নির্ধারিত সময়ের আগেই রাজ্যে বিধানসভা (Assemble Election) ভোটের বাদ্যি বাজিয়ে দিতে পারে নির্বাচন কমিশন। ভোটের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে দ্বিতীয় দফায় রাজ্য সফরে এসে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। এবার ফুল বেঞ্চ নিয়ে বঙ্গ সফরে আসতে চলেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। সেদিক বিবেচনা করে নিজেদের অস্ত্রে শান দিতে শুরু করেছে শাসক-বিরোধী।

এবারের বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে অনেক আগে থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে গেরুয়া শিবির। নিয়মিত দিল্লির শীর্শনেতাদের পালা করে আনাগোনা লেগেই চলেছে এ রাজ্যে। এই পরিস্থিতিতে এবার দিল্লিতে ডাক পড়ল বঙ্গ বিজেপি নেতাদের। জানা গিয়েছে, দিল্লিতে আজ রাজ্যের পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায় দিলীপ ঘোষের (Dilip ghosh) সঙ্গে বৈঠকে বসবেন অমিত শাহ কিংবা জেপি নাড্ডা। এই বৈঠকে একুশের নির্বাচনে দলের রণকৌশল ও সাংগঠনিক বিষয়ে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই দিল্লি পৌঁছেছেন মুকুল (Mukul Roy)। শুক্রবার সকালে রওনা দিচ্ছেন দিলীপ ঘোষ ও অমিতাভ চক্রবর্তী। মঙ্গলবার দিল্লি থেকে ফেরেন দিলীপ ঘোষ। ফের আবার কেন এই জরুরি তলব, তা নিয়ে দলের অন্দরে ইতিমধ্যেই নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একটা অংশ মনে করছে, তৃণমূল থেকে যাওয়া তৎকাল ও নব্য বিজেপি নেতাদের দলে ভিড়িয়ে সংগঠন মজবুত করতে গিয়ে নিজেরাই বিড়ম্বনায় পড়ছে বিজেপি। কারণ, তৃণমূলের পক্ষ থেকে তৎকাল ও নব্য বিজেপিদের কার্যত তুলোধনা করা হচ্ছে। সারদা-নারদা সহ একাধিক দুর্নীতিতে অভিযুক্তরাই এখন রাজ্য বিজেপির মুখ। ফলে একটা সময় দুর্নীতি নিয়ে শাসক দলের যে নেতাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করতেন দিলীপ ঘোষরা, এখন সেটাই বুমেরাং হচ্ছে। জনমানসে তার প্রভাবও পড়ছে। ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে দলের। অন্যদিকে, আদি বিজেপি নেতারা পিছনের সারিতে চলে গিয়েছেন। অনেকে মুখ ফিরিয়ে বসে পড়েছেন। যা অস্বস্তি বাড়াচ্ছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে।

এমনটাও শোনা যাচ্ছে, তৃণমূল থেকে যাওয়া নেতারাই নাকি প্রার্থী নির্ধারণে বড় ভূমিকা নিতে পারেন। নিজেদের ঘনিষ্ঠদের টিকিটের জন্য তাঁরা চাপ বাড়াতে পারেন। সেক্ষেত্রে বঞ্চিত হতে পারে আদি বিজেপির অনেক যোগ্য মুখ। ফলে টিকিট বন্টনের সময় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ব্যাপকভাবে মাথাচাড়া দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে দিল্লির হাইকমান্ড। এবং সেই কারণেই তড়িঘড়ি দিলীপ ঘোষদের তলব করা হলো বলে মনে করা হচ্ছে।

যদিও দিলীপ জানিয়েছেন, এটা রুটিন বৈঠক। এমন সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনার মাঝে মধ্যেই হয়ে থাকে। এটা নতুন কিছু নয়।
