ভ্যাকসিন প্রতারণাকাণ্ডে অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের অফিসে হানা পুলিশের, উদ্ধার নথি ও সরঞ্জাম

কসবায় ভ্যাকসিন প্রতারণাকাণ্ডে অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের অফিসে হানা পুলিশের। উদ্ধার বেশ কিছু নথি, গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম। ঘটনাস্থলে রয়েছে ফরেন্সিক টিম। তার অফিসের একটি ঘরের তালা ভেঙে খোলা গেলেও, বাকি তিনটি ঘর কিছুতেই খুলতে পারছেন না ফরেন্সিক টিমের সদস্যরা। ওই তিনটি ঘরে ভ্যাকসিন ও তার সরঞ্জাম মজুত থাকতে পারে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। কারণ, ঘরগুলি এতটাই সুরক্ষিত ভাবে বন্ধ আছে, তার কারণও খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা ।

কলকাতা পুরসভার অনুমতি ছাড়াই টিকাকরণ শিবিরের অভিযোগে এই ভুয়ো আমলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কসবায় ওই কেন্দ্র থেকেই টিকা নিয়েছিলেন অভিনেত্রী সাংসদ মিমি চক্রবর্তী।

ধৃতের কাছ থেকে জাল পরিচয়পত্র এবং একটি নীল বাতি লাগানো গাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতভর তাকে জেরা করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কসবার ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি টিকাকরণ শিবির চলছিল। অভিযোগ, তাতেই উপস্থিত ছিল দেবাঞ্জন দেব নামে এক ব্যক্তি। সে নিজেকে আইএএস বলে পরিচয় দেয়। এছাড়াও ক্যাম্পে দাঁড়িয়েছিল নীল বাতি লাগানো কলকাতা পুরসভার গাড়ি। কলকাতা পুরসভার লোগো লাগানো মাস্ক এবং স্যানিটাইজারও ওই টিকাকরণ শিবির থেকে বিলি করা হয়।

কীভাবেই বা টিকা প্রাপ্তরা নাম নথিভুক্ত করলেন, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া এই ঘটনায় দেবাঞ্জন ছাড়া আর কেউ জড়িত কিনা, তাও ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ৪ বছর ধরে নিজেকে IAS বলে দাবি করে ঘুরে বেড়াতেন দেবাঞ্জন। ১০-১২ জন কর্মী রেখেছিলেন তিনি। তাঁদের ২৫ হাজার টাকা করে বেতন দিতেন। ছিল তাঁর নিজের নিরাপত্তারক্ষী। সব মিলিয়ে মাসে খরচ কয়েক লক্ষ।

কিন্তু তদন্তকারীরা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না যে গাঁটের কড়ি খরচ করে IAS সেজে লাভ কী? অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের মতলব নিয়ে এখনো আঁধারে তদন্তকারীরা।

কলকাতা লাগোয়া আনন্দপুরের মাদুরদহের ২১৮ নম্বর হোসেনপুরের বাসিন্দা ২৮ বছরের দেবাঞ্জন।

গোয়েন্দাদের অনুমান, দেবাঞ্জনের মাথার ওপর বড় কারও হাত রয়েছে।এদিকে প্রতিবেশীদের দাবি, দেবাঞ্জন নীলবাতি, ভারত সরকারের প্রতীক লাগানো গাড়ি ব্যবহার করত। বাবা মনোরঞ্জন দেব আবগারি দফতরের অতিরিক্ত কমিশনার ছিলেন। ছেলের নামে তিনিও দেদার মিথ্যে বলে বেড়াতেন। কখনও বলতেন, ছেলে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছে। কখনও দাবি করতেন, কান চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পেয়েছে ছেলে। জেনেটিক্সে মাস্টার ডিগ্রি করে এক বছর কলকাতার বাইরে ছিলেন দেবাঞ্জন। ফিরে এসে দাবি করেন IAS হয়েছেন তিনি।
সব বিষয়টির মধ্যে যে ধোঁয়াশা রয়েছে তা মানছেন তদন্তকারীরাও। তবে এই জট দ্রুত খুলে আসল সত্যটা প্রকাশ্যে আসবে বলে মনে করছেন তারা।

 

Previous articleকবে থেকে রাজ্যে চলবে লোকাল ট্রেন? নবান্নে কী জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
Next articleভুয়ো শিবিরে দেওয়াই হয়নি করোনা ভ্যাকসিন, জানাল কলকাতা পুরসভা