অবলুপ্তির পথে শতাব্দী প্রাচীন পুতুলনাচ শিল্প! কেমন আছেন শিল্পীরা?

পুতুলনাচ। নিজস্ব চিত্র।

সালটা ছিল ১৯৭৭। সোনামুখীর রাধানগরে প্রথম শো। ২৫ জনের পুতুল নাচের দল গিয়ে দুর্দান্ত অনুষ্ঠান সবার বাহাবা হাততালি কুড়িয়েছিল। তার পর থেকে ভালই চলছিল। কিন্তু কালের স্রোতে কার্যত হারিয়ে গিয়েছে পুতুলনাচ। কেমন আছেন টিমটিম করে জ্বলতে থাকা সেই শিল্পের ধারক বাহকরা, এক শিল্পী শোনালেন সেই কাহিনি।

পুজো পার্বণ মেলা থেকে  পারিবারিক অনুষ্ঠান, আগে সব জাগাতেই মিলিত পুতুলনাচের বায়না। বিনোদনে নাটক,  থিয়েটারের পাশাপাশি জায়গা পেত পুতুলনাচও। কিন্তু কালের নিয়মে জীবনধারা বদলেছে। পুতুলনাচের জায়গা নিয়ে নিয়েছে বায়োস্কোপ থেকে চলচিত্র। তখন থেকেই অবলুপ্তির যে ধারা তৈরি হয়েছিল তাতে শেষ পেরেকটা পুঁতে দিয়েছে বিশ্বকে হাতের তালুতে এনে দেওয়া স্মার্ট ফোন।

সময় খরচ করে এখন পুতুল নাচ দেখার আগ্রহ হারিয়েছেন মানুষ। তাই ভাঁটা পড়েছে এই শিল্পেও। তবুও বর্তমান সরকারের আমলে মুখ্যমন্ত্রী ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শিল্পীরা কাজ পাচ্ছেন, সরকার ভাতার ব্যবস্থাও করেছেন। প্রায়ই সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ও মেলায় মিলছিল পুতুল নিয়ে হাতের কারসাজি দেখানোর সুযোগ। কিন্তু করোনা কালেও সেটাও প্রায় বন্ধ।

এক সময় শুধু বাঁকুড়া জেলাতেই ৬০ থেকে ৭০ জন শিল্পী পুতুল নাচের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু কালক্রমে সেটা কার্যত হাতে গোনা কয়েক জনের ঠেকেছে। তাঁদের মধ্যে এক জন হলেন দেবীপ্রসাদ সিংহ। তিনিই জানালেন শিল্পের বর্তমান অবস্থা খুব খারাপ।

একে একে পুতুলনাচ শিল্পীরা পুতুলনাচ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। নাম লেখাচ্ছেন অন্য পেশায়। কয়েকজন রয়ে গিয়েছেন ভালবাসার টানে। সর্বসাকুল্যে রোজকার বলতে সরকারের দেওয়া মাসিক হাজার টাকা। তাতে সংসারে দিন পাঁচেক চলে কোনও রকমে। তাই ভবিষ্যৎ কী হবে কেউ জানে না।