স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুর প্রতিবাদে একজোট বিরোধীরা। সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi), মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay), শরদ পাওয়ার (Sharad Pawar)-সহ ১০ শীর্ষ বিরোধী নেতৃত্ব চিঠি লিখলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে (Ramnath Kobind)। এ ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে তাঁরা বলেন, 84 বছরের একজন ধর্মযাজকের এইভাবে মৃত্যু কখনওই মেনে নেওয়া যায় না। এই ইস্যুতে বিরোধীরা এককাট্টা হওয়ায় ঘুম উড়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের।
২০১৭ সালে পুনের ভীমা কোরেগাঁও হিংসায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গত অক্টোবর মাসে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর এলগার পরিষদের সমাবেশে প্ররোচনামূলক বক্তৃতার কারণে এই হিংসা হয় বলে অভিযোগ তুলেছিল পুলিশ। সেদিনের ঘটনার জেরে গ্রেফতার করা হয় প্রবীণ ফাদার স্ট্যান স্বামীকে। বহুদিন ধরে অসুস্থ এই মানবাধিকার কর্মী। পারকিনসন রোগে ভুগছিলেন তিনি। তাই জল খাবার জন্য স্ট্র চেয়েছিলেন। তবে তার জন্যও তাঁকে আদালতে আবেদন করতে হয়। গত ডিসেম্বর মাসে তাঁর সেই আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। এই ঘটনা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে কী দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে ঝাড়খণ্ডের প্রত্যন্ত এলাকার জেলে রাখা হয়েছিল তাঁকে।
শারীরিকভাবে অত্যন্ত অসুস্থ হওয়ায় বারবার বোম্বে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করা হয় অভিযুক্তের পক্ষ থেকে। আদালতকে তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতিতে তালোজা জেলে থাকা নিরাপদ নয়। ওখানে ঘিঞ্জি পরিবেশ এবং করোনার সংক্রমণ অত্যন্ত বেশি। চিকিৎসার যথেষ্ট ব্যবস্থা নেই। যদিও এনআইএ-র তরফে তাঁর জামিনের বিরোধিতা করা হয়।
যদিও জরুরি ভিত্তিতে তাঁর জামিনের শুনানির আবেদন গ্রহণ করেছিল বোম্বে হাইকোর্টে (Bombay High Court)। যার জন্য নেতা-নেত্রীরা চিঠিতে তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তবে, শুনানি শুরু হওয়ার আগেই প্রয়াত হন এলগার পরিষদ মামলায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে গ্রেফতার হওয়া মানবাধিকারকর্মী স্ট্যান স্বামী (Stan Swamy)।
চিঠিতে রাষ্ট্রপতির কাছে নেতা-নেত্রীরা দাবি জানান, স্ট্যান স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ এনেছিল ‘আপনার সরকার’। শুধু তাই নয়, অমানবিকভাবে তাঁকে জেলে আটকে রাখা হয়। এই পরিস্থিতিতে ভীমা কোরেগাঁও মামলা-সহ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগে যেসব মামলা রয়েছে, ইউএপিএ-র অপপ্রয়োগ করে যেসব মামলা রয়েছে- সেইসব বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক।
উল্লেখযোগ্য হল, একজন সমাজকর্মীর মৃত্যুতে বিরোধী ঐক্য সামনে এলো। সেই জোটে যেমন রয়েছেন সোনিয়া গান্ধী, তেমনই রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পাওয়ার, এম কে স্ট্যালিন, হেমন্ত সোরেন, এইচডি দেবেগৌড়া, ফারুক আব্দুল্লাহ, তেজস্বী যাদব, ডি রাজা, সীতারাম ইয়েচুরি। কয়েকদিন আগে শরদ পাওয়ারের দিল্লির বাসভবনে তৃণমূল নেতা যশবন্ত সিনহার ডাকে একটি বৈঠক হয়, সেখানেও এঁদের মধ্যে কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুকে সামনে রেখে ফের বিরোধীরা একজোট হয়ে তৃতীয় শক্তির বার্তা দিচ্ছেন- অন্তত এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।
আরও পড়ুন- রাজ্যপালের সই করা শংসাপত্র দেখিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা