কোচবিহারের জনসভায় তৃণমূলকে তোপ দেগে ‘পরিবর্তন যাত্রা’র সূচনার পর বিকেলে ঠাকুরনগরের(Thakurnagar) জনসভায় এসে একরাশ প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অমিত শাহ(Amit Shah)। একইসঙ্গে মতুয়াদের নাগরিকত্ব এবং সোনার বাংলার স্বপ্ন ফেরি করে গেলেন তিনি। পাশাপাশি জানিয়ে গেলেন, ‘বিজেপি(BJP) ক্ষমতায় এলে ঠাকুরনগর রেলস্টেশনের নাম পরিবর্তন করে রাখা হবে শ্রীধাম রেলস্টেশন’। তার এহেন প্রতিশ্রুতিতে রীতিমতো চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে মতুয়াদের মধ্যে।

বৃহস্পতিবার ঠাকুরনগরের জনসভা থেকে একের পর এক প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি কড়া ভাষায় মমতাকেও আক্রমণ শানান অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘আমি আগেরবার বাংলা সফরে ঠাকুরনগরে না আসায় মমতাদিদি খুব খুশি হয়েছিলেন, আরে এপ্রিল তো অনেক দেরি। আমি এখানে বারবার আসব।’ পাশাপাশি এদিন এর জনসভা থেকে রাজ্যে নির্বাচনী হিংসা প্রসঙ্গে সরব হয়ে তিনি বলেন, ‘বামেদের আমল থেকে বাংলায় হিংসা শুরু হয়েছে। মমতা হিংসা রুখতে পারেননি, বিজেপি রুখবে। মতুয়াদের(Matuya) যথাযোগ্য সম্মান দেবে বিজেপি।’

পাশাপাশি মতুয়াদের মন জয়ে তাদের নাগরিকত্বের বিষয়টি নিয়ে সরব হয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘৭০ বছর ধরে মতুয়া, নমঃশূদ্ররা নাগরিকত্ব পাননি। ২০১৮ সালে বলেছিলাম মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেবে বিজেপি। ২০১৯ সালে মতুয়া সমাজ বিজেপির ঝুলি ভরে দিয়েছিল। ২০২০ সালে সিএএ নিয়ে এসেছি। করোনার জন্য সিএএ পিছিয়ে গেছে। তবে আমরা যা বলি তা করি।’ এরপরই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে আশ্বস্ত করে শাহ বলেন, ‘তৃণমূল, বাম, কংগ্রেস সংখ্যালঘুদের ভয় দেখাচ্ছে। বলছে নাগরিকত্ব চলে যাবে। সিএএ লাগু করবে বিজেপি, কারও নাগরিকত্ব যাবে না। সিএএ হলে মুসলিমদের নাগরিকত্ব যাবে না।’

আরও পড়ুন:এক মঞ্চে রাহুল-কানহাইয়া! চোখ ফেব্রুয়ারির ব্রিগেডে

সবশেষে তিনি দাবি করেন, ‘বিজেপি ক্ষমতায় এলে ঠাকুরনগর রেলস্টেশনের নাম শ্রীধাম রেলস্টেশন হবে।’ আর তাঁর এই মন্তব্য থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। কারণ, মতুয়াদের পুজ্য ঠাকুর হরিচাঁদ, ঠাকুর গুরুচাঁদের নামেই ওই এলাকা এবং স্টেশনের নাম ঠাকুরনগর। ক্ষমতায় এলে সেই নাম পরিবর্তনের যে ইঙ্গিত অমিত শাহ দিয়েছেন তাতে মোটেও খুশি নন বেশিরভাগ মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, অনেকটা গোবলয়ের ধাঁচে যে ‘শ্রীধাম’ নাম রাখতে চাইছেন অমিত শাহ তাতে মতুয়াদের মন জয়ের পরিবর্তে তাদের ভেতর অসন্তোষ বাড়িয়ে দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় নেতা।
