বেতনের টাকায় করোনা আক্রান্তদের জন্য অ্যাম্বুল্যান্স দান করলেন স্কুল শিক্ষিকা!

কোভিড সংক্রমণের জেরে স্কুল বন্ধ প্রায় বছর দেড়েক । মাঝে কয়েকদিনের জন্য খুললেও ফের সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে স্কুলে পড়েছে তালা চাবি। কিন্তু বেতন বন্ধ হয়নি শিক্ষক শিক্ষিকাদের। বিনা পরিশ্রমেই মিলছে বেতন। যা নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে ছিলেন জলপাইগুড়ির স্কুল শিক্ষিকা কেয়া সেন । শেষপর্যন্ত সেই বেতনের টাকা দিয়ে তিনি কিনলেন একটি অ্যাম্বুল্যান্স।
মঙ্গলবার সেটি দান করলেন কোভিড আক্রান্তদের পরিষেবায়। এভাবেই
করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে পেরে যারপরনাই খুশি তিনি । বরং বলা যেতে পারে, তিনি যে পথ দেখালেন, সেই পথে হেঁটে আরও অনেকে যদি সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তবে করোনার বিরুদ্ধে জয়ী হওয়াটা অনেকটাই সহজ হবে বলে মনে করছেন জলপাইগুড়িবাসী।

জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি ২০ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কেয়া সেন রাজগঞ্জ ব্লকের মান্তাদারি বিএফপি স্কুলের শিক্ষিকা। গত দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ। তার পরেও বেতন পাচ্ছিলেন নিয়মমাফিক। সেই টাকা দিয়ে সেবামূলক কিছু করার চিন্তা মাথায় ঘুরছিল। বাড়ির সকলকে মনের ইচ্ছার কথা জানাতেই বড় ছেলে স্পন্দন অ্যাম্বুল্যান্স কেনার পরিকল্পনাটি দেন মাকে।
শেষ পর্যন্ত মাসিক কিস্তিতে এটি কিনে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হাতে তুলে দিয়েছেন তাঁরা। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি জেলাপরিষদ হলে তাঁরা ওই সংস্থার হাতে অ্যাম্বুল্যান্সের চাবি তুলে দেন।
কেয়া বলেছেন, বিগত দেড় বছর ধরে মাসে মাত্র ১-২ দিনই কাজ করতে হচ্ছে। বাকি প্রায় পুরো মাস বিনা পরিশ্রমেই বেতন পাচ্ছি। মাসে অন্তত ২৬ দিন স্কুলে যাওয়ার কথা। এ ভাবে বেতন নিতে আমার লজ্জা লাগছিল। তাই অ্যাম্বুল্যান্স কিনে তা জেলাপরিষদের মাধ্যমে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে দান করলাম। এতে যদি করোনা আক্রান্তদের কিছুটা উপকার হয়, তবে জানবো আমার প্রচেষ্টা সার্থক ।

Advt