Thursday, December 18, 2025

হারার কারন খুঁজতে নেমে বিপাকে অমিত শাহ

Date:

Share post:

রাজ্যে ষষ্ঠ দফার ভোটের পর থেকেই কার্যত নিখোঁজ বিজেপির বাংলা দখল অভিযানের প্রধান সেনাপতি অমিত শাহ৷ রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, তখনই তিনি ধরে ফেলেছিলেন গেরুয়া বেলুনের হাওয়া দ্রুত বেরিয়ে যাচ্ছে৷ কমিশনের করোনা-ফতোয়াকে হাতিয়ার করে সেই যে দিল্লি ফিরেছেন, তার পর থেকে আর খবরই পাওয়া যায়নি৷

শেষপর্যন্ত বঙ্গ-বিজেপি হদিশ পেয়েছে শাহের (Amit Shah)৷ গেরুয়া- সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যের নিচুতলার বিজেপি (BJP) কর্মীদের কাছে দিল্লি থেকে ফোন আসা শুরু হয়েছে। অমিত শাহ নাকি লজ্জাজনক পরাজয়ের কারন খুঁজতে নেমেছেন৷ শাহি-নির্দেশেই বাংলায় বিজেপির নিচুতলার কর্মীদের কাছ থেকে মতামত সংগ্রহ করছেন অমিতের দফতরের একদল কর্মী।

কেন এই হার? জানা গিয়েছে, নিচুতলার কর্মীরা দিল্লিকে এর কারন হিসাবে যা যা বলছেন, তাতে বঙ্গ-বিজেপির নেতারা তো বটেই, দিল্লির নেতারাও একের পর এক কাঠগড়ায় উঠছেন৷ বাদ যাচ্ছেন না মোদি-শাহও৷

কর্মীদের মারফৎ বিজেপি’র এই ভরাডুবির কারণ হিসাবে দিল্লি জেনেছে,

১) চরম সাংগঠনিক দুর্বলতা ৷

২) বিজেপি-র রাজ্য তথা জেলার নেতাদের মাত্রাছাড়া আত্মতুষ্টি ৷

৩) কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ৷

৪) বাংলাজুড়ে ভিনরাজ্যের নেতাদের হিন্দি ভাষায় বক্তৃতার জোয়ার ৷

৫) প্রধানমন্ত্রীর মুখে ‘দিদি, ও দিদি’ জাতীয় শব্দবন্ধ ৷

৬) অতিরিক্ত ‘জয় শ্রীরাম’ তথা ধর্মীয় মেরুকরণ ৷

৭) দিল্লির শীর্ষনেতাদের কথায় রাজ্য নেতাদের
‘গেরুয়া-হাওয়া’র উপর ভরসা করা৷

৮) দলের অন্দরে আদি- নব্য দ্বন্দ্ব৷

৯) তৃণমূল থেকে আসা সাংগঠনিক নেতাদের একাংশকে সে ভাবে বড় কোনও সাংগঠনিক দায়িত্ব না দেওয়া৷

১০) বুথ স্তরের সংগঠন না থাকায় ভোট প্রচারে অনেকটা পিছিয়ে শুরু করা৷ বাড়ি বাড়ি ভোটার স্লিপ বিলি করতে না পারা৷

১১) ভোটের দিন বেশিরভাগ বুথে এজেন্ট দেওয়া যায়নি৷ গণনার দিনও এজেন্ট দেওয়া যায়নি।

১২) রাজ্য নেতারা প্রকৃত পরিস্থিতি বুঝতে ব্যর্থ হওয়ায় যে সব জায়গায় তৃণমূলের জেতার কথা নয়, সেখানেও বিজেপি প্রার্থী হেরেছে৷

১৩) প্রাথী বাছাইয়ে নিচুতলার কর্মীদের লিখিত মতামতকে গুরুত্ব না দেওয়া৷ স্বপন দাশগুপ্তকে গ্রামীণ কেন্দ্রে প্রার্থী করা, দু’বারের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে নিজের কেন্দ্রে প্রার্থী না করা, কল্যাণ চৌবেকে কৃষ্ণনগরে প্রার্থী না করা ইত্যাদি দিল্লির সিদ্ধান্ত ভুল ছিলো৷

নিচুতলার কর্মীদের কাছ থেকে পরাজয়ের কারন জানতে গিয়ে কার্যত ফেঁসেছেন অমিত শাহ নিজেই৷ কর্মীরা যে ধরনের গলদের কথা তুলে ধরছেন, তার প্রতিটির পিছনেই সায় ছিলো অমিত শাহের নির্দেশ৷ ফলে এই পরাজয়ের জন্য
রাজ্য কমিটিকে নিশানা করে নিজেদের দায় এড়ানোর শাহি-কৌশল কার্যত ব্যুমেরাং হতে চলেছে৷

আরও পড়ুন:মেদিনীপুরে দুষ্কৃতী হামলার শিকার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, অভিযোগ- পাল্টা অভিযোগে সরগরম রাজনীতি

Advt

 

spot_img

Related articles

নিউটাউনের ঝুপড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

উত্তর ২৪ পরগনার নিউটাউনে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার সন্ধ্যার পর...

বিজনেস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ: বিনিয়োগের বার্তা নিয়ে শিল্পপতিদের সামনে মুখ্যমন্ত্রী

রাজ্যে শিল্প ও বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে আরও বিস্তৃত করতে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ‘বিজনেস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ’। ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে...

২২ জানুয়ারি থেকে শুরু ৪৯তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা, ভার্চুয়ালেও মিলবে মেলার স্বাদ

আর দেড় মাসের অপেক্ষা। আগামী ২২ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে ৪৯তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। বইপ্রেমীদের জন্য এ...

যুবভারতীর বিশৃঙ্খলা-কাণ্ডে শোকজের জবাব জমা তিন শীর্ষ কর্তার

যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার ঘটনায় শোকজের জবাব জমা দিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, ক্রীড়া...