অর্জুনের মন্তব্যেই স্পষ্ট, তৃণমূলের পথে সুনীল-বিশ্বজিৎ

রাজ্য রাজনীতিতে এখন আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে
তৃণমূলের (TMC) দুই দলছুট বিধায়ক (MLA) সুনীল সিং (Sunil Singh) ও বিশ্বজিৎ দাস (Biswajit Das)। যে কোনও দিন, যে কোনও মুহূর্তে গেরুয়া শিবির ছেড়ে এই দুই বিধায়কের “ঘর ওয়াপসি” হতে পারে বলেই জোরালো দাবি রাজনৈতিক মহলের। গত সোমবার বিধানসভা (Assembly) অধিবেশনের শেষদিনে মুখ্যমন্ত্রীর (CM) সঙ্গে সুনীল ও বিশ্বজিতের সাক্ষাতের পর থেকেই সেই জল্পনা তৈরি হয়েছে। এবং সেই জল্পনায় ইন্ধন জুগিয়েছেন খোদ বিজেপি (BJP) সাংসদ (MP) অর্জুন সিং (Arjun Singh)। ঘটনাচক্রে নোয়াপাড়ায় বিধায়ক সুনীল সিং তাঁর আত্মীয়। সুনীল আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে “দিদি” সম্মোধন করে তৃণমূল নেত্রীর প্রতি আনুগত্য দেখিয়েছেন। এবং নোয়াপাড়া উপনির্বাচনে তাকে টিকিট দেওয়া থেকে শুরু করে জিতিয়ে আনার পিছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান কে স্বীকার করে নিয়েছেন।

অন্যদিকে রাজনৈতিক মহলের খবর, বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয় বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের। অভিযোগ, সাংসদের থেকে কোনও সহযোগিতার পান না বিধায়ক বিশ্বজিৎ। আবার কচুয়া ঠাকুরবাড়ির সদস্য হওয়ায় শান্তনুকে কোনও ভাবেই হাতছাড়া করতে চায় না বিজেপি। তাই অতীতের সান্তনু বেশি হওয়ায় তার বাড়ি গিয়ে একাধিকবার কথা বলেছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়। ফলে ওই এলাকায় বিশ্বজিতের থেকে শান্তনুর গুরুত্ব বিজেপিতে অনেক বেশি। সেটা বুঝেছেন বিশ্বজিৎও। যদিও নিজে মুখে সুনীল সিং কিংবা বিশ্বজিৎ দাস এখনও পর্যন্ত তৃণমূলে যোগদানের বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমকে কী বলেছেন অর্জুন সিং?

ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদের পরোক্ষে স্বীকার করে নিয়েছেন, তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন সুনীল সিং। এমনকি, অর্জুন মনে করেন অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ভোটের ঘোষণা হবে। এখন এলাকার উন্নয়ন নিয়ে আবার কিসের কথা? তাঁর ছেলে পবন সিংও তো পাশের এলাকার বিধায়ক। তাঁর ছেলে তো মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেননি। এখানেই শেষ নয়, সুনীল সিংকে নিজের আত্মীয় পরিচয় দিতেও কার্যত অস্বীকার করেন অর্জুন সিং।

নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিংয়ের তৃণমূল-যোগের ইঙ্গিত পাওয়ার পর অর্জুন সিং বলেছেন, “ওখানে আমার ছেলেও আছে। ও কী গিয়েছিল? ছেলেতো বিধায়ক। ও তো যায়নি।” রাজনৈতিক মহলে চর্চা রয়েছে নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিং সাংসদ অর্জুন সিংয়ের আত্মীয়। স্বভাবতই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সুনীল সিংয়ের এদিনের সাক্ষাৎ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। অর্জুন বলেন, “রিলেটিভ কে কার হয়। ওসব ফালতু কথা। এখন বলব না। ও আগে তৃণমূলে জয়েন করুক তারপর বলব।”

অর্জুন আরও বলেন, “কাদের নিয়ে আলোচনা হচ্ছে দেখুন। এরা সেই অর্থে কোনও জননেতা নয়। এদের সেই বেস নেই। কিন্তু তৃণমূল থেকে জননেতারা বিজেপিতে আসছে। আরও আসবে। তৃণমূল যাদেরকেই নিক, ব্যারাকপুর আর বনগাঁয় একটাও আসন জিততে পারবে না।” আর অর্জুন সিংয়ের এহেন মন্তব্যে নোয়াপাড়ায় বিধায়ক সুনীল সিং ও বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের তৃণমূল যোগের ইঙ্গিত অনেকটা স্পষ্ট বলে মনে করেন রাজনৈতিক মহল।

এদিকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দাবি করেছেন, মে মাসের শুরুতে কমপক্ষে সাতজন বিজেপি সাংসদ এবং বহু বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেবেন।

 

Previous articleব্রেকফাস্ট স্পোর্টস
Next articleজোকায় একইসঙ্গে পরিবারের ৩ সদস্যের অস্বাভাবিক মৃত্যু! এলাকায় চাঞ্চল্য