ইয়াসের সঙ্গে পূর্ণিমা-ভরা কোটাল মনে করাচ্ছে আয়লার ভয়ঙ্কর স্মৃতিকে

আবহাওয়া দফতর (Weather Office) স্পষ্ট জানিয়েছে, ওড়িশার (Odisha) বালাসোর (Balasor) উপকূলে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় (Cyclone) ইয়াস (YAAS)। রাজ্যে সবথেকে বেশি প্রভাব পড়তে পারে পূর্ব মেদিনীপুর (East Medinipur) জেলায়। এছাড়া উপকূলবর্তী দক্ষিণ ২৪ পরগনায় (South 24 Parganas) প্রভাব পড়বে ইয়াসের। রাজ্যের বাকি জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত (Heavy Rain Fall) ও প্রবল ঝোড়ো হাওয়া বইলেও তা কখনও আমফানের মতো ভয়ঙ্কর রূপ নেবে না। এটা যদি রাজ্যবাসীর জন্য কিছুটা স্বস্তির খবর হয়, তাহলে আশঙ্কার দিকটিও অগ্রাহ্য করা যাবে না।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস, পূর্ণিমা, সুপারমুন, ব্লাড মুন, পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ এবং ভরা কোটাল। একইদিনে। ফলে এই পাঁচের স্পর্শযোগে দুর্বল নদীবাঁধ নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে সুন্দরবন সংলগ্ন দুই ২৪ পরগনায়। ফিরে আসতে পারে আয়লার (Aila) দুঃসহ স্মৃতি। ভরা কোটাল আসার প্রভাবে আজ, মঙ্গলবার সকাল থেকে জলস্তর বাড়তে শুরু করবে। আগামিকাল, বুধবার বিকেল সওয়া তিনটে নাগাদ পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ আরম্ভ হওয়ার কথা। তাই ঘূর্ণিঝড় আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। পরশু, বৃহস্পতিবার ভরা কোটালের সর্বাধিক প্রভাব থাকবে। ফলে নদীবাঁধ ভাঙার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি।

আয়লার সময়ও ভরা কোটাল ছিল। তাই নদীবাঁধের উপর তার প্রভাব ছিল অত্যন্ত বেশি। বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির মধ্যেই সর্বোচ্চ প্রভাবে পৌঁছবে ভরা কোটাল। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৭৭ কিমি দুর্বল নদীবাঁধ রয়েছে। আবার বসিরহাট মহকুমায় প্রায় ৭৬২.৫ কিমির মধ্যে মাত্র ৭৩ কিমি বাঁধ কংক্রিটের। তাই গত সপ্তাহেই পরিদর্শন করে শতাধিক দুর্বল অংশ চিহ্নিত করা হয়েছিল। তবে, উত্তর ২৪ পরগনায় সেচদপ্তরের বসিরহাট ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আশিস দত্ত জানিয়েছেন, সর্বস্তরে সতর্কতা রয়েছে। ভরা কোটাল মাথায় রেখেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ল্যান্ডফলের আগে ইতিমধ্যেই মেঘলা আকাশ উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। প্রবল জলোচ্ছ্বাসও শুরু হয়েছে সমুদ্রে। বুধবার দুপুরেই ওড়িশার বালাসোর ও এ রাজ্যের দীঘার মধ্যবর্তী উপকূলে আছড়ে পড়বে ইয়াস (YAAS)। মঙ্গলবার ভোর ৪টে নাগাদ পারাদ্বীপ থেকে মাত্র ৩৬০ কিমি, বালাসোর থেকে ৪৬০ কিমি ও দীঘা থেকে ৪৫০ কিমি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান ইয়াসের।

আগামী ১২ ঘণ্টায় আরও শক্তি সঞ্চয় করবে ইয়াস। পূর্ণিমা ও পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের জোড়াফলায় শক্তিশালী হয়ে উঠছে ইয়াস। তবে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী স্থানে ঝড়ের দাপট বেশি হবে না বলেই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে পূর্ব মেদিনীপুরে। আছড়ে পড়ার সময় পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়ের বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৪৫ কিমি। ইতিমধ্যেই সেখানে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।

দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ঝড়ের বেগ হবে ঘণ্টায় ৯০-১০০ কিমি। কলকাতা, হাওড়া, হুগলিতে ঝড়ের বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৭০-৮০ কিমি। তবে, আমফানের মতো প্রভাব এই রাজ্যে পড়বে না বলেই মনে করা হচ্ছে। বুধবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা, পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা, কালিম্পং, দার্জিলিং জেলায়।

Advt

 

Previous articleঘূর্ণিঝড়ে বিপদে পড়লে বা সমস্যা দেখা দিলে সাহায্য পেতে জরুরি ফোন নম্বর
Next articleBreaking: বিজেপির বৈঠকের ভিডিও ফাঁস, কুণালকে আক্রমণে শুভেন্দু