শাহ নিশ্চিত কোন্দলে মদত রাজ্য নেতাদের, প্রার্থী হতে চাপ দিলীপ- মুকুলকে

প্রার্থীপদ নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ পরিস্থিতি প্রায় নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ‘বিশেষ উদ্দেশ্যে’ দিল্লিতে তলব করেছে দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়দের৷ বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও রাজধানীতে ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর৷
বিজেপি যখন বাংলা জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপিয়েছে, তখন দলের কার্যালয়ে ধর্না, স্লোগানে বিড়ম্বনায় পড়েছেন খোদ অমিত শাহ৷

নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সোমবারই জানতে পেরেছে, প্রার্থী নিয়ে প্রতিটি বিক্ষোভের পিছনে কোনও না কোনও বড় মাপের রাজ্যনেতার মদত রয়েছে৷ দলের মধ্যেই ‘বিরুদ্ধ’ নেতার পছন্দের প্রার্থীকে টাইট দিতে এবং সরাতে, অন্য নেতা উসকে দিচ্ছে কর্মী-সমর্থকদের ৷ এই অভিযোগ কানে আসতেই ক্ষিপ্ত হয়ে যান অমিত শাহ৷ সোমবার রাতেই অমিত শাহ এবং জেপি নাড্ডা কৌশলি এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ তার পরেই মঙ্গলবার রাতে দিল্লিতে তলব করা হয়েছে রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের৷ কয়েকটি আসনে দলের প্রার্থী বদলেরও সম্ভাবনা প্রবল৷

দ্বিতীয় দফায় পদ্ম-প্রার্থীর তালিকা প্রকাশের পর মুহুর্ত থেকেই একাধিক কেন্দ্রে প্রার্থী বদলের দাবিতে বিজেপির অন্দরে ধুন্ধুমার চলছে৷বিক্ষোভের আওয়াজ ক্রমশ চড়া হচ্ছে। যে দল একুশের ভোটে ক্ষমতা দখল করার দাবি তুলেছে, সেই বিজেপি-ই এখন প্রতি কেন্দ্রে বিক্ষোভ এড়িয়ে প্রার্থী দিতে পারবে কি’না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে৷

ভোটের মুখে দলের অন্দরেই এ ধরনের গোষ্ঠী-কোন্দল মেটাতে সক্রিয় হতে কার্যত বাধ্য হয়েছেন খোদ অমিত শাহ৷ এক ‘মারাত্মক’ কৌশলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছেন শাহ৷ গেরুয়া-সূত্রের খবর, দলের প্রার্থী- কোন্দল ঠেকাতে বিধানসভা নির্বাচনে দিলীপ- মুকুল-সহ আরও জনাকয়েক রাজ্য নেতাকে প্রার্থী করা হতে চলেছে৷ শোনা যাচ্ছে, নদিয়া জেলার কোনও আসন থেকে দিলীপ ঘোষ এবং মুকুল রায়দের প্রার্থী করার কথা ভাবা হয়েছে। সোমবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজেই রাজ্য নেতাদের একথা জানিয়ে দিয়েছেন৷ অন্তত ৪ জন নেতাকে প্রার্থী হওয়ার জন্য তৈরি থাকতে বলেছেন শাহ৷ এই ৪ জনের বিরুদ্ধেই বিক্ষোভকারীদের উসকানি দেওয়ার অভিযোগ এজেন্সি মারফত শাহের কানে এসেছে৷

জানা গিয়েছে, দিলীপবাবু দলের নির্দেশ মেনে প্রার্থী হতে আগ্রহী বলে জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু মুকুল রায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, তিনি প্রার্থী হতে রাজি নন।

বিজেপি ইতিমধ্যেই ৪ সাংসদকে প্রার্থী করেছে। এই সিদ্ধান্তে দলের অন্দরেই বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ কড়া কটাক্ষ করেছে তৃণমূল-সহ রাজনৈতিক দলগুলি। বলা হচ্ছে, গেরুয়া শিবির প্রার্থী করার লোক পাচ্ছে না বলেই সাংসদদের টিকিট দিয়েছে বিজেপি। বিজেপি’র বক্তব্য, দলের সাংসদদের জনপ্রিয়তাকে সামনে এনেই বাজিমাত করতে চান মোদি- শাহ- নাড্ডা। পাশাপাশি, গোষ্ঠী কোন্দল চাপা দিতেও আরও কয়েকজন সাংসদ এবং দলের হেভিওয়েট কার্যকর্তাদের প্রার্থী করতে চাইছেন অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা ৷ মেদিনীপুরের সাংসদ তথা বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে প্রার্থী করা হতে পারে। তালিকায় নাম আছে দলের সর্বাভারতীয় সহ- সভাপতি মুকুল রায়েরও।

এখন দেখার, মঙ্গলবার দিল্লিতে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন শাহ-নাড্ডা৷ এটাও দেখার, দিলীপ ঘোষ-মুকুল রায় বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে বাধ্য হন কি’না !

Advt

Previous articleভেঙে দিল ২ হাজার বছরের রেকর্ড! খরা ক্রমশ তীব্রতর হচ্ছে ইউরোপে
Next articleসোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন নিয়ে প্রচারে নেমে পড়লেন পায়েল