Monday, December 8, 2025

মদনের সঙ্গে রঙ খেলা নিয়ে বিতর্ক থামাতে পায়েল-শ্রাবন্তীদের হয়ে ক্ষমাপ্রার্থী পার্নো

Date:

Share post:

ভোটবঙ্গে (Assembly Election) আপাত নিরীহ একটি দোল (Dol) উৎসব, এবং তাকে কেন্দ্র করে যত বিপিত্তি ও বিতর্ক (Controversy)। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী, তৃণমূল (TMC) নেতা মদন মিত্র (Madan Mitra) চিরকালই “হুজুগে” বলেই পরিচিত। একেবারে মাটিতে পা রেখে চলা একজন নেতা। যে কোনও উৎসব-অনুষ্ঠানে হইহুল্লোড়ে মদনবাবুর জুড়ি মেলা ভার। আর রংয়ের উৎসব হলে কথাই নেই, রঙিন এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আরও রঙিন হয়ে ওঠেন, আবার উৎসবে “রঙ” মানেন না। তাঁর কাছে সকলেই সমান।

তাহলে বিতর্ক বা বিপত্ত কেন?

ঘটনার গভীরে যাওয়া যাক। গত রবিবার গঙ্গাবক্ষে দোল উৎসবে তৃণমূল নেতা তথা কামারহাটি কেন্দ্রে শাসক দলের প্রার্থী মদন মিত্রের সঙ্গে রংয়ের উৎসবে মেতে উঠতে দেখা যায় এবার হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির (BJP) তিন তিনজন তারকা প্রার্থীকে। ছিলেন বেহালা পূর্বের পায়েল সরকার (Payel Sarkar), বেহালা পশ্চিমের প্রার্থী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় (Srabanti Chatterjee) এবং শ্যামপুর কেন্দ্রের গেরুয়া প্রার্থী অভিনেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তীকে (Tanusree Chakrabarty)।

শুধু দোল উৎসবে মেতে ওঠাই নয়, বিরোধী দলের দুঁদে নেতা মদন মিত্রের সঙ্গে নাচা-গানা করতেও দেখা যায় তাঁদের। যার মধ্যে আবার তৃণমূলের “হট সঙ্গ” “খেলা হবে…” তালেও কোমর দোলান বিজেপির তিন সেলিব্রিটি প্রার্থী পায়েল-শ্রাবন্তী-তনুশ্রী। সঙ্গে বেজেছে মদন মিত্রের নিজের লেখা ”মোদী-শাহ কুমড়োর ঘ্যাঁট খা”। মদন মিত্রের সঙ্গে দেদার রঙ মাখামাখির সঙ্গে সেলফি তুলতেও দেখা যায় পায়েল, তনুশ্রী, শ্রাবন্তীদের। যা নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়। এনিয়ে ফেসবুকে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দেন বিজেপি নেত্রী, অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র (Rupanjana Mitra)। নাম না করেই টুইটে খোঁচা মারতে ছাড়েননি বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায় (Tathagata Roy)।

মদন মিত্রের সঙ্গে দোল উৎসবে মেতে ওঠার পর তুমুল বিতর্ক শুরু হয় বিজেপি শিবিরের তিন সেলিব্রিটি প্রার্থীকে নিয়ে। এই ঘটনায় আজ, সোমবার ফেসবুক পোস্টে সাফাই দিয়েছেন, বেহালা পূ্র্বের বিজেপি প্রার্থী পায়েল সরকার। রবিবার ওই দোলের অনুষ্ঠানটি একটি সংবাদ চ্যানেলের তরফে আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই হাজির হয়েছিলেন তিনি-সহ শ্রাবন্তী, তনুশ্রী, তৃণমূলপন্থী অভিনেত্রী শ্রীতমা, তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য এবং মদন মিত্র।

সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় পায়েলের সাফাই, “নমস্কার আমি পায়েল সরকার। গতকাল দোল উৎসবের সময় একটা ছবি নিয়ে অনেকে আমার উপর হয়তো মনোক্ষুন্ন হয়েছেন। গত ৭০ বছর ধরে পশ্চিমবাংলাতে চলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি হয়েছেন আমার অসংখ্য বাংলার ভাইবোনেরা। এখানে বিরোধী দলকে তাদের মতপ্রকাশ করতে দেওয়া হয় না। বিজেপি করার অপরাধে খুন হয়েছেন ১৪০ এর উপর কার্যকর্তা। অপরাধ তারা বিজেপি করতো । ৭০ বছর ধরে চলা এই রাজনৈতিক হিংসার অবসানের জন্য বিজেপির সংগ্রাম চলছে। ১৪০ জন শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে বলছি, তোমাদের রক্ত আমরা বৃথা যেতে দেব না। Restoration of democracy অথাৎ গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার করাই হবে আমাদের প্রথম কাজ । ২ রা may বিজেপি র সরকার গঠনের পর বিরোধী-শাসক একসঙ্গে মিলেমিশে থাকবে এইরকম বাতাবরণ পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হবে এই আশা নিয়ে সবাইকে ধণ্যবাদ জ্ঞাপন করছি। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।”

কিন্তু এই বিতর্ক থামবার নয়। তাই এবার পায়েল, তনুশ্রী, শ্রাবন্তীদের হয়ে হয়ে ক্ষমা চাইলেন বিজেপির আরও এক তারকা প্রার্থী পার্নো মিত্র (Parno Mitra)। বরানগরের বিজেপি প্রার্থী পার্নো মিত্র বলেন, ”পায়েল, শ্রাবন্তী ও তনুশ্রী গতকাল মদন মিত্রের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে ছিলেন, সেটা তাঁদের ছোট্ট ভুল হয়েছে। তাঁদের হয়ে আমি হাতজোড় করে ক্ষমা (Apology)চাইছি। এজন্য হয়তো আমাদের কর্মীদের মনোবল ভেঙেছে। কিন্তু এটা সাময়িক ভুল।” তবে এই ঘটনায় চিড়ে যে সহজে ভিজবে না, তা বলাই বাহুল্য!

Advt

 

spot_img

Related articles

‘জয় হিন্দ’-এ আপত্তি, ‘বন্দেমাতরম’-এ বিতর্ক! সংসদে আলোচনায় কটাক্ষ মমতার

বিজেপির নেতারা বলছেন নেতাজি, গান্ধীজিকে পছন্দ করি না। আবার বিজেপির কেন্দ্রের সরকার সংসদে 'বন্দেমাতরম' (Vandemataram) ১৫০ বর্ষপূর্তিতে আলোচনার...

সংসদে ‘বঙ্কিমদা’! মোদির ঔদ্ধত্যের প্রতিবাদ সৌগতর, ক্ষমাও চাইলেন না প্রধানমন্ত্রী

বাঙালি বিদ্বেষী বিজেপির আরও এক চেহারা ফুটে উঠল সংসদে সোমবার। খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী সংসদে (Parliament) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্য়ায়কে (Bankim...

গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে কেন গেলেন না: কারণ স্পষ্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী

রবিবাসরীয় কলকাতায় ব্রিগেডে গীতাপাঠের আসর ভরালেন বিজেপির নেতারা। মাঠে উড়ল হনুমান, রামের পতাকা। আবার সেই আসরে যোগ না...

কেন্দ্রের পরিকল্পনার ব্যর্থতায় বিপর্যয়! ইন্ডিগো বিভ্রাটে ক্ষতিপূরণের দাবি মুখ্যমন্ত্রীর

কেন্দ্র জানত। কিন্তু তাও ব্যবস্থা নেয়নি। সাধারণ মানুষ এর জন্য ভুগছে। কেন্দ্রের সরকার মানুষের কথা ভাবে না। ফলে...