বিজেপির বৈঠকে আদি-নব্য লড়াই প্রকাশ্যে, আক্রমণে জেরবার শিব-অরবিন্দ-অমিত

শুক্রবার সকালে সেন্ট্রাল এভিনিউয়ে বিজেপি পার্টি অফিসের সামনে পোস্টার। পোস্টারে লেখা ‘গো ব্যাক কৈলাশ’। দিল্লির পরিযায়ী নেতাদের নিয়ে দলীয় কর্মীদের মানসিকতা কী, সেটা স্পষ্ট এই ছবিতেই। আর বৃহস্পতিবার দলীয় বৈঠকের মেজাজও ছিল এইরকম। আদি-নব্য লড়াই চলে আসে প্রকাশ্যে। অভিযোগের বহর শুনে তিন কেন্দ্রীয় নেতা বেজায় বিপর্যস্ত হন।

ভোটের মুখে দিল্লির নেতারা যেভাবে দলবদলুদের নিয়ে নাচানাচি করেছেন, তা মোটেই পছন্দ হয়নি দলের নেতাদের। বৈঠকে সরাসরি শিব প্রকাশকে লক্ষ্য করে প্রশ্ন ছোড়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে মুকুল-কৈলাশের ‘ আনহোলি নেক্সাস’ নিয়ে। কেউ কেউ চার্টার্ড ফ্লাইটে করে তৃণমূল নেতাদের দলে নেওয়ার কথা তুলে বলেছেন, এরা ঠিক দলে কোন ধরনের সম্পদ?

বৈঠকে শিব প্রকাশ ছাড়াও ছিলেন অরবিন্দ মেনন ও ট্যুইট মাস্টার অমিত মালব্য। বাংলার মাটি সম্বন্ধে তাঁদের ধ্যান-ধারনা যে নেহাতই শিশুসুলভ, সে কথাও সরাসরি বলেছেন রাজ্য বিজেপির এক জাঁদরেল নেতা। তিনি একের পর এক প্রশ্ন তুলেছেন প্রার্থী চয়ন নিয়ে। ১০০ -র বেশি দলবদলুকে প্রার্থী করায় বেমক্কা হারের অভিযোগ করেন তিনি। রাঢ় বাংলার এক নেতা তো স্পষ্ট বলেছেন, জনতার অভাবে জনসভা বাতিল হওয়া দেখেও দিল্লি কেন বুঝতে পারল না আসল চিত্রটা?

বাংলার সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন শিব প্রকাশ আর প্রার্থী বাছাইয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন কৈলাশ বিজয়বর্গী। বৈঠকে থাকলে কৈলাশের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার পরিকল্পনাও ছিল বেশ কিছু নেতাদের। কৈলাশের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে প্রার্থী করার পরিবর্তে টাকা গুনতে হওয়ার মারাত্মক অভিযোগও কেউ কেউ ঘুরিয়ে বলেছেন। কৈলাশ না থাকায় কৈলাশ ঘনিষ্ঠ অরবিন্দ মেননকে আক্রমণ ও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। কেন দলে সদ্য আসা এক নেতাকে গুরুত্ব পেলেন, আর সংগঠন তৈরি করলেন যে নেতারা, তাদের কেন উপেক্ষা করা হলো? রাজ্যের এক সাধারণ সম্পাদকের প্রশ্নে কার্যত বিব্রত হন মেনন। দিল্লির নেতাদের দূরদর্শিতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়।

দলের এক সিনিয়র নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অতি ব্যবহার করে লঘু করে দেওয়া হয়েছে। মমতা বনাম মোদি যুদ্ধ তৈরি করা হয়েছে। সেই যুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী হেরেছেন। আর এখন ইয়াসের মিটিং বা প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে নিয়ে যা যা করা হচ্ছে তাতে বিজেপির উপর মানুষের বিরক্তি বাড়ছে। অবিলম্বে এসব বন্ধ করা হোক।

দলের পরবর্তী বৈঠকে জেলা ও মণ্ডল নেতারা থাকবেন। সেই বৈঠকে আদি-নব্য লড়াই যে আরও প্রকাশ্যে চলে আসবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

আরও পড়ুন:মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে নিয়মবিধি মেনে স্টুডিও পাড়ায় শুরু শুটিং

Previous articleমুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে নিয়মবিধি মেনে স্টুডিও পাড়ায় শুরু শুটিং
Next articleসহজে ভাঙতে নারাজ হান, ফের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করলেন গোয়েন্দারা