নয়া শ্রম বিধি চালু করতে উদ্যোগী কেন্দ্র, কমতে পারে নেট স্যালারি

গত কয়েক বছরে সংসদে চারটি নতুন শ্রম বিধি পাশ হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বিধিগুলি আইনে রূপায়ন করতে আগ্রহী কেন্দ্র। এই বিধিগুলি রূপায়ন হলে চাকরীজীবীদের হাতে পাওয়া বেতনের পরিমাণ কমে যেতে পারে। বাড়তে পারে নিয়োগকারী সংস্থাগুলিকে প্রভিডেন্ট ফান্ডে বরাদ্দ। সোজা কথায় বললে বলা যায়, টেক হোম স্যালারি বা নেট স্যালারিতে কোপ পড়তে পারে।
এতদিন শুধু বেসিক পে-এর নির্দিষ্ট অংশ প্রভিডেন্ট ফান্ডে দিতে হত। বেসিক পের আওতায় ছিল মহার্ঘ ভাতা। তবে মহার্ঘ ভাতার পরিমাণ কমিয়ে অন্য সকল ভাতা দিত কোম্পানিগুলি। কিন্তু নতুন শ্রম বিধি আইনে মোট বেতনের অন্তত ৫০ শতাংশ মহার্ঘভাতা দিতে হবে। বাড়বে প্রভিডেন্ট ফান্ডের অংশ। নিয়োগকারী এবং কর্মচারী দুই তরফেই পিএফে অনুদানের অংশ বাড়বে।
শুধু তাই নয় এই বিধি কার্যকর হলে শ্রম মন্ত্রক ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনস, পারিশ্রমিক, সামাজিক নিরাপত্তা ও পেশাগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও কাজের শর্তের ক্ষেত্রে চলতি বছরের ১ লা এপ্রিল থেকে চার বিধি রূপায়নের পরিকল্পনা করেছিল। ৪৪ টি কেন্দ্রীয় শ্রম আইনের সংস্কার সাধনের জন্য এই চার শ্রম বিধি আনা হয়েছে।
বেশ কয়েকটি রাজ্য ইতিমধ্যেই খসড়া আইন প্রকাশ করেছেন এই রাজ্যগুলি হল-বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, ওড়িশা, পঞ্জাব, গুজরাত, কর্ণাটক ও উত্তরাখণ্ড। তবে জানা গেছে, অনেকগুলি বড় রাজ্যই এই চার বিধির আওতায় নিয়মকানুন চূড়ান্ত করেনি। তবে এ জন্য কেন্দ্র অনন্ত কাল অপেক্ষা করতে পারবে না। সেজন্য কেন্দ্র আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বিধিগুলি রূপায়নের পরিকল্পনা করছে। কারণ, নতুন আইনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কোম্পানি বা সংস্থাগুলিকে কিছুটা সময় দিতে হবে।
নতুন শ্রম বিধি অনুসারে, ভাতার সর্বোচ্চ সীমা হতে পারবে মোট বেতনের ৫০ শতাংশ। অর্থ্যাৎ, মোট বেতনের অর্ধেক হবে মূল পারিশ্রমিক। প্রভিডেন্ট ফাণ্ডে বরাদ্দ মূল বেতনের শতকরা হার অনুসারে হিসেবকরা হয়, যার মধ্যে থাকে মূল বেতন, মহার্ঘ ভাতা। প্রভিডেন্ট ফাণ্ড ও আয়কর দায় কমাতে নিয়োগকারী সংস্থাগুলিকে পারিশ্রমিককে বিভিন্ন ভাতায় ভাগ করে থাকে। নতুন শ্রম বিধিতে প্রভিডেন্ট ফাণ্ডের পরিমাণ মোট বেতনের অনুপাতে স্থির করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নতুন বিধি কার্যকর হলে কর্মীদের টেক হোম স্যালারি কমতে পারে। অন্যদিকে, বহুক্ষেত্রেই নিয়োগকারীদের প্রভিডেন্ট ফাণ্ডে দেয় অর্থের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
নতুন এই বিধি আইনে রূপায়িত হলে নিয়োগকারীদের কর্মীদের বেতন পুণর্গঠন করতে হবে। পাশাপাশি, নতুন ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশন কোড অনুসারে, যেসব সংস্থার কর্মীর সংখ্যা ৩০০-র মধ্যে, তাঁদের ছাঁটাই বা কারখানা বন্ধ করতে সরকারের অনুমতি লাগবে না।

Advt