বেনজির নন্দীগ্রাম: দিনভর উত্তেজনা, অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ কমিশনে

দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের হাইভোল্টেজ কেন্দ্র ছিল নন্দীগ্রাম। এই কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari)। পাশাপাশি বামেদের তরফে এখানে প্রার্থী ছিলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়(Minakshi Mukherjee)। হাইভোল্টেজ এই কেন্দ্রের নিরাপত্তার দিকে এবার বাড়তি নজর দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। যদিও সকাল থেকেই বিক্ষিপ্ত নানান অশান্তির জেরে দিনভর সংবাদ শিরোনামে থাকলো একুশের বিধানসভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র নন্দীগ্রাম(Nandigram)।

নন্দীগ্রামের এক নম্বর ব্লকের নেতাজিনগরে সোনাচূড়ায় গতকাল রাত থেকে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। এরপর বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই নন্দীগ্রাম ১, ৬ ও ৭ নম্বর বুথ থেকে একের পর এক অভিযোগ আসতে শুরু করে নির্বাচন কমিশনের কাছে। অভিযোগ তোলা হয় একাধিক তৃণমূল কর্মীকে বুথে বসতে দিচ্ছে না বিজেপি। পাশাপাশি ভেকুটিয়ায় এক বিজেপি কর্মীর আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। এই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওই ব্যক্তিকে চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ তোলা হয় বিজেপির তরফে। নন্দীগ্রামের চিফ ইলেকশন এজেন্ট সেখ সুফিয়ান আবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, ‘বিজেপির বাইকবাহিনী, নির্বাচন কমিশন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসকে।’

এই পাশাপাশি নন্দীগ্রামের একাধিক কেন্দ্রে তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতে রিপোর্ট তলব করে নির্বাচন কমিশন। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, নন্দীগ্রামে একটি আসনও পাবেন না মমতা। প্রত্যয় সুরে জানান, একাধিক কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারেনি তৃণমূল। তবে নন্দীগ্রামে রীতিমতো উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুথ পরিদর্শনে বের হওয়ার পর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর গ্রামবাসীরা তার কাছে অভিযোগ করেন, ভোট লুঠ হচ্ছে। ছাপ্পা ভোট পড়ছে। মমতা কেন প্রার্থী হিসেবে বুথে থাকবেন তা নিয়েও তোলে। এরপর বয়ালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে রীতিমতো খন্ডযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয় তৃণমূল বিজেপির মধ্যে। নির্বাচন কমিশনকে ফোন করে গোটা ঘটনা জানান মমতা। ফোন করেন রাজ্যপালকেও। বহিরাগতদের দিয়ে অশান্তি করানো হচ্ছে বলে সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেন তিনি। বলেন, কাউকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি এখানে। ৮০% ছাপ্পা ভোট পড়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা ঐ বুথে আটকে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসককে ফোন করে মোটা ঘটনা রিপোর্ট তলব করেন উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন।

আরও পড়ুন:জয়নগরের পর উলুবেড়িয়াতেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মোদি

দীর্ঘক্ষন বুথে আটকে থাকার পর বিশাল পুলিশবাহিনী এনে মমতাকে নিয়ে যাওয়া হয় সেখান থেকে। যাওয়ার সময় সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হবে মমতা বলেন, ‘আমি এখন বিজয়ের চিহ্ন দেখাচ্ছি। আমি খুব দুঃখিত নির্বাচন কমিশন এবং অমিত শাহ। দয়া করে আপনার গুন্ডা, যারা সমাবেশে মহিলা সাংবাদিকদের হেনস্তা করেছেন তাদের নিয়ন্ত্রণ করুন। আমি পর্যবেক্ষক, সরকারি কর্মী ও রাজ্যপালের সঙ্গে আমি কী আলোচনা করেছি তা প্রকাশ করতে পারছি না। এটি গোপনীয়। আমি এত খারাপ নির্বাচন দেখিনি।’

Advt