এক দেশ, এক টিকা, এক দাম নয় কেন? প্রচারে কেন্দ্রকে আক্রমণ কুণালের

দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ(corona pandemic) প্রতিদিনই সীমা ছাড়াচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (prime minister Narendra Modi) তাঁর ভার্চুয়াল মিটিংয়ে বলছেন করোনাকে রুখতে হলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। অথচ বাংলায় এসে কীভাবে করোনা বিধি শিকেয় তুলে জনসভা করা যায় তা নিয়ে পরিকল্পনা করে চলেছেন । বৃহস্পতিবার রাসবিহারী কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবাশিষ কুমারের debasish Kumar)প্রচার সভায় গিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কার্যত তুলোধনা করেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh)। ভ্যাক্সিন নিয়ে কেন্দ্র সরকার যেভাবে কাটমানি খেতে উঠে পড়ে লেগেছে তার তীব্র সমালোচনা করেন কুণাল। কুণাল বলেন, করোনা আক্রান্ত হিসেবে বিজেপি আজ ভারতবর্ষকে এক নম্বরে পৌঁছে দিয়েছে। এক কোটি টিকা রাজ্য সরকার দিয়েছে। আরো এক কোটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছেন কেন্দ্রের কাছে। অনেকদিন আগেই চিঠি দিয়ে টিকা চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন রাজ্যের সব মানুষকে আমি টিকা দেব। তখন কেন্দ্র দেয়নি। এখন ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নাটক করে বলছেন রাজ্য সরকার নিজেরাই টিকা সংগ্রহ করতে পারবে। কিন্তু দামের ফারাক থাকবে। প্রথমে কথা ছিল টিকা সকলকে বিনামূল্যে দেওয়া হবে। কিন্তু এখন বলছে কেন্দ্র কিনছে ১৪০ টাকায়। রাজ্য কিনবে ৪০০ টাকায়। আর বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিং হোম কিনবে ৬০০ টাকায়। একটা পরিবারে যদি ৪ জন থাকে তাহলে কোনও বেসরকারি জায়গায় টিকা নিতে গেলে খরচ পড়বে ২৪০০ টাকা। সঙ্গে সার্ভিস চার্জ। কথা তো ছিল সকলকে বিনামূল্যে দেওয়া হবে। এক দেশ এক সংবিধান, খুব তো বড় বড় কথা। তাহলে এক দেশ, এক টিকা, এক দাম হবে না কেন? কোন রাজনীতি করছেন বিজেপি বন্ধুরা? কেন্দ্র টিকা কিনবে সস্তায়। আর রাজ্য সেই একই টীকা কিনবে বেশি দামে? কেন? রাজ্য সরকার করোনাকে বাংলা থেকে নির্মূল করেছিল। আর নির্বাচন কমিশন মোদির ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি আট দফায় ভোট করিয়েছে। জেলার সব হোটেল গুলো দেখুন সব বাইরের বিজেপি কর্মীতে ভর্তি। কেন্দ্রীয় বাহিনী নানা রাজ্য ঘুরে ঘুরে এসেছে। কারোর কোনও করোনা টেস্টের বালাই নেই। বাইরে থেকে আক্রান্তদের এনে বাংলায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম অন্তত শেষ তিন দফা ভোটকেও একদফায় করা হোক। নির্বাচন কমিশন শোনেনি। মোদি – অমিত শাহ দুজনেই বাংলা নিয়ে এখন খুব ব্যস্ত। ওদিকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ফোনের পর ফোন করে যাচ্ছেন করোনার ওষুধ চাই। আর দিল্লি থেকে বলা হচ্ছে মোদি এখন বাংলায় ভোটের প্রচারে ব্যস্ত। এটা একটা সরকার চলছে? দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। আর দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সকাল-বিকেল ডেলি প্যাসেঞ্জারি করছেন। দুজনেই খুব ব্যস্ত । কেন? দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উৎখাত করতে হবে।

কুণাল আরো বললেন, উত্তর প্রদেশে বিজেপি সরকার। ডবল ইঞ্জিনের সরকার নাকি ডবল চুল্লির সরকার? টিন দিয়ে ঢেকে রেখে দিয়েছে। আর ভিতরে সারি সারি চুল্লি জ্বলছে। কত মানুষ মারা যাচ্ছে তার কোনও হিসেব নেই। মৃতদেহ আসছে। পুড়িয়ে দিচ্ছে। আর বাংলার সরকার করোনাকে রোখার চেষ্টা করছে। মানুষজন আক্রান্ত হচ্ছেন । চিকিৎসা করে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাহলে আপনারাই ঠিক করুন না কাকে ভোট দেবেন? বিজেপির পদ্মফুলে? নাকি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জোড়া ফুলে ? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কেউ আছেন? যারা ভারতবর্ষকে করোনায় এক নম্বরে পৌঁছে দিয়েছে তাদের ভোট দেবেন নাকি যিনি সর্বশক্তি দিয়ে করোনাকে রোখার চেষ্টা করছেন, আপনাদের পাশে দাঁড়াবার চেষ্টা করছেন সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

Advt

Previous articleভোটের বাংলায় সভা বাতিলে নারাজ মোদি, আগামীকাল ভাষণ দেবেন ভার্চুয়ালি
Next articleএক দেশ, এক দল, এক নেতা বলে চিৎকার করে, তাহলে টিকার দাম এক নয় কেন: মমতা