অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী অপহরণ, তদন্তে গড়িমসির অভিযোগে এসপির দ্বারস্থ পরিবার

মিড ডে মিল(mid day meal) ও সাবান নিতে স্কুল যাওয়ার পথে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার(Malda) চাঁচলে। ওই ছাত্রীর বাড়িতে ফোনে করে তাকে বিক্রি করে দেওয়ার হুমকি দেওযা হয়েছে। অভিযোগ জানানোর পরেও পুলিশ তদন্ত করছে না এই অভিয়োগে মালদা জেলার পুলিশ সুপারের(SP) দ্বারস্থ হয়েছে পরিবার।

চাঁচলের মল্লিক পাড়ার বাসিন্দা মিন সাহানা ইয়াসমিন রানী দ্রাক্ষায়িনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। গত ৬ থেকে ১০ তারিখ ছিল স্কুলে মিড ডে মিলের চাল ডাল আলু এবং সাবান দেওয়ার দিন। যদিও করোনা আবহে এইসব সংগ্রহ করতে অভিভাবকদেরই স্কুলে যাওয়ার নিয়ম। তবুও অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ইয়াসমিন নিজেই স্কুলে যায়। গত সাত তারিখ স্কুলের উদ্দেশ্যে বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ ঘর থেকে বেরোয় ইয়াসমিন। কিন্তু সে আর ঘরে ফেরেনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে সন্ধ্যা বেলায় ইয়াসমিনের দিদির মোবাইলে একটি হুমকি ফোন আসে। আসিক নামের এক যুবক ফোনে জানায় সে ইয়াসমিনকে অপহরণ করেছে। তাঁর কথা না মানলে ইয়াসমিনকে বিক্রি করে দেবে। সে জানায় চাঁচলে তাঁর শ্বশুর বাড়ি, যেখানে তাঁর শিশু পুত্র রয়েছে। শ্বশুর বাড়ির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো নেই। তাঁর সেই শিশু পুত্রকে এনে দিলে তবেই ইয়াসমিনকে সে ফেরৎ দেবে।

ঘটনায় প্রায় মাথায় বাজ ভেঙে পড়ে ইয়াসমিনের পরিবারের। তার মা মিনা খাতুন চাঁচল থানায় বিস্তারিত জানিয়ে অপহরণের অভিযোগ করেন। অভিযোগ, চাঁচল থানার পুলিশ বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিয়োগ।

জানা যায়, আশিকের বাড়ি মূলত উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে। বাংলাদেশেও তাঁর যাতায়াত আছে। বছর কয়েক আগে চাঁচলের এক পরিবারে সে বিয়ে করে চাঁচলেই শ্বশুর বাড়িতে থাকতে শুরু করে। একটি পুত্র সন্তানও হয়। কিন্তু সম্প্রতি শ্বশুর বাড়ির সঙ্গে আশিকের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। সম্পর্ক এতটাই খারাপ হয় যে তাঁরা আশিককে ঘর ছাড়া করেন। কিন্তু নিজেদের মেয়ে ও শিশু পুত্রকে ঘরেই রেখে দেন। চাঁচল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথে আশিক দেখতে পায় ইয়াসমিন স্কুলে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় এবং পূর্ব পরিচিতির সুবাদে আশিক ইয়াসমিনকে ভুলিয়ে নিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ। এর পর কয়েক বার আশিক ফোনে ছেলেকে ফেরানোর বিনিময়ে ইয়াসমিনকে ফিরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পুলিশ নিজেও তাঁর মোবাইল ট্রেস করে। কিন্তু তাঁকে গ্রেফতার বা ইয়াসমিনকে উদ্ধার করার বিশেষ উদ্যোগ চাঁচল থানা দেখায়নি বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন:কলকাতাকে অন্যতম রাজধানী করুন, নেতাজির প্ল্যানিং কমিশন ফিরিয়ে দিন! মোদিকে বার্তা মমতার

এর পর ১৫ দিন হয়ে গেলেও মেয়ের খোঁজ না মেলায় উদ্বিগ্ন ইয়াসমিনের মা বাবা ছুটে যান পুলিশ সুপারের দফতরে নতুন করে অভিযোগ জানাতে। তাঁদের আশঙ্কা, আশিক যেভাবে হুমকি দিয়েছে তাতে ইয়াসমিনকে নিয়ে সে বাংলাদেশে পালিয়েছে। বাংলাদেশে যাতায়াত আশিকের আগে থেকেই ছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকেই জানেন। তবে এই বিষয়ে পুলিশ এখনো মুখ খোলেনি। পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বিষয়টি নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু করিয়েছেন বলেই জানা গিয়েছে।

Advt

Previous articleলাদাখ ইস্যুতে ফির সংঘাতে ভারত চিন, কড়া বিবৃতি রাজনাথের
Next articleইনভেস্টর কম্পানি শ্রী সিমেন্টের পক্ষ থেকে আসেনি কোন চিঠি, জানালেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের এক কর্তা