শীতলকুচি কাণ্ডে নয়া মোড়! জেলা শাসকের দফতরে “শুনানি” ভোট কর্মীদের

শীতলকুচি কাণ্ডে নয়া মোড়। ঘটনার শিকড়ে পৌঁছতে মঙ্গলবার কোচবিহার জেলা শাসকের দফতরে শুনানির জন্য তলব করা হয়েছিল ওইদিন নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট ভোট কর্মীদের। যাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রিজাইডিং অফিসার, যাঁর হাতে ভোটগ্রহণ চলাকালীন ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়ার থাকে। একই সঙ্গে ডাকা হয়েছিল ফার্ষ্ট পোলিং অফিসার, সেকেন্ড পোলিং অফিসার, থার্ড পোলিং অফিসার এবং ওই বুথে ভোটের কাজে থাকা আশা কর্মীকে।কোচবিহার জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক রীনা যোশীর ঘরে এদিন শুনানি হয়।

শীতলকুচি বিধানসভার ৫/১২৬ নম্বর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের গুলিতে ৪ জন যুবকের মৃত্যুর জন্য প্রিসাইডিং অফিসার মহঃ আবদুল রহমান, ফার্স্ট পোলিং অফিসার অভিজিৎ বর্মন,সেকেন্ড পোলিং অফিসার দীপেন্দ্রনাথ রায়,থার্ড পোলিং অফিসার দিলীপ মজুমদার এবং সংশ্লিষ্ট জোড়পাটকি এলাকার আশা কর্মী মিনতি রায় বর্মনকে ডেকে পাঠানো হয়। প্রত্যেকের কাছ থেকে পৃথকভাবে লিখিত আকারে সেদিনের ঘটনার বিবরণ জমা দিতে হয় অতিরিক্ত জেলা শাসক রিনা যোশীর কাছে।

উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল চতুর্থ দফা ভোটের দিন শীতলকুচিই ওই অভিশপ্ত বুথে বা বুথ চত্বরে ঠিক কী কী ঘটেছিল, কোন পরিস্থিতিতে গুলি চালাতে হয়েছিলো বাহিনীকে, সত্যি কি গুলি চালানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল? নিরপেক্ষ ভাবে তার বিবরণ চাওয়া হয় সংশ্লিষ্ট ভোট কর্মীদের কাছে।

প্রসঙ্গত, শীতলকুচির ঘটনায় ময়না তদন্তের রিপোর্টকে হাতিয়ার করে ময়দানে নেমেছে তৃণমূল-সহ অন্যান্য বিজেপি বিরোধী দলগুলি। গুলি চালানোর জন্য একদিকে যেমন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে, ঠিক একইভাবে জোরালো প্রশ্ন তুলে বলা হচ্ছে, আত্মরক্ষার তাগিদেই যদি গুলি চালাতে হয়, তাহলে সেই গুলি পিঠে কীভাবে লাগে?

ময়না তদন্তের রিপোর্ট বলছে, পিছন থেকে গুলি করা হয়েছিল হামিদুল মিয়াঁকে। হামিদুলের ময়না তদন্তের রিপোর্টে মাঝারি রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কাজেই হামিদুলকে গুলি করার সময় জওয়ানদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করার কোনও সম্ভাবনা থাকছে না। এছাড়া মৃত সামিউল মিঞার বুকে স্প্লিন্টারের ক্ষত রয়েছে, মাথায় ভারী ও ভোঁতা কিছুর আঘাত রয়েছে তাঁর। এই আঘাতের চিহ্ন দেখে মনে করা হচ্ছে, তাঁকে কোনওভাবে বন্দুকের বাট দিয়ে আঘাত করা হয়ে থাকতে পারে। এছাড়াও তাঁর নাকে রক্তের দাগ রয়েছে।

মৃত মনিরুজ্জামান মিঞাকেও মাঝারি রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়েছে বলে ময়না তদন্তের রিপোর্ট বলা হয়েছে। তাঁর একটি পাঁজর ভেঙে যায়। গুলি চালানোর সময় তাঁর কোমরের নিচে বা দেহের অন্য কোথাও গুলি করা হয়নি। প্রত্যেকেরই পিঠে, বুকে এই জাতীয় জায়গায় আঘাত করা হয়েছে।

আরেক মৃত ব্যক্তি নূর আলম মিঞার ক্ষেত্রেও মিডল রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়েছে বলে পোস্টমর্টেম রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। ফলে আত্মরক্ষার্থে কাউকে গুলি করার কায়দা এমনটা হতে পারে না ট্রেনিংপ্রাপ্ত কোনও বাহিনীর।

আরও পড়ুন- করোনার প্রকোপ বাড়ছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হচ্ছে বেলুড় মঠ

আর অবৈধ ভিড় হটাতে গেলে যদি গুলি চালানো মতোও পরিস্থিতি হয়, সেক্ষেত্রে কোমরের নিচে বা পায়ে গুলি করা যেতে পারতো। সেক্ষেত্রে প্রাণহানির কোনও সম্ভবনা থাকতো না। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই বুকে বা পিঠে গুলি করা হয়েছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজা। তবে প্রকৃত সত্য উদঘাটনে শীতলকুচির ওই বুথে দায়িত্বে থাকা ভোট কর্মীদের শুনানি খুব তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

আরও পড়ুন- করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রীর

Advt

Previous articleমুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ৬ উইকেটে জয় দিল্লির
Next articleব্রেকফাস্ট নিউজ