গ্রেফতার তদন্তের অংশ হলেও তদন্ত শেষে গ্রেফতারি বেআইনি, হাইকোর্টে তোপ লুথরার

“গ্রেফতারি তদন্তের অংশ, কিন্তু যে তদন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে সেখানে গ্রেফতারির কোন মানেই হয় না। এই গ্রেফতার বেআইনি৷ আইন এই গ্রেফতারির অনুমোদন দেয়না। এই ধরনের গ্রেফতারি অভূতপূর্ব।”

হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে নারদ- মামলা স্থানান্তরের শুনানিতে মঙ্গলবার অভিযুক্তদের কৌঁসুলি সিদ্ধার্থ লুথরা তাঁর সওয়ালে ঠিক এভাবেই CBI-এর বিরুদ্ধে বেআইনি পদক্ষেপের অভিযোগ এনেছেন৷

লুথরা এদিন তাঁর সওয়ালে বলেন, “প্রতিটি ধাপে CBI তাদের এই মামলাকে অন্য পথে চালিত করছে৷ প্রথমে বললেন যে তারা CBI-এর বিশেষ আদালতের কাছে কোন নথি পেশ করতে পারেননি। পরে দেখা গেলো, জামিনের নির্দেশ দেওয়ার আগেই তারা সশরীরে আদালতে উপস্থিত হয়ে চার্জশিট পেশ করেছেন।”

◾ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি –
মি: লুথরা, CBI-এর তদন্তের প্রক্রিয়া এই মামলার বিষয়বস্তু নয়।

◾অভিযুক্তদের কৌঁসুলি সিদ্ধার্থ লুথরা – CBI-এর অভিযোগের যৌক্তিকতা নেই। সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই অভিযোগ এনেছে। CBI-এর তদন্তের প্রক্রিয়া সঠিক নয়।

◾লুথরা – গ্রেফতারি তদন্তের অংশ, কিন্তু যে তদন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে সেখানে গ্রেফতারির কোন মানে হয় না।
◾লুথরা – গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়নি৷ আইন এই কাজের অনুমোদন দেয়না। এই ধরনের গ্রেফতারি অভূতপূর্ব।

◾বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায় – মি: লুথরা, এখানে জামিন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চার্জশিট পেশের পর কি গ্রেফতার করা যায়, সেই প্রশ্ন উঠেছে। এই অবস্থায় আদালত কি করবে? অন্তর্বর্তী জামিন কন্টিনিউ করবে? না’কি, জামিন বাতিল করবে? আইনি ব্যাখ্যা কি?

◾লুথরা – গ্রেফতারই ত্রুটিপূর্ণ হলে জামিন তো হবেই।

◾লুথরা – ফৌজদারি আইন অনুযায়ী তদন্ত শেষের পর চার্জশিট পেশ হয়। যদি হেফাজতেই নিতে হয়, তাহলে তদন্তের সময় গ্রেফতার করা হলো না কেন ? এখন গ্রেফতারের যৌক্তিকতা কোথায়? এই গ্রেফতার বেআইনি৷

এরপরই এ সংক্রান্ত একাধিক জাজমেন্টের রেফারেন্স দেন লুথরা

◾লুথরা – CBI বারবার বলছে, যেহেতু তারা অভিযুক্তদের আদালতে পেশ করতে পারেনি, তাই হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন৷ এটা সম্পূর্ণ ভুল৷
ভার্চুয়াল শুনানি বাংলায় আইন অনুসারেই হয়ে থাকে ।

◾লুথরা – কোভিড পরিস্থিতির বহু আগেই রাজ্য সরকার অভিযুক্তদের বিচারকের সামনে ভার্চুয়ালি পেশ করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন করেছিল।

◾বিচারপতি সৌমেন সেন – মি: লুথরা, আপনার মতে গ্রেফতারি বেআইনি, এর কারণ CBI প্রয়োজনীয় অনুমতি নেয়নি বা 41A ধারায় নোটিস পাঠানো হয়নি। তাইতো ?
◾লুথরা – CBI একটি ম্যানুয়াল দ্বারা চালিত হয়। বিভিন্ন নির্দেশনামায় বলা আছে যে এই ম্যানুয়াল মেনে চলা বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে ওই ম্যানুয়াল উপেক্ষা করা হয়েছে৷

◾লুথরা – তদন্ত শেষ, তারা সহযোগিতা করছেন, গ্রেফতারির কোন মানেই হয়না ।

◾লুথরা – প্রতিটি ধাপে CBI তাদের মামলাকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। প্রথমে বললেন যে তারা CBI-এর বিশেষ আদালতের কাছে কোন নথি পেশ করতে পারেননি। পরে দেখা গেল যে জামিনের নির্দেশ দেওয়ার আগেই তারা সশরীরে আদালতে উপস্থিত হয়ে চার্জশিট পেশ করেছেন।

শুনানি চলছে৷

আরও পড়ুন:তৃণমূলে ফেরানো যাবে না: প্রবীর ঘোষালের নামে কোন্নগরজুড়ে পোস্টার