কলকাতাকে অন্যতম রাজধানী করুন, নেতাজির প্ল্যানিং কমিশন ফিরিয়ে দিন! মোদিকে বার্তা মমতার

রাজ্যে হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচন (Assembly Election) আসন্ন। তার আগে নেতাজি (Netaji) ও বাঙালি আবেগ পেতে মরিয়া রাজ্যের যুযুধান দুই রাজনৈতিক দল তৃণমূল (TMC) ও বিজেপি (BJP)। তাই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর (Subash Chandra Bose) ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী (125th Birth Anniversary) উপলক্ষে কেউ কাউকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে রাজি নন। প্রধানমন্ত্রী (PM) নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) যেমন শনিবার দুপুর থেকে নেতাজি জয়ন্তী উপলক্ষে একাধিক কর্মসূচি নিয়ে শহরে এসেছেন, ঠিক একই ভাবে ২৩ জানুয়ারি ঠাসা কর্মসূচি নিয়ে সকাল থেকে পথে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী (CM) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banarjee)। দু’জনেরই সরকারি কর্মসূচি হলেও নজর নেতাজি ও বাঙালি আবেগ।

আজ নেতাজির ১২৫ তম জন্মজয়ন্তীতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতার নিশানায় ছিল কেন্দ্র সরকার। এদিন নেতাজি ভবনে গিয়ে দেশনায়ককে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন হোক কিংবা শ্যামবাজার থেকে রেড রোড পর্যন্ত নেতাজি স্মরণে বর্ণাঢ্য পদযাত্রা, নিজের বক্তব্যে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন মমতা। বাংলা তথা কলকাতা ও নেতাজির প্রতি বঞ্চনা নিয়ে একাধিক সওয়াল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। নাম না করে বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। এবং সেই মাহেন্দ্রক্ষণে, যখন নেতাজি স্মরণে কলকাতায় প্রধানমন্ত্রী।

শ্যামবাজার ও রেড রোডে বক্তব্য রাখার সময়ে কলকাতাকে দেশের অন্যতম রাজধানী বানানোর দাবিতে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “দেশের চার প্রান্তে চার মহানগরীকে পৃথক পৃথক রাজধানী ঘোষণা করা হোক। দিল্লিতে সবাই বহিরাগত, তাহলে দিল্লি থেকেই কেন সমস্ত কাজ হবে? সংসদ বসুক দেশের চার প্রান্তেই। কলকাতাকেও (Kolkata) অন্যতম রাজধানী (Capital) করা হোক। দৃষ্টিভঙ্গী বদল করতে হবে। ওয়ান নেশন বলে ওয়ান নেতা চলবে না। ইতিহাস গুলিয়ে দিলে হবে না।”

এখানেই থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, “প্ল্যানিং কমিশন (Planing Commission) তুলে দেওয়া হল। তার পরিবর্তে নীতি আয়োগ তৈরি করা হয়েছে। এই প্ল্যানিং কমিশনের পরিকল্পনা করেছিলেন নেতাজি। প্ল্যানিং কমিশন রেখেই নীতি আয়োগ তৈরি করা যেতে পারতো। আমাদের দাবি নেতাজির তৈরি প্ল্যানিং কমিশন ফিরিয়ে দিতে হবে। আসলে প্ল্যানিং কমিশনের বিলুপ্ত করে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত করা হয়েছে।”

এদিন ফের নেতাজির জন্মদিনে জাতীয় ছুটি ঘোষণার দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নেতাজি আমাদের আবেগে। সেই আবেগকে ভুলিয়ে দেওয়া মেনে নেব না। এই দিনটিকে এখনও ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেনি কেন্দ্র। এনিয়ে আমাদের ক্ষোভ রয়েছে। আজও আমি বলছি, এই দিনটিকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। আমরা নেতাজির জন্মদিন জানি, কিন্তু তাঁর মৃত্যু কীভাবে হয় তা এখনও জানি না। তা খুঁজে বের করতে হবে। সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান রহস্য প্রকাশ্যে আনতে হবে। নেতাজির লড়াইয়কে ভয় পেয়েছিল ইংরেজরা। তাই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্বাধীনতার আন্দোলন শুরু হয়েছিল বাংলায়, সামাজিক সংস্কার শুরু হয়েছিল এই বাংলাতে। বাংলা কোনও অবহেলা সইবে না। ইতিহাস ভুলিয়ে দিলে চলবে না। ইতিহাস বুঝতে হবে। নেতাজির তরুণের স্বপ্ন সবার পড়া প্রয়োজন।”

“আজাদ হিন্দ ফৌজ ছিল বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের প্রতীক।
আমরা গর্ব বোধ করি তা নেতাজির হাত দিয়েই গড়ে উঠেছিল। এই বাহিনীতে সব ধর্মের মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা আজাদ হিন্দ মনুমেন্ট তৈরি করব। কোটি কোটি টাকা খরচ করে সংসদ ভবন তৈরি হচ্ছে। এখনই এর প্রয়োজন ছিল না। একবার তো আপনারা বললেন না, একটা মনুমেন্ট নেতাজির নামে হোক। অথচ, এই শহরে নেতাজির নামাঙ্কিত ডক তুলে দিয়ে অন্য নামে করা হলো।”

আরও পড়ুন:একাই নেতাজি ভবন ঘুরে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী, বাইরে রইলেন বিজেপি নেতারা

Advt

Previous articleস্বাদে অতুলনীয়, নেতাজির জন্মবার্ষিকীতে তেলেভাজা বিলি করে উত্তর কলকাতার এই দোকান
Next articleঅধিকারের লড়াই: নাসিক থেকে মুম্বই পর্যন্ত বিশাল মিছিল কৃষকদের