বয়স মাত্র ৯! রাজনীতির কূটকচালি বোঝে না। বছর কয়েক আগে মা-কে চিরতরে হারিয়েছে। স্ত্রী’র আকস্মিক মৃত্যুর পর বাবা মানসিকভাবে অসুস্থ। কার্যত “অনাথ” শিশুর মতো রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ায় সে। স্থানীয় কিছু সহৃদয় মানুষ ও প্রতিবেশীদের সাহায্যেই তার কোনওরকমে দিন কাটে।

এই মা-হারা অসহায় বালক এবার আক্রান্ত। অপরাধ, চায়ের দোকানের কাকু “জয় শ্রীরাম” (Jai Sriram)বলতে বলেছিল, এবং সে তা বলতে অস্বীকার্নকরে। উল্টে “জয় বাংলা” (Joy Bangla) বলে সে। এরপরই নদিয়ার (Nadia) শান্তিপুরের ফুলিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা ওই নাবালকের (Minor Boy) উপর চড়াও হয় “চা-কাকু”! যিনি এলাকায় বিজেপির (BJP)দাপুটে কর্মী বলে পরিচিত। নাম, মহাদেব প্রামানিক। জানা গিয়েছে, তাঁর স্ত্রী মিঠু প্রামানিক বিজেপির ২৯ নম্বর মহিলা মোর্চার সভানেত্রী। অভিযুক্ত মহাদেবের বেধড়ক মারে গুরুতর জখম অবস্থায় ওই বালককে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়। সেখান থেকে বর্তমানে জখম ওই বালক রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঠিক কী ঘটেছিল?

গতকালসোমবার মা-হারা ওই ৯ বছরের বালক অন্যদিনের মতোই দুপুরে ঘুরতে ঘুরতে অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীর চায়ের দোকানে গিয়েছিল। অভিযোগ, তখন ওই বিজেপি কর্মী তাকে “জয় শ্রীরাম” বলতে বলে বাধ্য করতে থাকে এবং বলে “জয় শ্রীরাম” বললেই চা পাবে, নতুবা নয়। তারপর তাকে মারধর শুরু করে মহাদেব। এই ঘটনায় শান্তিপুর থানার ফুলিয়ার ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিজেপি কর্মীর এমন অমানবিক আচরণে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয়রা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক বিজেপি কর্মী মহাদেব প্রামানিক। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার এসসি মোর্চা সাধারণ সম্পাদক অঙ্কন সরকার তাঁর প্রতিক্রিয়াতে জানান, ঘটনার পুরোটা তাঁর জানা নেই। তবে এই ঘটনাকে কোনওভাবেই সমর্থন করে না তাঁদের দল। যদিও অভিযুক্ত বিজেপির কেউ নয় বলে দাবি করেন অঙ্কনবাবু।