Saturday, August 23, 2025

পর পর বিতর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারনে আগেই নির্বাচন কমিশন সর্বাঙ্গে যথেষ্টই কালি মেখেছে৷ কমিশন ইতিমধ্যেই এমন অসংখ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ধ্বংস করার পক্ষে যথেষ্ট৷

তবুও হয়তো মুখে কিছুটা অংশ ফাঁকা ছিলো৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নিজের মুখটাও কালিমালিপ্ত করলো দেশের নির্বাচন কমিশন৷ এ কথা বলা অন্যায় হবে না যে, কমিশন এ ধরনের মনোভাব প্রকাশ করে দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের পবিত্র কাঠামোর উপরই কার্যত আঘাত হেনেছে৷

আসলে আম্পায়ারকে শুধু পক্ষপাতহীন থাকলেই হয়না, নিজের দায়িত্ব পালনের পদ্ধতির মাধ্যমে স্পষ্ট করতে হয়, বোঝাতে হয় যে তিনি প্রকৃতপক্ষেই নিরপেক্ষ৷ কিন্তু এক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা প্রমাণের পরীক্ষায় ডাহা ফেল করেছে কমিশন, লজ্জাজনকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। কমিশনের এমন পথ বেছে নেওয়া কতখানি যুক্তিযুক্ত হয়েছে, তা নিয়ে দেশজুড়েই প্রশ্ন উঠেছে৷

আরও প্রশ্ন উঠেছে৷ এই ধরনের কাজ করার অধিকার ঠিক কোথা থেকে অর্জন করলো কমিশন ? সংবিধান থেকে তো নয়, সংবিধান কমিশনকে গনতন্ত্র হত্যা করার অধিকার দেয়নি৷ আসলে এই ক্ষমতা কমিশনের স্বোপার্জিত৷ নিজের সাংবিধানিক অধিকার বা এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে এবং ধারাবাহিকভাবে অতি-সক্রিয়তা প্রদর্শন করেই কমিশন তথাকথিত ‘ক্ষমতাধর’ হয়েছে৷ দেশের সংবিধানকে শাসন করার এক্তিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই৷

ভারতবর্ষের সংবিধানের কোথাও এ কথা বলা হয়নি যে কোনও রাজ্যের নির্বাচিত সরকার অথবা রাষ্ট্রপতিশাসিত রাজ্যের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করায়ত্ত করতে পারে নির্বাচন কমিশন৷ আদর্শ আচরণবিধি বা ‘মডেল কোড অফ কণ্ডাক্ট’ চালু হওয়ার পরেও নির্দিষ্টভাবে সেখানে উল্লেখ রয়েছে, কমিশনের এক্তিয়ার শুধুমাত্র জেলার নির্বাচন আধিকারিক, যিনি সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসক পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ৷ অথচ, কমিশন বারংবার প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজ্যের সম্পূর্ণ প্রশাসন কার্যত দখল করছে সংবিধান-প্রদত্ত ক্ষমতার অপব্যবহার করেই৷

এই অপব্যবহার রুখতে নতুন করে ভাবনার সময় এসেছে৷ নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ার নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলিকে এবং সংসদকে নতুন করে ভাবতে হবে, আলোচনা করতে হবে এবং মতপ্রকাশও করতে হবে৷ এখনই এই ভাবনা শুরু করা না গেলে সংবিধান এবং সংসদীয় কাঠামোর পবিত্রতা বজায় রাখা আর সম্ভব নাও হতে পারে ৷

আরও পড়ুন- সহজে ঘরে ঢুকে যাওয়ার লোক নই, আমি স্ট্রিট ফাইটার: মমতা

Related articles

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...
Exit mobile version