বিজেপির “স্টার ক্যাম্পেনার” মিঠুনের ছায়াসঙ্গী নিখরচায় চিকিৎসা পেলেন মমতার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে

একেই হয়তো বলে “ধর্মের কল বাতাসে নড়ে”! সদ্য গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া সুপার স্টার অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) যখন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকারের সমালাচনা করছেন ঠিক সেই সময়ে তাঁর এক ঘনিষ্ঠ উপকার পেলেন মমতার সরকারি প্রকল্পে।

“দুয়ারে সরকার” (Duyare Sarkar) ব্যাপক হিট হওয়ার পর রাজ্যবাসীর জন্য “স্বাস্থ্যসাথী” (Swastha Sathi) কার্ড চালু করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও বিজেপি (BJP)-সহ বিরোধীরা স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পকে ভাঁওতা ব্যাখ্যা করতেই ব্যস্ত। সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই বেহাল ইত্যাদি বলে রাজ্যজুড়ে প্রচার চালাচ্ছেন বিজেপির ছোট-বড়-মেজো নেতারা। বলা হচ্ছে, এবার “আসল পরিবর্তন” দরকার। দরকার বিজেপি সরকার।

আরও পড়ুন-মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী, কমিশন ব্যবস্থা না নিলে রাস্তায় নামব: সৌগত

বিজেপির “স্টার ক্যাম্পেনার” মিঠুন চক্রবর্তীও বিভিন্ন জায়গায় দলের প্রচারে গিয়ে মমতা সরকারের তুলোধনা করছেন এবং বিজেপি সরকারের এলে মানুষের কল্যাণে কী কী করবে, তার ফিরিস্তি দিচ্ছেন। কিন্তু এবার মিঠুনের ছায়াসঙ্গীর (Close Person) চিকিৎসা হলো মমতার স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে। এবং একেবারে নিখরচায়। “মহাগুরু”র ছায়াসঙ্গী প্রদ্যুৎ হালদার সল্টলেকে একটি নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে নিখরচায় হৃদরোগের চিকিৎসা করালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি প্রকল্প স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে।

প্রসঙ্গত, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রদ্যুৎ হালদার গত ৩১ মার্চ সকালে সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর হৃৎপিণ্ডের বাঁ-দিকের ধমনীতে ব্লক ধরা পড়ে। দ্রুততার সঙ্গে অস্ত্রোপচার দরকার ছিল। সেইমতো বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ রঞ্জন শর্মা অ্যাঞ্জিওপ্ল্যাস্টি করে স্টেন্ট বসান। এই গোটা চিকিৎসার জন্য ৬৬ হাজার টাকা এবং স্টেন্টের দাম বাবদ ৩১,৬৮৯ টাকা—সব মিলিয়ে ৯৭,৬৮৯ টাকার পুরোটাই মিলেছে প্রদ্যুৎবাবুর দু’বছরের পুরনো স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে। কোনও খরচ তাঁকে বহন করতে হয়নি। ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্রদ্যুৎবাবু স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করান। ডাঃ শর্মা বলেন, উনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। স্টেন্ট বসিয়েছি। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অ্যাঞ্জিওপ্ল্যাস্টি হয়। ভালো আছেন এখন।

মিঠুনের ছায়াসঙ্গী প্রদ্যুৎ হালদার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে সরাসরি উপকৃত হয়েছেন, এই সংবাদ চাউর হয়ে যায়। ময়দানে নেমে পড়ে তৃণমূল। বিষয়টিকে তারা নির্বাচনী প্রচারে নিয়ে এসে স্বাস্থ্যসাথীর কার্যকারিতার প্রমাণ দেন। ভোটবঙ্গে যা খুব স্বাভাবিকভাবে বেকায়দায় ফেলেছে বিজেপিকে। এবার বিজেপির প্রচারে কিছুটা ব্যাকফুটে খেলতে হবে মিঠুনকেও।

তবে এই প্রথম নয়, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে অনেক গরিব সাধারণ মানুষের উপকৃত হওয়ার নজিরও রয়েছে। মমতার ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘স্বাস্থ্যসাথী’ বিজেপির ঘুম কেড়েছে। গোপীবল্লভপুরে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পরিবারের সদস্যরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়েছেন। ঝাড়গ্রামের দলীয় প্রার্থী ও প্রাক্তন জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর পরিবার কার্ড করিয়েই মমতার প্রশংসাও করেছেন। সেই নজিরও আছে।

Advt

Previous article৩ এপ্রিল, শনিবারের বাজার দর
Next articleমোদি-শাহ-শুভেন্দুর “এক্সিট পোল” ফলস? নন্দীগ্রাম বলছে জিতছে দিদি