাজ্যে যেখানে এই নজির, সেখানে হঠাৎ বাংলায় ‘বেনজির কাণ্ড’ ঘটে যাবে, এমন ভাবার কোনও কারণ এখনও পর্যন্ত ঘটেনি। এখানে দল যদি আদৌ ক্ষমতায় আসে সেক্ষেত্রে বিজেপির আদি ভূমিপুত্রদের বাদ দিয়ে দলবদলু ‘মেদিনীপুরের নেতা’ সর্বেসর্বা হয়ে যাবেন এমন দুরাশা না করাই ভাল।

 

Previous article‘গড়ে’ অধিকারীদের বাদ দিয়েই আজ সংগঠন দেখাবে তৃণমূল
Next articleসাবধান হয়ে যান, জনতা আয়না দেখিয়ে দিয়েছে,’ বিজেপিকে হারিয়ে বার্তা ওমরের