ডাক্তারবাবুদের প্রণাম, তবু জ্ঞান দেওয়ার আগে ভাববেন; কুণাল ঘোষের কলম

 

কুণাল ঘোষ

বছরভর যেসব বেসরকারি হাসপাতালের বিপুল বিল ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে সাধারণ বিপদে পড়া রোগী পরিবার রাজনীতিবিদদের কাছে আসেন, তাঁদের দিয়ে অনুরোধের ফোন করান; আজ সেইসব হাসপাতালের বহু চিকিৎসককে দেখছি করোনা নিয়ে বিবেকের মুখোশ পরে রাজনীতিবিদদের জ্ঞান দিচ্ছেন।

রাজনীতিবিদদের নিশ্চয়ই ভুল আছে। কিন্তু আপদে বিপদে, করোনার ত্রাণশিবিরে, রক্তদানশিবিরে এই রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাই থাকেন।

নির্বাচন কমিশন জোর করে ভোট চালালো, আমরা বাধ্য হলাম প্রচারে থাকতে, এর দায় বিজেপি ছাড়া অন্য দলের হতে পারে না। কারণ তারা এর সমর্থক ছিল।

যে রাজ্যে ভোট নেই, সেখানে এত চিতা জ্বলছে কেন?
যেখানে ডবল ইঞ্জিন সরকার, সেখানে কেন বিপর্যয়?
কেন চৈত্র সেলেও ভিড় হল? কেন মিডিয়া ভোটে মেতে রইল, করোনা শিরোনামে এল অনেক পরে? কেন বাংলায় ডেইলি প্যাসেঞ্জারিতে ব্যস্ত প্রধানমন্ত্রীকে ডেকে সাড়া পেলেন না মহারাষ্ট্র আর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীরা? এর দায় সব রাজনৈতিক দল কেন নেবে?

আবার, কেন অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালে বিপুল টাকা জমা ছাড়া ভর্তি নয়? এই বিপদেও সাধারণ মানুষকে নিয়ে ব্যবসা চলছে?

সরকারি হাসপাতালের বহু চিকিৎসক আসল পরিষেবা বা কাজে সময় দেন কোনো প্রাইভেট সংস্থায় বা নিজের চেম্বারে।

চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রণাম জানিয়েও বলি পুলিশ থেকে পুরকর্মী; মিডিয়া থেকে জরুরি পরিষেবার কর্মীরাও ঝুঁকি নিয়ে পথে আছেন।

আপনি জেনেশুনে আপনার পেশায় এসেছেন। আজ আমরা যে যার পেশায় কর্তব্য করছি। অনেক শ্রমজীবী ন্যূনতম সুরক্ষা ছাড়াও কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। লকডাউন বা আংশিক লক ডাউনে বহু মানুষের কর্মহীনতা আসছে।

যাঁরা বিপুল টাকা ছাড়া ভর্তি নেন না, যাঁরা বিভিন্ন টেস্ট করিয়েও কমিশন খান, এখন তাঁরা বিবেকের ভূমিকা নিয়ে জ্ঞান দেবেন, এটা অসহ্য।

ব্যতিক্রম আছে। কয়েকজন চিকিৎসক প্রণম্য। তবে ব্যতিক্রম নিয়মেরই প্রমাণ করে।

করোনা নিয়ে জ্ঞানদাতারা বিল কমান, কমিশন খাওয়া বন্ধ করুন। যাঁরা সরকারের কাছে সস্তায় জমি নিয়েছেন, তাঁরা এই বিপদে মানুষকে কিছুদিন সস্তায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।

এমন আচরণ বছরভর দেখান যাতে আপনাদের চাপে অতিষ্ঠ সাধারণ রোগীপরিবারকে কুখ্যাত, নিন্দিত, সমালোচিত রাজনীতিবিদদের কাছে আসতে না হয় আর তাদের বাঁচাতে সেই রাজনীতিবিদকে সেই হাসপাতালে ফোন করতে না হয়।

জ্ঞান তারপর দেবেন।

ডাক্তার হলেন ভগবানের অন্যরূপ।
বিবেকের আরোপিত নাট্যরূপে আপনাদের সম্মাননষ্ট হচ্ছে।

রাজনীতির জগতের লোকেদের গাল দেওয়া একটা সস্তা পরিচিত ফ্যাশন।
একটু অন্য আলোচনাও হোক।

আরও পড়ুন:রাত পোহালেই গণনা, করোনা সংক্রমণ রোখাই বড় চ্যালেঞ্জ কমিশনের

Advt

 

Previous articleরাত পোহালেই গণনা, করোনা সংক্রমণ রোখাই বড় চ্যালেঞ্জ কমিশনের
Next articleকরোনা আতঙ্কে যাত্রী কমছে, বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করল রেল