বুকফার্ম প্রকাশনার প্রতারণার বিরুদ্ধে আদালতে জয়ী সাহিত্যিক দেবারতি

প্রকাশকের প্রতারণার বিরুদ্ধে মামলা করে বড় সড় জয় পেলেন সাহিত্যিক দেবারতি মুখোপাধ্যায়। আজ রাজারহাট কমার্শিয়াল কোর্টের মাননীয় বিচারপতি নিয়াজ আলম বুকফার্ম প্রকাশন থেকে প্রকাশিত সাতটি বইতে ইনজাংশনের আদেশ দিয়েছেন যাতে ভবিষ্যতে ওই প্রকাশক দেবারতি মুখোপাধ্যায়ের বই বিক্রি করতে না পারেন।

বুকফার্ম প্রকাশনা থেকে সাহিত্যিক দেবারতি মুখোপাধ্যায়ের সাতটি বই ছিল, যেগুলো অতিজনপ্রিয় ও বহুলবিক্রিত। কিন্তু গত এক বছর ধরে লেখিকা তাঁর প্রাপ্য রয়্যালটি তো পাচ্ছিলেনই না, উলটে অন্যান্য প্রকাশনা সংস্থার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খারাপ করে দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। এরকম অবস্থায় লেখকরা সাধারণত চুপ করে যান এবং প্রকাশক প্রতারিত করতেই থাকে।

কিন্তু দেবারতি মুখোপাধ্যায় চুপ করে থাকেননি, গত জুন মাসে তিনি বুকফার্মকে বই প্রত্যাহারের আইনি নোটিশ পাঠান এবং কপিরাইট অধিকার প্রয়োগ করে অন্য প্রকাশনার ( দীপ প্রকাশন) সাথে চুক্তিবদ্ধ হন।

কিন্তু অতিমারির সুযোগে বুকফার্ম আলিপুর আদালতে একতরফা ইনজাংকশন বের করে, যাতে লেখিকা নিজেরই বইয়ের অন্য কোথাও স্বত্ত্ব না দিতে পারেন।

সাহিত্যিক দেবারতি মুখোপাধ্যায়, যিনি নিজে সরকারি আধিকারিক সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান। এবং তিনমাস শুনানির পর মহামান্য বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ ওইএক্স পার্টি একতরফা ইনজাংকশন ভুল ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে জয় হয় লেখিকার।

এরপর নিজের প্রাপ্য রয়্যালটি পেতে থানায় ৪২০, ৪০৬ সহ একাধিক ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে FIR ও দায়ের করেন দেবারতি মুখোপাধ্যায়। তা সত্ত্বেও বুকফার্ম বইগুলো বিক্রি করে চলেছিল এবং লেখককে কোন রয়্যালটিও দিচ্ছিল না।

অবশেষে আজ রাজারহাট কমার্শিয়াল কোর্ট থেকে বুকফার্মের বই বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হল। দায়ের হয়েছে বিপুল অংকের মানহানির মামলাও।

লেখিকার তরফে আইনজীবী প্রবাল মুখোপাধ্যায় এবং সুকান্ত চক্রবর্তী বলেন, বাংলা সাহিত্যে লেখককে ঠকানো নতুন কিছু নয়। সেই প্রচলিত ধারার বিরুদ্ধে লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায় একা লড়েছেন এবং জয়ী হয়েছেন। এই লড়াই দৃষ্টান্ত তৈরি করল এবং এই লড়াই সমস্ত বাঙালি লেখককে সাহস যোগাবে।

প্রসঙ্গত, এর মধ্যেই ওই সাতটির একটি বই ‘নরক সংকেত’ থেকেই বর্তমানে এসকে মুভিজ স্বস্তিক সংকেত সিনেমা করছে, যাতে অভিনয় করছেন নুসরত জাহান ও গৌরব চক্রবর্তী।