লক্ষ্য মতুয়া ভোট, আজ রানাঘাটে মমতার সভা ঘিরে উন্মাদনা তুঙ্গে

উত্তর চব্বিশ পরগনার (North 24 Parbana) বনগাঁর (Bonga) পর এবার নদিয়ার (Nadia) রানাঘাট (Ranaghat), একুশের নির্বাচনের(Assembly Election) আগে মতুয়া (Matuya) প্রভাবিত এলাকায় ফের জনসভা করবেন তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী (CM) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banarjee)। আজ, সোমবার মতুয়া অধ্যুষিত এলাকা বলে পরিচিত রানাঘাটের হবিবপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সভা ঘিরে তৈরি হয়েছে তুমুল উৎসাহ-উন্মাদনা। মাসখানেক আগে যে ছবি দেখা গিয়েছিল বনগাঁর গোপালনগরে।

একটা সময়ে মতুয়া ভোটের একটা বড় অংশ ছিল তৃণমূলের অন্যতম ভোট ব্যাংক। কিন্তু ছবিটা ঘুরতে শুরু করে ২০১৯
লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকে। মতুয়া সম্প্রদায়কে নিজেদের দিকে টানতে সক্রিয় হয় বিজেপি। ঠাকুরবাড়িতে ভাঙনের পাশাপাশি ভোটের তাস হিসেবে দেওয়া হয়েছিল নাগরিকত্ব প্রদানের প্রতিশ্রুতিও। ফলস্বরূপ, লোকসভা ভোটে মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ, রানাঘাট আসনগুলি যায় বিজেপির ঝুলিতে।

এরপর অবশ্য গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। বিজেপির নাগরিকত্ব প্রতিশ্রুতি আজও সেই তিমিরে। নাগরিকত্বের দোহাই দিয়ে বিজেপি ভোটের রাজনীতি করেছিল, সেই অভিযোগও প্রকট হয়েছে। দলে থাকলেও “বেসুরো” লেগেছে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা মতুয়া ঠাকুরবাড়ির প্রতিনিধি শান্তনু ঠাকুরকে। এবার বিধানসভা ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরের সেই “মিথ্যাচার”-ই হয়ে উঠেছে মমতার রাজনৈতিক হাতিয়ার।

এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে আজ, সোমবার রানাঘাটে মতুয়াদের মধ্যে তৃণমূলনেত্রীর সভা ঘিরে যথেষ্ট আগ্রহ তৈরি হয়েছে। জানা গিয়েছে, ঘনিষ্ঠ মহলে তৃণমূলনেত্রীও বলেছেন, বিজেপির তরফে মতুয়াদের নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি লোকসভা ভোটেই শেষ হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বও জানিয়েছেন, মতুয়া সম্প্রদায়ের জন্য আদতে উন্নয়ন করেছেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। মতুয়া উন্নয়ন বোর্ড, হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয়, হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে সরকারি ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি রাজ্যের পাঠ্যপুস্তকে হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবনী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উদ্বাস্তু কলোনিগুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছে রাজ্য সরকার।

আর এখানেই মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত ডিসেম্বর মাসে বনগাঁর গোপালনগরের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একবাক্যে জানিয়ে দিয়েছেন, মতুয়ারা প্রত্যেকেই এদেশের নাগরিক। কোনও কাগজপত্রের প্রয়োজন নেই। যাঁরা আগে থেকেই নাগরিক, তাঁদের আবার নতুন করে নাগরিক হতে হবে কেন? সেইসঙ্গে তিনি এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, রাজ্যে এনআরসি-এনপিআর হবে না। বাংলাকে কোনও অবস্থায় গুজরাত বানাতে দেবেন না।

এবার বিধানসভা ভোটের আগে মতুয়া প্রভাবিত এলাকায় রাজনৈতিক জমি শক্ত করাই মূল লক্ষ্য তৃণমূলের। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা আসনের মধ্যে মাত্র একটিতে এগিয়ে রয়েছে রাজ্যের শাসকদল। তাই আজ সবার নজর থাকবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার দিকে। কী বার্তা দেন তৃণমূল নেত্রী, সেদিকেই এখন চোখ সকলের।

 

Previous articleফের ‘সমস্যা’ না হলে আজ বিজেপির পতাকা নিয়ে পথে নামতে পারেন শোভন
Next articleপৌষেই গরমে নাজেহাল রাজ্যবাসী, আর কি শীত আসবে?