ভুয়ো শিবিরে দেওয়াই হয়নি করোনা ভ্যাকসিন, জানাল কলকাতা পুরসভা

কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পের(fake vaccination camp) ঘটনায় সরগরম গোটা রাজ্য। সাংসদ মিমির উদ্যোগে সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয়েছে এই ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্পের মূল মাথা ভুয়ো আইএএস(fake IAS) অফিসার দেবাঞ্জনকে। ওই ক্যাম্পে আদৌ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল কিনা তার নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই পরিস্থিতিতেই প্রকাশ্যে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, ওই ক্যাম্পে যে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল তা করোনা ভ্যাকসিন(covid vaccine) নয়, অন্য কিছু। ভ্যাকসিনের নামে মানুষের শরীরে কী প্রয়োগ করা হয়েছিল তা জানতে ইতিমধ্যেই ওই ওষুধের নমুনা ফরেনসিক টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি যারা ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে ৭০ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এই ইস্যুতে পুরভবনে সাংবাদিক বৈঠকে বসেছিলেন পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা। আর সেখান থেকেই জানা গেল, ওই ভুয়ো ক্যাম্প থেকে পুরসভা যে ভ্যাকসিন উদ্ধার করেছে তার গায়ে সাটানো লেভেলে লেখা রয়েছে কোভ্যাকসিন রিকম্বিনেন্ট বা কোভিশিল্ড রিকম্বিনেন্ট। অর্থাৎ কোনো কিছু গুঁড়ো পাউডারের সঙ্গে জল মিশিয়ে এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের। কারণ হিসেবে এদিন তারা দাবি করেন যদি সঠিক ভ্যাকসিন হতো তাহলে ভ্যাকসিনের গায়ের রিকম্বিনেন্ট লেখা থাকত না। এছাড়াও ভ্যাকসিনের গায়ে কোনও রকম ব্যাচ নাম্বার, তারিখ বা এক্সপিয়ারি নম্বর লেখা নেই। অর্থাৎ ভ্যাকসিনটি যে সম্পূর্ণ জাল তা প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে‌। ইতিমধ্যেই ওই জাল ভ্যাকসিনের নমুনা ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই জানা যাবে ওটা আসলে কী ছিল।

কসবার ক্যাম্পে দেওয়া ভুয়ো ভ্যাকসিন

এদিকে ওই ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্প প্রসঙ্গে পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই অতীন ঘোষ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, পুরসভা অনুমতি দেওয়ার মালিক নন। যদি কেউ বলে থাকেন পুরসভা মালিক, তিনি আইনটা খুলে দেখিয়ে দিন। ভ্যাকসিনেশন পলিসির কোন জায়গায় বলা আছে যে কেউ যদি ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প করেন তাকে কলকাতা পুরসভার অনুমতি নিতে হবে। পাশাপাশি তিনি আরো বলেন, ভ্যাকসিন নিতে গেলে তাকে প্রথম রেজিস্ট্রেশন করাতে হয়। রেজিস্ট্রেশন করাতে গেলে আধার, প্যান অথবা ভোটার আইডি কার্ড লাগে। রেজিস্ট্রেশন করলে আপনি ভ্যাকসিন নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে কনফার্ম করার জন্য আপনার মোবাইলে মেসেজ আসে। অথচ দীর্ঘদিন কোনও মেসেজ, কোনও সার্টিফিকেট না পেয়েও অভিযোগ জানানো হয়নি। তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার থেকে রাজ্য সরকার, রাজ্য সরকার থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলি-এই তিনের বাইরে কোনও চতুর্থ ব্যক্তি নেই যারা ভ্যাকসিন দিতে পারেন।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার কসবার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ভ্যাকসিনেসন ড্রাইভের আয়োজন করা হয়।সেখানে সচেতনতামূলক প্রচারের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মিমি চক্রবর্তীকে। এখান থেকেই ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নেন মিমি কিন্তু কোন সার্টিফিকেট না আসায় সন্দেহ হয় তাঁর। গোটা বিষয়টি নিয়ে এরপর অভিযোগ জানান মিমি। তখনই কেচো খুড়তে বেড়িয়ে আসে কেউটে। জানা যায় এই গোটা ঘটনার পাণ্ডা ভুয়া আইএএস অফিসার দেবাঞ্জন দেব। যে নিজেকে জয়েন্ট কমিশনার অফ কলকাতা কর্পোরেশনের পরিচয় দিয়ে ভ্যাকসিনেশন ড্রাইভের আয়োজন করেছিলেন।