রাজ্য পুলিশ থেকে ইডি-সিবিআই, মামলার পাহাড়ে মুকুল, কৃষ্ণনগর বিরক্ত

মামলার পাহাড়। কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি (Bjp) প্রার্থী মুকুল রায়কে (Mukul Roy) নিয়ে আত্মবিশ্বাসী নয় তাঁর দলেরই স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে তাঁকে ভোট দেবেন কী করে কৃষ্ণনগরের মানুষ? একটা-দুটো নয়, রাজ্যের দশটি থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। বুধবার, ‘বর্তমান’ পত্রিকায়, এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেই অনুযায়ী, কৃষ্ণনগর (Krishanagar) মহকুমা শাসকের কাছে দেওয়া বিজেপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্রে সরশুনা, কালীঘাট, হাঁসখালি, আসানসোল, বলরামপুর, নৈহাটি, বালুরঘাট, লাভপুর-সহ একাধিক থানায় মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এর বাইরেও সিবিআই (CBI), ইডি (Ed)-র একাধিক মামলায় নাম জড়িয়েছে মুকুল রায়ের। নারদের এফআইআর-ও(Fir) নাম রয়েছে বিজেপি প্রার্থীর।
সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন (Sudipta Sen) সিএমএমকে লেখা চিঠিতে অভিযোগ করেছেন, মুকুল রায় তাঁর থেকে বেশ কয়েক কোটি টাকা নিয়েছেন। যাঁর বিরুদ্ধে এত মামলা, তাঁকেই বিজেপি কৃষ্ণনগর উত্তরের প্রার্থী করায় স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন উঠেকছে। অস্বস্তি জেলা বিজেপির অন্দরেও। কিন্তু প্রভাবশালী ও হেভিওয়েট হওয়ায় মুকুলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন-ঠাকুর বাড়িতে করোনার থাবা! আক্রান্ত প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুর

‘বর্তমান’ পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির নদিয়া উত্তরের সাংগঠনিক জেলার এক নেতা জানিয়েছেন, “মুকুলবাবু প্রার্থী হওয়ায় আমাদের অনেকটাই চাপ বেড়ে গিয়েছে। না হলে লোকসভা নির্বাচনে 54 হাজার ভোটে এগিয়ে থাকা আসনে আমরা সহজেই জিতে যেতাম। হয়তো মার্জিনও এবার বাড়ত। কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্ব স্থানীয় কাউকে প্রার্থী না করে, হেভিওয়েটকে চাপিয়ে দেওয়ায় এখন অনেক বেশি খাটতে হচ্ছে”। তবে জয়ের বিষয় তাঁরা যে আশাবাদী নন, তা স্পষ্ট তাঁদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ থেকেই স্পষ্ট।

তৃণমূলের (Tmc) তরফ থেকেও কৌশানী মুখোপাধ্যায়ের (Kaushani Mukherjee) হয়ে প্রচারে গিয়ে মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) প্রশ্ন তুলেছিলেন, “প্রয়োজনে কি মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করতে প্রেসিডেন্সি জেলে যাবেন?” কারণ, কুণাল বলেছিলেন, মুকুলের জেলে যাওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। কারণ, সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের সিএমএম-কে লেখা চিঠি অনুযায়ী, মুকুল রায়কে তিনি বহু কোটি টাকা দিয়েছেন। নারদের ভিডিওতেও মুকুল রায়কে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। মুকুল দলে যোগ দেওয়ার আগে বিজেপি তাদের দলীয় কার্যালয়ে সেই ভিডিও দেখিয়েছে। যাঁর এই ভাবমূর্তি সেই বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী কৌশানী মুখোপাধ্যায়। যাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য কেন কোনও থানাতেই কোনও অভিযোগ নেই। কোনও দুর্নীতিতে নাম জড়ায়নি তাঁর। একেবারে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি কৌশানী।

পাশাপাশি, সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী সিলভি সাহার (Silvi Saha) বিরুদ্ধেও কোনও মামলা নেই। তবে ব্যক্তিগত জনসংযোগের ক্ষেত্রে সিলভিকে কয়েক যোজন দূরে ফেলে এগিয়ে গিয়েছেন কৌশানী। অন্তত এমনটাই বলছেন কৃষ্ণনগরের মানুষ। এই কদিনে কৃষ্ণনগরে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় সব বাড়িতে ঘুরেছেন কৌশানী। নিজেকে স্থানীয় একজন মানুষ হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছেন। শুধু তাই নয়, তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, বিধায়ক হওয়ার পরে ওই অঞ্চলে অফিস করে তিনি প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। তাঁদের সমস্যার সমাধান করবেন। এই পরিস্থিতিতে দশটি থানায় যাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে তাঁকে কেন বেছে নেবে কৃষ্ণনগর উত্তর? এই প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।

Advt

Previous articleকরোনায় আক্রান্ত ধোনির বাবা-মা, ভর্তি হাসপাতালে
Next articleকরোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত কবি শঙ্খ ঘোষ