বিকেলে সমালোচনা, সন্ধ্যায় বিনয়-অনীতদের একসাথে চলার ডাক দিলেন বিমল

কিশোর সাহা

বিমল গুরুং(Bimal Gurung)-বিনয় তামাংদের(Binay Tamang) সম্পর্ক যেন পাহাড়ের আবহাওয়ার মতো!

এই মেঘ তো এই রোদ! কখনও কুয়াশা। পরমুহূর্তেই ঝলমলে আকাশে ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘা। রবিবার ছুটির দিন দুপুরে বিনয় তামাং(Binay Tamang)-অনীত থাপাদের(Anit Thapa) পাহাড়ের মানুষ নেতা বলে মানেন না বলে কটাক্ষের পরে সন্ধ্যাতেই সুর বদল বিমল গুরুংয়ের(Bimal Gurung)। গুরুং জানিয়ে দিলেন, পাহাড়ের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য ও বিজেপিকে হারাতে বিনয়-অনীত সহ সব দলকেই মিলেমিশে চলতে হবে। তিনি এটাও ঘোষণা করে দিলেন, আগামী দিনে বিনয়-অনীত তাঁর কাছে আসবেই এবং তাঁদের নিয়ে চলতে কোনও অসুবিধে নেই তাঁর।

বিমল গুরুংয়ের এই আহ্বানের কথা চাউর হতেই পাহাড়, তরাই-ডুয়ার্সের রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়েছে। কারণ, এদিনই বিকেলে কার্শিয়াঙের সভায় বিনয় তামাং-অনীত থাপাদের সমালোচনা করেন তিনি। পরে সন্ধ্যায় কালিম্পঙের মংপুতে ওই দুই প্রাক্তন সতীর্থকে একযোগে পাহাড়ের উন্নযন ও কর্মসংস্থানে সামিল হওয়ার ডাক দেন বিমল গুরুং।

বিমল গুরুং মংপুতে তাঁকে স্বাগত জানানোর সভায় বলেছেন, এখন একে অন্যের সমালোচনার সময় নয়। পাহাড়ের জন্য গোর্খা জাতির জন্য, তরাই-ডুয়ার্সের উন্নতি ও কর্মসংস্থানের জন্য সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। তিনি এটাও জানিয়ে দেন, বিনয়-অনীত তাঁর একদা ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং আগামীতে ওই দুজনকে তাঁর কাছে আসতেই হবে। তাঁরা এলে যে তাঁদের নিয়েই পাহাড়ের সার্বিক উন্নয়নে আরও জোর দেবেন সেটাও জানিয়ে দেন বিমল গুরুং।

বস্তুত, বিজেপি বিরোধিতা সহ একাধিক কারণই যে বিমল গুরুং ও বিনয় তামাংদের একযোগে পথ চলতে বাধ্য করতে পারে তার আগাম আঁচ অনেকেই দিয়েছেন। পাহাড়ের রাজনীতি সম্পর্কে যাঁরা ততটা ওয়াকিবহাল নন, তাঁরাই গোড়া থেকে বিমল-বিনয়ের অনুগামীদের মধ্যে মারপিটের আশঙ্কায় রাতের ঘুম ভুলে গিয়েছিলেন। ক্রমশ, দুই গোষ্ঠী যে কাছাকাছি আসবে তা বোঝাই যায়।

এদিন বিমল গুরুং(Bimal Gurung) বিকেলের সভায় একটা সময়ে বিনয় তামাং-অনীত থাপাদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে দেন, তোমরা যদি ভাব আমি বিজেপি(BJP) থেকে সরে তৃণমূলে(TMC) এসেছি বলে তোমরা বিজেপিতে যাবে তা হলে যেতেই পারো। কিন্তু, মনে রেখো, আমি বিজেপিকে গত ১২ বছর ধরে সার্ভিস দিয়ে প্রতারিত হয়েছি। গোটা পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সের সঙ্গে বিজেপি প্রতারণা করেছে বলেই সেটা মাথায় রাখতে হবে সকলকেই।

ঘটনা হল, বিনয় তামাং-অনীত থাপারাও তৃণমূলের হাত ধরেই আগামী বিধানসভা ভোটে লড়তে চান। অতীতে দার্জিলিং কেন্দ্রে উপনির্বাচনে বিনয় তামাং বিজেপি প্রার্থীর কাছে হেরে গিয়েছেন। সে যাত্রায় দিল্লিতে গা ঢাকা দিয়ে থেকেও বিনয়কে হারিয়ে দিয়েছিলেন বিমল। এখন সেই বিমল যখন বিনয়-অনীতদের ডাকছেন এবং তাতে যদি সাড়া পান তা হলে পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সের বিজেপি বিরোধিতা আরও জমাট হয়ে যাবে। এই বিষয়ে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই সংশয় নেই।

বিনয়-অনীতরা আগামী দিনে বিমলের ডাকের প্রত্য়ুত্তরে কী বলেন সেটাই দেখার বিষয়।

আরও পড়ুন- পিএমসি তদন্তে এবার শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতের স্ত্রীকে তলব ইডির

Previous articleরবিবার উদ্বোধন হল কোচবিহার বইমেলার
Next articleমেঘ কাটছে ? সোমবার দিল্লিতে একমঞ্চে শাহ-সৌরভ, জল্পনা তুঙ্গে